somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজমেরীর জন্য আরো এক পা, শেষ সীমা সামনেই

০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হয়তো অনেকে এর মাঝে ভুলেই গেছেন আমাদের ছোট বোনটির কথা। পার হয়ে গেছে আরো কত দিন, কতো রাত। কত স্বপ্নের জাল বুনে ছুটে চলেছি আমরা প্রতিনিয়ত একই পথ ধরে নিজেদের কর্মব্যস্ততার ঘেরাটোপে। আর যারা জানেন না তাদের জন্য এ কাহিনী এক বিষ্ময়ের। এক বিজয়ের কাহিনী। মানুষের জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এ এক প্রায় অসম্ভাবী আলোড়নের কাহিনী, যার ফলশ্রতিতে আজো আমরা আমাদের পাশে খুঁজে পাই আমাদেরই প্রিয় ছোট বোনটিকে। যার মুখ জুড়ে আজ শুধু হাসি, আনন্দ আর উল্লাস। এ আনন্দ না হেরে যাবার, এ হাসি মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার নিদর্শন, এ উল্লাস তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরুপ, যারা বিভিন্ন ভাবে পাশে ছিলেন বোনটির বিপদে।

সেই ফেব্রুয়ারী মাসের কথা, আমার বন্ধুর বোনকে টাকার অভাবে চিকিৎসা না করাতে পারার আকুতিতে ছুটে আসি আমি ব্লগারদের কাছে এক মানবিক আবেদন নিয়ে। নিজেরাও করি ভার্সিটিতে এক কনসার্টের আয়োজন। কতটুকু সাড়া পাবো তা নিয়ে সন্দেহ ছিলো আমার। কিন্তু সব ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে আমাদের বোনটির পাশে এসে দাঁড়ালেন সব মতামতের সব সারির ব্লগাররা। আস্তে আস্তে আমরা বোনটিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে হাঁটিয়ে নিয়ে এলাম এক পা এক পা করে। কি করেনি ব্লগাররা তাঁর জন্য? বইমেলাতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে মানুষের কাছে সাহায্য ভিক্ষা চাওয়া থেকে শুরু করে বিদেশ থেকে ফোন দিয়ে নিজের অক্ষমতার জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়তেও দেখেছি। শুধু টাকা দিয়ে সাহায্য নয়, মানসিক ও শারিরীক দুভাবেই পাশে থেকে নিরন্তর সহযোগীতা করে গেছে সবাই। আমার ব্লগের বইমেলার স্টল থেকেও বক্সের মাধ্যেমে তোলা হয়েছে টাকা। ধীরে ধীরে বোনটি প্রায় সুস্থ হয়ে ওঠে। প্রাথমিক ভাবে যে হিসাব করেছিলাম আমরা, সে হিসাব ছাড়িয়ে আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখনই পড়ি আমরা বিপদে।

অপারেশন করতে কিডনী রোগীর বেশি খরচ লাগে না। অপারেশনের পর নিয়মিত ছয়মাসের ওষুধ খরচ ও চেকআপ খরচটাই এক বিশাল ধাক্কা রোগীর পরিবারের জন্য। মাসে প্রায় ৩০ থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকার ওষুধই লাগে, চেকআপ খরচ তো বাদই রইলো। ব্লগারদের বদান্যতায় সেটা অনেকখানি কাটিয়ে ওঠা গেলেও একটা ডেড ইস্যু হওয়াতে টাকার ফ্লো কমে যায়। আজমেরীর তখন বাকি আছে শুধু ভিটেমাটির জমিটি। আমি আশ্বাস দিয়েছিলাম, বলেছিলাম বিক্রি করা লাগবে না। কোন এক মাধ্যম থেকে বড় অংকের একটা টাকা পাওয়ার কথাও ছিলো, কিন্তু হলোনা। আমি অক্ষমের মতো বিভিন্ন জনকে ফোন করে টাকা চেয়েছি, কিন্তু সমাধান মেলেনি। পরে আমাকে প্রায় না জানিয়েই বিক্রি করতে বাধ্য হয় তারা ঐ শেষ ভিটেমাটিটুকুও। আশা, আমার বন্ধুটি ইন্জিনিয়ারিং পাশ করলে চাকরী করে এ বিপদ থেকে বের হয়ে আসবে। তার শেষ সেমিস্টার চলে ভার্সিটিতে। এতোদিন ঐ জমি বিক্রির টাকাতেই চলেছে আজমেরীর চিকিৎসা, চেকআপ, ওষুধের খরচ।

এরই মাঝে দেখা দিয়েছে এক জটিলতা। ক্রমাগত রক্তপাত হচ্ছে। বন্ধু প্রায় পাগলপারা হয়ে যায়, শেষ পর্যন্ত কি বোনটিকে সুস্থ করেও হারাতে হবে? শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি আর ঢাকা থেকে একবার সিরাজগন্জ আরেকবার ঢাকা নেয়া। ঢাকাতে যে রাখার সামর্থ ওদের নাই। এ সমসাময়িক জটিলতার পাল্লায় জমি বেচার টাকাটিও হাত থেকে বেরিয়ে গেলো। শুন্য হয়ে যায় বন্ধুটির দুচোখের দৃষ্টি। মরিয়ার মতো আমাকেই আবার ফোন করে বসে। আমি কাটানোর চেষ্টা করি। কারণ আমাকে যারা ব্লগিং লাইফে দেখতে পারেনা তারা বিষোদগার করে আমাকে যথেষ্ট হেনস্থা করেছে এই ব্যাপারে। তবুও বন্ধুর কান্নার কাছে পরাজিত হই। আবার হাত পাততে আসি আপনাদের কাছে। ৫ মাসের চিকিৎসা শেষ, ডাক্তার বলেছে আর একমাস এই ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। তারপর ওষুধ চেন্জ করে কমিয়ে দেবেন। এই একমাসের জন্য আজমেরী আজ তাকিয়ে সেই ভাইদের দিকে, যারা তাকে তুলে এনেছিলো হতাশার অতল গহ্বর থেকে আলোর দিকে।



গত কয়েকদিন আমি ব্যক্তিগত ভাবে ফোনে চেষ্টা করেছি। তাতে সামান্য কিছু এসে জমা হয়েছে আমার হাতে।
মহুয়া রশীদ (কান্ট্রি ডিরেকটর, এসিসিএ বাংলাদেশ)- ১০০০
সিস্টেম ইন্জিনিয়ার, গ্রামীনফোন- ১০০০
ব্লগার বেলের কাঁটার মাধ্যমে আগে পেয়েছিলাম- ৩০০০ (আপডেট দেয়া হয়েছিলো না)


ফোন করতে পারেন-
০১৯১৩২২১৪৪৮
০১৬৭৪৭৭৪৬৩৩

অথবা-
নুর মোহাম্মাদ ( লিখন) [বড় ভাই]
০১৭১৭৭১২৮৬০
সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৩৪১১৫৯৩১
জনতা ব্যাংক ফার্মগেট কর্পোরেট শাখা

ডাচবাংলা ব্যাংক
MD MAHMUDUL HAQUE MUNSHI

114.101.78662
মহাখালী শাখা



ব্লগার স্বপ্নকথক ব্যান থাকায় তাঁর অনুরোধে এই পোস্ট আমি দিলাম
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×