somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঠোটের আত্মকথা

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুধু রবীন্দ্রনাথ নয়, সকল কবিদ্বয় যাহারা আমাকে নিয়ে তাদের অমর কবিতা বুনেছিলেন, সকলকে সম্মানের সাথে আমি স্মরন করি এই বেলা। কবিরাই আমার প্রকৃত মুল্য নিজেদের লেখায় লেখে আবর্তন করে নতুন সৃষ্টির? বড় ভুল। ভন্ড কবি, কেননা তাহাদেরি একিজনের লেখাসমেত এই প্রমান হয় যে,

আমায় নহে গো, ভালোবাসো শুধু, ভালোবাসো মোর আকৃতিরে। সুশ্রী অধররে, কে চিনে রাখে, চুম্বন হইলে সারা? ঠিক বলিয়াছি না ভুল?

আমার সাথে এমন অসদাচারনের জন্য কবিদ্বয়কে প্রথমেই শাপ দিবার ইচ্ছাপোষন করিয়া শুরু করিতেছি। উম, আমি বলিতেছি একজন ঠোট, অধর, ওষ্ঠ, কিংবা অধরোষ্ঠ। আমি প্রতিটি মানুষের মুখের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু আমার কদর কে করে? কখন করে? অবুঝ মানুষ দাত ভাইয়ের মত আমায় হারালে আমার মর্ম বুঝে, তবুও আমার পুর্নজনম তো নেই, আহা কি ভাগ্য নিয়ে জন্মালে দাত ভাই, হায়!

যাইহোক, আপন বর্ননা করি; আমি দেখতে দুই অংশ, বা জোড়া। উপরের অংশ দেখতে আপ, রাউন্ড, ডাউন, আপ, রাউন্ড, ডাউন, তারপর ফ্ল্যাট। নিচের অংশ ফ্ল্যাট, ডাউন, রাউন্ড, ফ্ল্যাট, রাউন্ড, ফ্ল্যাট।আমার রং নির্ভর করবে কার মুখে আমি দাবিদার। আমি কখনো গোলাপি, কখনো খয়েরি! আমার উপরের অংশ বেশ ফর্সা হয় নিচের অংশের তুলনায়। তবে মানুষ যখনি আসক্ত হয় কোন মাদকে, আমাকেও কালি মাখতে হয়। কষ্টের কি শেষ আছে?

আমার ঠাই কেমন? কোন রুপসীর মুখে যদি বা অন্তত কোন সুশ্রীর মুখে আমার অবস্থান, তবে আমার জীবন বেশ সুবিধাজনক নয়। কেননা, তাদের অত্যাচার, তাদের অনুরক্তদিগের অসম্ভব কার্জ, আমার আর সহ্য হয়না! আর কোন নরসুন্দরের অংশ হলেও জ্বালা, মরন যেন পিছু ছাড়তে চায়না। আজকাল নরও লিপস্টিক আসক্ত! হায় ঈশ্বর, তুমি আমায় এ কি ভাগ্য দিলে। আমি তো খাদ্যদ্রব্যের প্রতি আসক্তির থেকে মুক্তি চাইয়াছিলাম, একি করুন পরিনতি আমায় দান করিলে? এরচেয়ে জিব্হা বোনের বাড়ির পাশে থাকতাম, খাবারকে তো আমার সামনেই ভেতরে যেতে হত! সবই কপাল!তার উপর এলো হতচ্ছাড়া প্রেমিদের ন্যাকামি, তাদের ঠোটে খোদাই হয়ে আছে তারা প্রতারক, তাদের মনে কলুষতা, তবু তারা একে অপরের সাথে! আমার জন্য এত অঞ্জলি ঢালবে, তাও লালসা ভরা মনে? আহ।

তাই মোর সাথি, আখির রোদন আর সহ্য হয়না শেষবেলায়; সে আমার সহধর্মিনী, আমার ভালবাসার হেতু! মানুষ কি ভাবে, কেবল তারি ভাবলবাসায় অধিকার? জানো? যদিও নাক ব্যাটা মাঝখানে দাড়িয়ে থাকে সবসময় বাহাত দিয়ে, তবুও আমারা একে অপরের কামনা করি আজীবন। মানুষের মত পিছু হটি না, অন্যকারো প্রেমের আশে বেহায়া হয়ে বেড়াই না! আমরা একে অপরের গানে গানে সুরে সুরে রোমন্থন করি একে অপরের সুষম অতীত। আমরা অন্তরপ্রিয় একে অন্যের!

জানবে, সে এক কাল ছিল যখন মানুষ আমাদের সাথে সদাচারন করিতেন। সে মহাকাল আজ বিষন্ন অতীত। তার আগমনের প্রয়াস আজ অসম্ভব, তবু সেদিনে মুখ ফিরিয়ে চাই, যেদিন আমাদের মত অংশের সাথে কন্ঠ সুর মিলিয়ে সত্যের বহমান নদীর ঢেউয়ে ভেসে বেরাতো। ভালবাসাকে তখন স্বর্গীয় মনে হত মানুষেরও! তবে সেদিন কি আর আছে, এখন অনুজ-শিশুরাও মিথ্যের প্রতিদান মিথ্যে দিয়ে দিতে কার্পন্য করে না। সে সোনার ফাগুন দিন, সে বসন্ত আর না ফিরে বলেই মানুষের এত হায় হায়।

এমন দিন ছিল যখন এক পুরুষে/এক নারীতে মানুষের প্রেম বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যত সব জুড়ে থাকত। তখন প্রেমিদের চুম্বনে আমি নিজের গর্বভরা সত্তা খুজে পেতাম, নিজের কর্তব্যে আমার তৃপ্তি ছিল। আজ এ কলিকালে মানুষ বহুপ্রেমি, বহুরুপি; মানুষ আজ আত্মার প্রেম হতে দুরে বাস করে, দেহের মধ্যে ডুবে ভুভুক্ত কুকুরের মত আমার মত আমার মত সব অবলা অংশের উপর ঝাপিয়ে পরে। লালসা মানুষের নিয়তি বনে গেছে হে! মানুষ তবুও জেগে উঠে না।

আর কি বলব? মানুষ আমাদের খেলনা বানিয়ে ফেলেছে। মানুষ এখন আর মস্তিস্ক ভাইকে অপরাধ জগত থেকে ফিরে আসতে দেয়না। তাকে কি সমবেদনা জানাবো, নিজেদেরই কোন উপায় নেই মানুষের হাত হতে?!

বিদায় পাঠক, ভালো থাকো তবু, আখিকে আমার ভালবাসা দিও।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩০
২৮টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×