somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“মেরুদণ্ড বের করে ফেল…...” (পুনঃ মুদ্রন)

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজা: আমি ঠিক করেছি, আমার দেশে কারোর মেরুদণ্ড থাকতে পারবে না।
মন্ত্রী: জ্বী জাঁহাপনা, আপনি যখন বলেছেন, তখন কারোর মেরুদণ্ড থাকতে পারবে না।
রাজা: কিন্তু সমস্যা হল, মানুষ তো মেরুদণ্ড নিয়ে জন্মায়।
মন্ত্রী: জ্বী জাঁহাপনা, আপনি যদি বলেন, ওদের ধরে এনে, এক এক করে মেরুদণ্ড বের করে নেওয়া যেতে পারে।
রাজা: এইটা কি একটা আক্কেলের কথা বললে। মেরুদণ্ড বের করতে গেলে, বেটা জনগণ-তো সব অঘরে প্রাণ হারাতে থাকবে। এমনিতেই শরীরের মধ্যে ফরমালিন, আর্সেনিক, আর সব ভেজালে ভরা। ব্যাটারা যে কি করে হাটা চলা করে!
মন্ত্রী: জ্বী জাঁহাপনা, সেটাই তো ভাল। কিছু জনগণ মরলে তো সব দিক দিয়ে ভাল। জনগণ যত কম হবে, দেশ চালাতে তত সুবিধা। বিরোধী দল হরতাল, মিছিল, ভাংচুরের জন্যে মানুষ পাবে না।
রাজা: তুমি দেখছি গর্দভের গর্দভ। জনগণ ছাড়া দেশ চলে না-কি। আমার সৈন্য, সামন্ত আর চেলা চামুণ্ডা তা হলে কে হবে। ওরা ট্যাক্স না দিলে বিদেশের ব্যাংক একাউন্টে ডলার জমবে কি করে? ওদের মলিন চেহারা দেখিয়ে ফরেন এইড এনে; সাঙ্গ পাঙ্গদের টু পাইস কামানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।
মন্ত্রী: জাঁহাপনা আমার তো মাথায় আসছে না এখন আমরা কি করতে পারি। জনগণ থাকতে হবে আবার তাদের মেরুদণ্ড বের করে নিতে হবে। এই দেখেন আমার মাথার মধ্যে এর মধ্যেই স্পার্ক করা আরম্ভ হয়ে গেছে। যে কোন মুহূর্তে ধোঁয়া বের হওয়া আরম্ভ হতে পারে।
রাজা: তোমাকে যে কেন মন্ত্রী বানিয়েছিলাম। কোন কাজ দিলেই মাথা গরম হতে থাকে, স্পার্ক হয় আর আমাকে ধোঁয়ার ভয় দেখাতে থাক। এত দিনের চামচা না হলে, কবে তোমাকে ফায়ার করে দিতাম।
মন্ত্রী: জাঁহাপনা ওই কথা বলবেন না। নিজের যোগ্যতা বলে মন্ত্রীর চাকরি পেয়েছি, আর সেই যোগ্যতা বলেই চাকরিটা টিকিয়ে রেখেছি।
রাজা: হ্যাঁ হ্যাঁ তোমার মত অকর্মণ্য পৃথিবীতে আর এক জন আছে কি-না, সন্দেহ। পার তো শুধু একটা কাজ করতে---আমাকে ব্ল্যাক-মেল করতে।
মন্ত্রী: আমাকে আর ক্ষেপীয়ে মাথা থেকে ধোঁয়া বের করিয়ে দিবেন না; আমি কিন্তু এখনই যেয়ে রাজ রানীকে যেয়ে আপনার ফষ্টি নষ্টির সব ঘটনা জানিয়ে আসব।
রাজা: থাক থাক ওই কাজ করার দরকার নাই। তবে তিন দিন সময় বেঁধে দিলাম। এর মধ্যে বের করা চাই, জনগণের মেরুদণ্ড কিভাবে বের করে ফেলা যায়। তারা যাতে আর কখন মাথা উঁচু করতে না পারে, আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে না পারে।
মন্ত্রী: সময় বেঁধে দেওয়ার দরকার নাই। আপনার সমস্যার সমাধান আমার মাথায় এর মধ্যে চলে আসতে শুরু করেছে।
রাজা: তোমার মাথা থেকে সমাধান......আমাকে হাসালে। হা হা হা
মন্ত্রী: এই দেশের মানুষ, মেরুদণ্ড নিয়ে জন্ম নিলেও, তাদের বয়স যত বাড়তে থাকে; মেরুদণ্ড তত গলতে থাকে। এই ধরেন চাকরিতে ঢুকতে ঢুকতে ৮০% গলে যায়, আর চাকরি টিকানোর জন্যে বাকিটাও গলিয়ে ফেলে। এই যেমন, আপনার চাকরি করতে করতে আমার মেরুদণ্ড গলে গেছে সেই কবে! হি হি হি !!
রাজা: কি আবোল তাবোল বোকছো...।
মন্ত্রী: জী জনাব......আপনার রাজত্বে এখন সবারই এই অবস্থা। মেরুদণ্ড গলা আরম্ভ হয় সেই ছোট বেলা থেকেই। পড়ালেখা না করে, টিচারের পেছনে ঘুরে পরীক্ষার প্রশ্নের জন্যে আর চাকরিতে ঢোকার জন্যে দেয় এক বস্তা ঘুষ। তার পরে চাকরি টিকানোর জন্যে মোসাহেবি করে মেরুদণ্ড গলিয়ে একেবারে ফ্যানা ফ্যানা দশা। নিজের জ্ঞান বুদ্ধি হারিয়ে তো ফেলেই। ছোট বড় সব দুর্নীতি, অনিয়মের সাথে আপোষ করে। এর পরে আপনিই বলেন, এই মানুষদের মেরুদণ্ড বলে কি আর কিছু বাকি থাকে।
রাজা: কি আবোল তাবোল বলছ......সব জনগণ কি আর পড়ালেখা করে, তোমার মত চাকরি করে?
মন্ত্রী: তা ঠিক যেই ব্যবস্থা করা আছে, পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে কিংবা পড়ালেখা না করেও এরা মেরুদণ্ড হারাচ্ছে। অর্থের লোভে চেলা চামুণ্ডা হচ্ছে। ভেজাল করতে, অন্যায় করতে বিন্দুমাত্র লজ্জা পর্যন্ত পাচ্ছে না। কিন্তু বিবেক দংশন ঠিকই হচ্ছে, মাথা তুলে দাঁড়ানোর সাহস পর্যন্ত হারিয়ে ফেলছে। জাঁহাপনা এর পরেও যদি বলা হয় ওদের মেরুদণ্ড আছে, তা হলে মেরুদণ্ডকে অপমান করা হবে। ওদের পিঠের থেকে মেরুদণ্ড বের করার সার্জারি করার চেষ্টা করলে, দুধে ময়লা পানি মেশান ঘোল ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাবে না।


ডিসেম্বর ২৪, ২০১২
http://www.lekhalekhi.net
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:২১
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×