somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কহেন কবি কালিদাস – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

২৬ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বইয়ের নাম : কহেন কবি কালিদাস
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : মিসির আলি বিষয়ক উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রিয়ারি ২০০৫
প্রকাশক : দিব্যপ্রকাশ
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৮০ টি



সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট


কাহিনী সংক্ষেপ :
সায়রা বানু নামে অতী রূপবতী একজন মহিলা দেখা করতে এসেছে মিসির আলির সাথে। ছোট ছোট কিছু জিনিস দেখে মিসির আলি বুঝতে পারেন মহিলাটি খুব ধনী পরিবারের কতৃস্থানীয় কেউ হবে। মেয়েটি বোরখা পড়া, রোজা রেখেছে। সে একটি সমস্যা নিয়ে এসেছে, সমস্যার সমাধান হলে মিসির আলিকে উত্তরায় একটি ফ্লাট লিখে দিবে। মিসির আলি তাতে রাজি হন না। সায়রাবানু মিসির আলির ভাড়া বাড়িটাই সুন্দর করে গুছিয়ে দেয়, আর মিসির আলির দেখা-শোনা করার জন্য একটি বাচ্চা কাজের মেয়েকে রেখে যায়।

সায়রা বানু তার নিজের লেখা প্রায় ১০০ পাতার একটা ডায়রি মিসির আলিকে দিয়ে যায় পড়ার জন্য। সেটি পড়ে মিসির আলি জানতে পারেন সায়রা বানুর বাবা ছিল একজন ক্যামেস্ট্রি প্রফেসার। ওরা দুই বোন, সায়রা বানুর নাম ছিলো মিথেন আর তার ছোট বোনের নাম ইথেন। বাবা তাদের খুবই ভালোবাসতেন। ওদের মা মারা যাবার পরে তিনি আর বিয়ে করেন নাই। প্রথমে তেমন ধর্মকর্ম না করলেও ওদের মা মারা যাওয়ার পরে ওদের বাবা ধর্মকর্মের দিকে ঝুঁকে পরেন। একসময় তিনি বলতে থাকেন- তিনি ইবলিশ শয়তানের সাক্ষাত পেয়েছেন। শয়তান তাকে বশকরার চেষ্টা করছে। তাকে বশ করতে না পেরে তার দূর্বল স্থান তার মেয়েদের দিকে নজর দিয়েছে।

ইথেন একদিন জানালো সে গর্ভবতী। চিন্তিত মিথেন ছুটে যায় বাবার কাছে। সব শুনে বাবা জানায় এটা শয়তানের কাজ, শয়তান তাদের পিছনে লেগেছে। এরপরেই ইথেন বলে সেও শয়তানকে দেখতে পেয়েছে। একদিন রাতের বেলা ছাদে, আরেকদিন রাতের বেলা ঘরের মধ্যে।

এরপর মিথেন নিজেই একদিন রাতে প্রচন্ড জ্বরের সময় শয়তানকে দেখা পায়। শয়তান মিথেনের এক স্যারের রূপ নিয়ে আসে, হেঁসে হেঁসে কথা বলে, তাকে মিথু বলে ডাকে যেমনটা সেই স্যার মিথেনকে ডাকতো। শয়তান মিথেনকে বলে যে তার মা ছিল হিন্দু। তাই তার বাবার সাথে তার মার বিয়েটা ইসলাম মোতাবেক হয়নি, কারণ মিথেনের মা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনি। তার মা মারা যাওয়ার পরে তার বাবা একাএকা তাকে কবর দিতে অনেক দূরে তাদের গ্রামে নিয়ে গেছে। মেয়েরা কেউ যায়নি কবরে। পরেও তারা কখনো জিয়ারত করতে যায়নি। যেহেতু তার বাবা-মার বিয়ে হয়নি তাই তারা দুই বোন জারজ সন্তান, এবং তার ছোট বোনের গর্ভে বড় হচ্ছে আরেক জারজ সন্তান।

কদিন পরে ইথেন তার বড় বোন মিথেনকে জানায় শয়তান তেকেও তার মায়ের বিষয়টা জানিয়েছে। পরে সে তার বাবাকে চেপে ধরতে তার বাবাও বিষয়টি স্বীকার করেছে। বিকেলে ছাদে বসে এই কথাগুলি বলে ইথেন বলে সন্ধ্যায় সে ছাদের যেখান থেকে লাফিয়ে তার মা আত্মহত্যা করেছে সেখান থেকে লাফিয়ে সেও আত্মহত্যা করবে, শয়তান তাকে এই বুদ্ধি দিয়েছে। মিথেন তার ছোট বোন ইথেনের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে নিচে নেমে নামাজ শুরু করে, ঠিক তখন ইথেন ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে।

রাতের ১০টার দিকে পুলিশ এসে ইথেনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। সাথে তার বাবাকেও গ্রেফতার করে, কারণ দুজন থানায় ফোন করে জানিয়েছে তারা দেখেছে তিনি ইথেনকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন। অথচ সেই সময় তিনি আর মিথেন এক সাথে নামাজ পড়তে ছিলেন। অবশ্য তার এক পরিচিত ছাত্রের কল্যানে তিনি তখনই ছাড়া পেয়ে যান। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো ময়না তদন্তে ইথেনকে প্রেগন্যান্ট পাওয়া যায়নি। রাতে ইথেন এসে মিথেনকে সাবধান করে দেয় শয়তান থেকে শতর্ক থাকতে।

এদিকে মিসির আলি তার এক পুরনো ছাত্রের মাধ্যে মিথেনের মার কবর খুঁজে বের করেন, এবং বুঝতে পারেন তিনি মুসলিমই ছিলেন, হিন্দু নয়। মিথেনের ইউনিভাসিটিতে খোঁজখবর করে মিসির আলি জানতে পারেন মিথেন ছিলো খুবই খালো ছাত্রী, এবং তার মধ্যে কোন মানষিক সমস্যা ছিল না। মিসির আলি মিথেনদের বাড়ির বিদ্যুৎ বিল থেকে জানতে পারে এক সময় প্রায় ৫ মাস তারা বাড়িতে ছিলো না। এদিকে মিথেনের দেয়া কাজের মেয়েটি জানায় রাতের বেলা মিথেন পুরুষের কন্ঠে কথা বলতেন বলে সে ভয় পেত।

এই সব ছোট ছোট সূত্র থেকে মিসির আলি বুঝতে পারেন মিথেন একজন সিরিয়াল কিলার। মিথেনই তার মাকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছে। জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে নিজেকে শয়তান হিসেবে উপস্থাপন করে পুরুষ কন্ঠে কথা শুনিয়েছে ধর্মভীরু বাবাকে। সহজ-সরল বাবা সেটাই বিশ্বাস করে নেন। একই ভাবে সে ছোটবন ইথেনকেও ভয় দেখায়। মায়ের মত ইথেনকেও সে নিজেই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে। পরিচয় না দিয়ে থানায় ফোন করেছে সে নিজেই।

অন্যদিকে ইথেন গর্ভবতী ছিল না বরং গর্ভবতী ছিল মিথেন নিজে। ৫ মাস বাড়ির বাইরে থেকে বাচ্চা জন্মের পরে তাকে অন্য কোথায় রেখে ফিরে আসে। ইথেন এই বিষয়টা ফাঁস করে দিতে পারে বলেই ইথেনকে সরিয়ে দেয়া। মিসির আলির কাছে থাকা কাজের মেয়েটাই মিথেনের সেই সন্তান। মিথেন তার স্বামীকে প্রতিদিন একটু একটু করে অর্সেনিক দিচ্ছে ফলে ডাক্তাররা ধরতে পারছেননা কি কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পরছেন।

----- সমাপ্ত -----


=======================================================================

আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ

আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ: আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×