somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ সেই ভয়ঙ্ককর কালো বাকশাল দিবস

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ২৫ জানুয়ারি—একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার সেই কালো দিবস। ১৯৭৫ সালের এ তারিখে এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে রচিত হয়েছিল এক কালো অধ্যায়ের। ওইদিন সংসদে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান পেশকৃত চতুর্থ সংশোধনী বিল পাস হয়। এর মাধ্যমে দেশের সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে:-*:-* একদলীয় শাসন তথা বাকশাল গঠনের পথ উন্মুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা চালু করা হয়। বিল পাসের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতিতে পরিণত হন। মাত্র ১১ মিনিটেX(X(চতুর্থ সংশোধনী বিলটি সংসদে গৃহীত হয় এবং তা আইনে পরিণত হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিলটি নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনা বা বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়নি। এ বিলের মাধ্যমে প্রশাসন ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধন করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান দেশের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধিকারী হন:DB-)X((। আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে তিনি এবং তার আত্মীয়স্বজনরা রাষ্ট্রের সবরকম ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। এ পদক্ষেপকে তিনি তার ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’-এর সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেন। আর এই দ্বিতীয় বিপ্লবকে:P:P ত্বরান্বিত করতে শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের সব মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেন। অবরুদ্ধ করেন মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতা। যদিও এই মহান নেতা ’৭১-এ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে উদাত্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি এদেশের মানুষের অধিকার চাই।’
চতুর্থ সংশোধনী বিল পাসের এক মাস পর অর্থাত্ ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তত্কালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের সব মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেন। এদিন তিনি সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)’ নামে একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল গঠন করেন। একইসঙ্গে নিজেকে এই দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন। পাশাপাশি দল পরিচালনা এবং দলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও একক ক্ষমতার অধিকারী হন। কয়েকটি দলের মাধ্যমে বাকশাল গঠিত হলেও দলের মধ্যে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোনো কর্তৃত্ব ছিল না। এভাবে শেখ মুজিবুর রহমান ওই সময় আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের একাধিপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি বাকশালের দর্শন বাস্তবায়নের জন্য ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন দেশের সবক’টি সংবাদপত্র বিলুপ্ত করেন। শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ অবজারভার এবং বাংলাদেশ টাইমস—এ চারটি পত্রিকা সাময়িকভাবে প্রকাশনার সুযোগ দেয়া হয়।
এর আগে ওই বছর ৭ জুন বাকশালের গঠনতন্ত্র, কার্যনির্বাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পাঁচটি ফ্রন্ট ও এর কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় দলের চেয়ারম্যান হিসেবে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল পদে প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলীর নাম ঘোষণা করেন। জিল্লুর রহমান, শেখ ফজলুল হক মণি ও আবদুর রাজ্জাককে দলের সেক্রেটারি করা হয়। আর ফ্রন্ট পাঁচটি হলো : জাতীয় কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় মহিলা লীগ, জাতীয় যুবলীগ ও জাতীয় ছাত্রলীগ। এর সেক্রেটারিরা হলেন যথাক্রমে ফনী ভূষণ মজুমদার, অধ্যাপক ইউসুফ আলী, বেগম সাজেদা চৌধুরী, তোফায়েল আহমদ এবং শেখ শহীদুল ইসলাম। ১৫ জনকে নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি এবং ১১৫ সদস্য রাখা হয় কেন্দ্রীয় কমিটিতে।


১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে আবার বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা চালু হয়। তবে বর্তমান সময়ে এমন একটি পরিস্থিতিতে দিনটি আমাদের কাছে ফিরে এসেছে যখন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত এবং তারা সেই বাকশালী কায়দায় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের পথকে করেছে রুদ্ধ। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হচ্ছে নানা ধরনের অমানবিক নির্যাতন-নিপীড়ন। ফ্যাসিস্ট কায়দায় আঘাত হানা হচ্ছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর। আর বর্বর নির্যাতন করা হচ্ছে সাংবাদিকদের।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৩৪
১৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×