somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি এবং আমরা – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বইয়ের নাম : আমি এবং আমরা
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : মিসির আলি বিষয়ক উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩
প্রকাশক : প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৯৬



সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট

কাহিনী সংক্ষেপ :
মিসির আলি অনেক দিন ধরে নানান শারীরিক অসুস্থতায় আক্রান্ত। ডাক্তার বলেছে সম্পূর্ণ রেস্টে থাকতে। রেস্টে থাকার সময় তিনি দেখলেন দুটি চড়ুইপাখি তার জানালায় আসে, যার একটি খাবার খায় আর অন্যটি চুপচাপ বসে থাকে। এটা নিয়ে মিসির আলি চিন্তা ভাবনা করছেন। ডাক্তারের পরামর্শে প্রতিদিন ভোরে পার্কে বেরাতে যাচ্ছেন। পার্কে মুশফেকুর রহমান তন্ময় নামের এক লোকের সাথে তার পরিচয় হয়। লোকটি মিসির আলিকে জানায় সে দুটি খুন করেছে এবং তৃতীয় খুনের প্রস্তুতি নিছে।

তন্ময়ের মা বাবা ছোট বেলা থেকেই আলাদা থাকে। মায়ের সাথে দেখা করার জন্য তন্ময়কে নিয়ে মাস্টার সাহেব তার মার কাছে যাওয়ার সময় তাদের বাড়ীর কাজের লোক সরদার চাচার হাতে ধরা পরে। তন্ময়ের বাবার নির্দেশে সরদার চাচা মাস্টারকে প্রচন্ড মাইর দেন, ফলে মাস্টার সাহেব মারা যান। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে মারা যাওয়ার পরথেকে মাস্টারের ভূত তন্ময়দের বাড়িতেই থাকে, এখনও আছে।

তন্ময়ের ম্যানেজারের সাথে কথা বলে তার বাড়ি থেকে মিসির আলি তন্ময়ের বাড়িতে ফোন দেন। ফোন ধরে তন্ময়ের মৃত শিক্ষক। তিনি বারবার মিসির আলিকে তন্ময়ের বাড়িতে আসতে বলেন। মিসির আলির সাথে দেখা করে কথা বলার খুব ইচ্ছে তার। কিন্তু মিসির আলি যেতে রাজি হননা। ম্যানেজারের বাড়ি থেকে ফেরার পরে অসুস্থ মিসির আলি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পরেন। তিনি জ্বরে অজ্ঞান হয়ে পরেন। তার জ্ঞান ফিরে আধুনিক এক হাসপাতালে ৫ দিন পরে। তিনি জানতে পারেন তন্ময় তাকে এখানে এনে ভর্তী করিয়েছে।

মিসির আলি একটু সুস্থ হলে তন্ময় তার সাথে দেখা করতে যায়। তন্ময় মিসির আলির জন্য তার ছেলেবেলার কথা ডাইরির মত করে লিখে নিয়ে আসে। মিসির আলি জানতে পারেন তন্ময় ছিল তার ছাত্র। আরো জানতে পারেন তন্ময়ের ৪ বছর বয়সের সময় তার মা তাকে গলাটিপে মেরে ফেলতে চান বলেই তার বাবা তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।

রাতের বেলা তাদের বাড়িতে কেউ থাকতো না। একটি দালানে থাকত তার বাবা অন্যটিতে তন্ময়। মালি আর কাজের লোকেরা থাকত গেটের কাছে তাদের রুমে। সারাবাড়িতে ঘুরে বেরাত অনেকগুলি ভয়ংকর কুকুর। রাতের বেলা সমস্ত আলো নিভিয়ে রাখা হত। এমনি এক রাতে তন্ময় দেখতে পায় তার মৃত শিক্ষক উলঙ্গ হয়ে তার খাটের নিচে উবু হয়ে বসে আছেন।

কিছুদিনের মাঝেই মাস্টার তন্ময়ের সাথে কথা বলতে শুরু করে। তাকে সাহস দেয় অভয় দেয় পরামর্শ দেয়। মাস্টার প্রথমেই তন্ময়কে বলে তার বাবা অসুস্থ, দিন দিন এই অসুস্থতা বাড়ছে। তিনি মারা গেলে তার জন্য মঙ্গল। মাস্টারের পরামর্শে তন্ময় সিঁড়ির সামনে কলার ছোলকা ফেলে রাখে, সেই কলার ছোলকায় পা পিছলে তার বাবা মারা যায়। তন্ময়ের বাবা মারা যাওয়ার পরে অনেক দিন আর মাস্টারকে দেখা যয় না।

তন্ময়ের বাবার উইল অনুযায়ী তার ম্যানেজার তন্ময়ের অভিভাবকত্ব পায়। এদিকে অনেক দিন পরে তন্ময় আবার মাস্টারকে দেখতে পায়। মাস্টার এখন থাকে তন্ময়ের বাবার ঘরে। তন্ময়কে সে পরামর্শ দেয় সরদার চাচাকে ধাক্কা দিয়ে কুয়াতে ফেলে দিতে। তন্ময় তাই করে। সরদার চাচা মারা যাওয়ার পরে ম্যানেজার সাহেব থাকতে আসে তন্ময়ের বাড়িতে। সাথে তন্ময়ের বয়সী মেয়ে রানু। সেদিনের পর থেকে তন্ময় আর রানু একসাথে বড় হতে লাগলো। তন্ময় আবার স্কুলে যেতে শুরু করলো। এরমধ্যে ম্যানেজার সাহেব একবার দোতলার তন্ময়ের বাবার ঘরে গেলেন, কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি রানু আর তন্ময়কে দোতালায় উঠতে নিষেধ করে দিলেন। এবং মিস্ত্রী ডাকিয়ে সেই ঘরের দরজায়া আড়াআড়ি কাঠ লাগিয়ে বন্ধ করে দেন।

রানু আর তন্ময়ের মাঝে এক সহজ সরল সম্পর্ক তৈরি হলো। দুজনেই বড় হলো নিজের ভালোলাগা সাথে নিয়ে। তন্ময় যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে তখন এক দিন বৃষ্টিতে দুজনে ভেজার সময় বহু বছর পরে মাস্টারকে আবার দেথতে পেলো তন্ময়। তন্ময় বুঝতে পারে মাস্টার একে একে তার ভালোবাসার লোকদের সরিয়ে দিচ্ছে। বাবা আর সরদার চাচার পরে এবার রানুর ক্ষতি করবে। তাই তন্ময় সেইদিনই রানুদের তার বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

মিসির আলি কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন, তার সাথে দেখা করতে আসে তন্ময়। তন্ময়ের সাথে কথা বলার জন্য তারা সেই পার্কে যান। সেখানে মিসির আলি তন্ময়কে বলেন তার ধারনা তন্ময় পুরুষ বা মহিলা না, সে বৃহন্নলা বা হিজরা। তার এই ত্রুটির কথা তার যেসব কাছের মানুষ জানতো তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার জন্য তার মস্তিষ্ক মাস্টারকে সৃষ্টি করেছে, আসলে মাস্টার বলে কেউ নেই। কিন্তু তার এই অনুভূতি এতটাই প্রখর যে তার সাথে সাথে অন্যরাও মাস্টারকে দেখেছে। মিসির আলি তন্ময়কে নিয়ে সেই রাতের বেলাতেই তাদের বাড়িতে যায় মাস্টারের সাথে কথা বলতে। এক পর্যায়ে দেখা যায় অসলেই ভূত মাস্টারের কোনো অস্তিত্য নাই।

----- সমাপ্ত -----

=======================================================================

আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ

আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×