somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপার মুন ২০১৫

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা সকলেই জানি চাঁদের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার। আর চাঁদের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার হওয়ায় চাঁদ কখনো পৃথিবীর কাছে আসে আবার কখনো পৃথিবী থেকে কিছুটা দূরে সরে যায়।



পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব ৩,৮৪,৪০০ কিলোমিটার প্রায়। চাঁদ যখন পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে তখন তার দূরত্ব হয় ৪,০৬,৩০০ কিলোমিটার প্রায়। অন্যদিকে চাঁদ যখন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কাছে আসে তখন তার দূরত্ব হয় ৩,৫৬,০০০ কিলোমিটার প্রায়।

এইভাবে চাঁদ যখন পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসে এবং সেই একই সময়ে যদি পূর্ণিমা হয় তখন স্বাভাবিক সময়ের পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে তখন বেশ খানিকটা বড় আর উজ্জ্বল দেখায়। এসময় চাঁদকে স্বাভাবিকের তুলনায় মোটামুটি ১৬% পর্যন্ত বড় আর ৩০% পর্যন্ত বেশি উজ্জ্বল দেখা যেতে পারে।



যেমন ২৮/০৯/২০১৫ তারিখ রাতের পূর্ণিমার চাঁদ পৃথিবীর অনেকটাই কাছে চলে আসবে। তখন চাঁদ আর পৃথিবীর মাঝে দূরত্ব থাকবে মাত্র ৩,৫৬,৮৭৭ কিলোমিটার প্রায়। ফলে সেদিনের চাঁদ হবে অন্য যে কোনো স্বাভাবিক পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে খানিকটা বেশি



উজ্জ্বল আর বড়। এই বড় আর সু-উজ্জ্বল চাঁদকেই বলা হয় “সুপার মুন”। যদিও আমি বলছি পূর্ণিমার সময়ের কাছে আসা চাঁদকেই সুপার মুন বলা হয়, আসলে কিন্তু তা না। অমাবস্যার সময়ও চাঁদ পৃথিবীর কাছে এলে তাকেও সুপার মুন বলে। যেহেতু অমাবস্যায় চাঁদকে দেখা যায় না তাই আমরা সেটা নিয়ে মাতামতী করি না।



তাহলে উপরের আলোচনা থেকে এটা বুঝা গেল যে চাঁদ তার কক্ষপথে আবর্তন কালে অমাবস্যা বা পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি এলেই তাকে “সুপার মুন” বলে।
এখানে বলে রাখা ভাল ১৯৭৯ সালে এ্যাস্ট্রোলজার রিচার্ড নোলি সর্ব প্রথম এই সুপার মুন নামটির কথা বলেন।


২৮/০৯/২০১৫ তারিখ রাতের সুপার মুন কিন্তু আরও একটি কারণে বিশেষত্বের দাবী রাখে। কারণ এদিন সুপার মনের সাথে সাথে চন্দ্রগ্রহণও হবে। এটা খুবই বিরল ঘটনা। সর্ব শেষ এমন সুপার মুন গ্রহণ হয়েছিলো ১৯৮২ সালে আর আগামী এমনটা আবার ঘটবে ২০৩৩ সালে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি বাংলাদেশ থেকে এই দুর্লভ সুপার মুন গ্রহণ দেখা যাবে না।



২৮/০৯/২০১৫ তারিখ রাতের সুপার মুন দেখা ও তার ছবি তোলার সামান্য চেষ্টা করার ইচ্ছে আছে। আশা করি আপনারও যারযার অবস্থানে থেকে দেখবেন এই সুপার মুন। ২৮ তারিখে যদি মিস করে ফেলেন তাহলে পরবর্তী সুপার মুনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০১৬ সালের ১৪ই নভেম্বর পর্যন্ত। সেদিন চাঁদ আর পৃথিবীর দূরত্ব থাকবে ৩,৫৬,৫০৯ কিলোমিটার। আর এর পরে চাঁদ পৃথিবীর সবচাইতে কাছে আসবে ২০৩৪ সালের ২৫ নভেম্বর তারিখে। সেদিন পৃথিবী আর চাঁদের দূরত্ব থাকবে ৩,৫৬,৪৪৮ কিলোমিটার। সুপার মুনের তালিকায় ১৯৩০ সালের জানুয়ারির ১৪ তারিখে পৃথিবী আর চাঁদের দূরত্ব ছিল ৩,৫৬,৩৯৭ কিলোমিটার। এর চেয়ে কাছের আর কোন সুপার মুনের খবর আমার জানা নেই, তবে এটা জানি যে আগামী ২২৫৭ সালের জানুয়ারির মাসের ১ তারিখে পূর্ণিমার সময় চাঁদ পৃথিবীর সবচাইতে কাছে চলে আসবে। তখন দুজনের দূরত্ব থাকবে ৩,৫৬,৩৭১ কিলোমিটার। আফসুস মৌতের জালায় সেই সুপার মুনটা দেখতে পারবো না। তবে যদি বেঁচেবর্তে থাকি তাহলে ২০৩৪ সালের সুপার মুনটা দেখতে পাওয়ার সুযোগ আছে।


সব শেষে বলি বাংলাদেশ থেকে সুপার মন বা সুপার মুন গ্রহণ কোনটাই নির্দিষ্ট সময়ে দেখা সম্ভব হবে না। কারণ চাঁদের সময়ানুযায়ী ২৮শে সেপ্টেম্বর সকাল ৮.৫০ এ সুপার মুন সংগঠিত হবে, ফলে চন্দ্রগ্রহণও সেই সময়ই সংগঠিত হবে। যেহেতু সবটাই হচ্ছে আমাদের স্থানীয় সময় দিনের বেলা সেহেতু আমরা দুটির একটিও দেখতে পাচ্ছি না।

তবে নিরাশ হবের কিছু নেই সুপার মুন গ্রহণ দেখতে না পারলেও মূল সময়ের আগের রাতে অর্থাৎ ২৭শে সেপ্টেম্বর রাতে এবং ২৮শে সেপ্টেম্বর রাতেও আকাশে চাঁদকে অন্যান্য দিনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল দেখাবে।


সূত্র :
http://earthsky.org/space/what-is-a-supermoon
http://www.vercalendario.info/en/when/next-super-moon.html
http://www.space.com/26782-is-sunday-s-supermoon-full-moon-really-that-super.html
https://en.wikipedia.org/wiki/Supermoon
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহিত
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×