নোবেলবিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. অমর্ত্য সেন তার ‘আরগুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান’ বইয়ে ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করতে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইসলাম হাজার বছরেরও বেশি পুরনো হওয়ায় তা পরিত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম থেকে উদ্ভব সম্রাট আকবরের ‘দ্বীন-ই-ইলাহি’কে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করার পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যদিকে সেক্যুলারিজমকে হিন্দু ধর্ম থেকে উদ্ভব বলে যুক্তি দেন তিনি। তার মতে, হিন্দু ধর্ম কোনোভাবেই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ-বিরোধী নয়। কেউ ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিশ্বাস করলে তাকে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতে হবে। আর বিশ্বাসী হয়ে উঠতে হবে হিন্দু ধর্মের প্রথায়
বইটির প্রথমাংশে , ভারতের প্রাচীন ইতিহাস ও সমকালীন প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এতে তিনি বলতে চেষ্টা করেছেন, ধর্মের বিভিন্নতায় সাহিত্য, রাজনীতি, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও গণিতের উন্নতির পথ ধরে ভারতীয় সেক্যুলারিজমের উত্পত্তি হয়েছে। ভারতীয় গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সেক্যুলারিজম মূলতই হিন্দু ধর্মের ধারাবাহিক বিবর্তনে হয়েছে। মুসলমানদের মুঘল ও পাঠান শাসনও এক্ষেত্রে প্রভাবিত করেছে। বিশেষ করে সম্রাট আকবরের ‘দ্বীন-ই-ইলাহী’ ভারতীয় ঐতিহ্য ও সেক্যুলারিজমকে গড়ে উঠতে সহায়তা করেছে।
....অমর্ত্য তার ‘আরগুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান’-এ বলেছেন, ইসলামের মৌলিক আদর্শ হিসেবে পুরনো মতাদর্শ (ইসলাম ও মুসলিম) বর্জন করে সম্রাট আকবরের ‘রাহি আকবল’কে গ্রহণ করা উচিত। তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, সমাজের অবশ্যই উচিত এই দানবীয় ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ও প্রত্যাখ্যান করা।’
অমর্ত্য সেন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে হিন্দুত্ববাদ হিসেবে দেখিয়েছেন। এমনকি দেখিয়েছেন, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ অর্থ হলো ইসলাম ত্যাগ করা এবং প্রকৃতপক্ষে হিন্দুত্ববাদকে গ্রহণ করা। কেননা হিন্দুত্ববাদ যে কোনো ধর্মের চেয়ে প্রচলিত মতের বিরোধিতার কারণে শ্রেষ্ঠ।’
বইয়ের দ্বিতীয় অংশে ভারতীয় সেক্যুলারিজমের দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরা হয়। এতে তিনি সেক্যুলারিজমকে তার নিজের ধর্মের (হিন্দু ধর্ম) সন্তান হিসেবে চিত্রায়িত করেন।
ড. অমর্ত্য সেনের মতে, সেক্যুলারিজম হিন্দু ধর্ম থেকে এসেছে আর মুসলিম আর ইসলাম হলো সাম্প্রদায়িক। নিজেকে অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে পরিচয় দিলেও তার বইয়ে তিনি হিন্দুদের তেত্রিশ কোটি ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
কিন্তু হিন্দু ধর্মে প্রচলিত বহু দেবতার জড়ীয় অস্তিত্ব এবং নিজেদের হাতে বানানো দেবতাকে পূজা করার পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনো যুক্তি উপস্থাপন করা যায় না। একজন নোবেলজয়ী জ্ঞানী ব্যক্তি হয়েও অমর্ত্য সেন হিন্দু ধর্মের এই অসারতার বিষয়টি অনুধাবন করেননি। বরং সেক্যুলারিজমসহ অন্য ধর্মগুলোকেও তিনি হিন্দু ধর্মের মধ্যে গুলিয়ে ফেলার অভিপ্রায়ে লিপ্ত হন।
আরগুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান বইয়ের ২১ পৃষ্ঠায় নোবেলবিজয়ী ড. অমর্ত্য সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমাবর্তনে সব ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ থেকে তেলাওয়াত করার সমালোচনা করেন। এমনকি তিনি এতে ‘আঘাত’ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. অমর্ত্য সেন অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


