somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুমি বিশ্বাসী তাতে আমার কী?

২৪ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখানে মাঝে মাঝে আসি একটু মজা পেতে। খবরের কাগজগুলিতে তো আজকাল দু:সংবাদ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না তাই বাংলা পড়া বলতে এই ব্লগই ভরসা। লেখাটেখা তেমন আসে না তাই লেখা হয়ে ওঠে না। আর তাছাড়া উইকেণ্ডের বাইরে কাজের সমুদ্রে ডুবে থাকি। সময় বের করা খুব কঠিণ হয়ে পড়ে। আজ দুপুরে বেশ করে মাগুর মাছ দিয়ে ভাত খেলাম। এই প্রবাসে দেশী মাগুর আর কোথায় পাবো ওই চাইনিজ দোকান থেকে ইংরেজী নাম ক্যাট ফিশ দেখে নিশ্চিত হয়ে কিনে এনেছিলাম সেটাই দিশি কায়দায় রাঁধলাম। দারুণ লাগলো জানেন! ভেবেছিলাম খেয়ে একটা জমিয়ে ঘুম দেবো কিন্তু হলো না। ব্লগ খুলে বসলাম। এদিকওদিক ঘুরে দেখি সেই ধর্মাধর্ম নিয়ে টানাটানি চলছেই। কে আসল নাস্তিক কে নকল নাস্তিক আর কে কতটা আস্তিক কেমন আস্তিক এইসব অর্থহীন কথার খেলামকুচি। অর্থহীন অবশ্য সেভাবে বলা যায় না কারণ এভাবে হয়তো অনেকের কিছুটা ভালো সময় কেটে যাচ্ছে। একটু খানি ভালো সময়ের জন্য মানুষ নিজের জীবনটাই যেখানে বরবাদ করে দিচ্ছে সেখানে একটা ব্লগে খানিক ভাট বকে যদি সেটা পাওয়া যায় তো মন্দ কী? মন্দ তো নয়ই বরং খুব ভালো। কতগুনো সময় আর টাকা বেঁচে যাচ্ছে সেটাও দেখতে হবে। তারপরেও সব মালেই একটা সীমা থাকে যার পরে তাতে আর ধরে না সে শুকনোই বলুন আর বোতলই বলুন। তখন একটা ডিলিংসে আসতে হয়। যেমন আমি এসেছি।

আমি হলাম যাকে বলে পাঁড় নাস্তিক। দেশে থাকতে মধ্য কোলকাতায় হপ্তায় অন্তত তিনদিন যেতাম গোমাংস খেতে। তখন আমিও এইসব বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে খুব তক্কটক্ক করতাম। একদিন আমাদের ক্লাসের মাহমুদা সোজা মুখের উপর বলে বসলো সত্যিকারের অবিশ্বাসী যদি হয়ে থাকিস তো প্র্যাক্টিস করে দেখা। তোর মেজো বৌদিতো ঠিকই থান পড়ে ঘোরে। পারবি তাকে বদলাতে? খালি কলেজস্ট্রিটে লম্ফঝম্ফ। সেদিন বা তার পরদিন না বেশ কয়েকমাস পরে একদিন মেজোবৌদিকে নিয়ে আমিনিয়াতে এসে গলা পর্যন্ত বিরিয়ানি সাঁটিয়েছিলাম। তারও কিছুদিন পর বৌদি থান পড়া ছেড়ে দিলো। বাড়িতে সব মিলিয়ে সতেরদিনের বেশী কান্নাকাটি হয় নি। মা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন কিছুক্ষণের জন্য। পরে মাসিমা মানে মেজোবৌদির মা এসেছিলেন। দুজন মিলে ক'দিন খুব কান্নাকাটি হলো। তারপর দুহপ্তাবাদে সবাই মেনে নিলো। এর কিছুদিন পরে আমি তখন বাইরে আসবো আসবো করছি সেই সময় মেজোবৌদি ঠাণ্ডামাথায় একদিন বাবাকে গিয়ে বললেন তিনি ক্ষিতিশদা'কে ভালোবাসেন। বাবা খুব করে আশির্বাদ করেদিলেন। মা'ও মেনে নিলেন সবকিছু।


এই ঘটনাটাই ধরুন যদি আজ থেকে সত্তর-আশি বছর আগে ঘটতো তো সারা শহরে ঢিঢি পড়ে যেতো। কিন্তু আজ আর পড়ছে না। কারণ হচ্ছে প্রতিদিনকার প‌্র্যাক্টিসটা বদলে গেছে যে! ধর্ম এখন আর কোন প্রাইমারি বিষয় না। পুরোই সেকেণ্ডারি বা তারও পিছনে। প্রাইমারি প্রয়োজনগুলি যেদিকে কাঠি নাড়বে সেদিকেই যেতে হবে। সেটাই মানতে হবে। সেকেণ্ডারি ব্যাপারগুলো যার যার তার তার। কে কেনো কী বিশ্বাস করলো কেন করলো এসব নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীরা ভাবতে পারে কিন্তু তাও একটা থার্ডপার্টি স্ট্যাণ্ড থেকে। দৈনন্দিন জীবনে ধর্মপ্রচারের প্র্যাক্টিক্যাল বাস্তবতা শেষ ।

তাই আমি আর কাউকে নাস্তিক বানানোর কোন তাগীদ অনুভব করি না। যে যা ভাবছে ভাবুক ! আমার কী? কারো যদি বিশ্বাসের অধিকার থেকে থাকে আমারো অবিশ্বাসের অধিকার আছে। থাকো যে যার যার মতো, ফুরিয়ে গেলো !

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৬
১৮টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×