somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইহুদি বিদ্বেষের মূল কারন

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইহুদি বিদ্বেষ বা এন্টি-সেমিটিজম হচ্ছে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় ইহুদিদের মনে প্রানে ঘৃনা করা ও তাদের দমন পীড়ন করা। তাদেরকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা। ধর্মীয় দিক থেকে ইহুদিরা যীশু খ্রিষ্ট ও মোহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহকে যেহোভার বার্তাবাহক হিসেবে মানতে চায় নি। যীশুকে তারা সাধারন ইহুদি ভাবতো ও ভন্ড মসীহ ভাবতো এবং মোহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহকে নবী স্বীকার করতো না কারন তারা ভাবতো তাদের জন্য মনোনীত নবী অ-ইহুদি হতে পারে না। অবশ্যই সেই নবীকে ইহুদি হতে হবে। ঈশ্বর নিউ টেস্টামেন্টে (খ্রিষ্টান বাইবেল) যীশুর মাধ্যমে বলেছেন, ও ইসরাঈলী, তোমরা কেনো যীশুকে মসীহ মানো না, সে নতুন কোনো আইন নিয়ে আসে নি। পুরনো টেস্টামেন্টকেই (মোসেজের আইন, তোরাহ) স্বীকৃতি দিতে এসেছে। তাকে মসীহ হিসেবে স্বীকার করো।



নাজরানে যীশুকে মসীহ হিসেবে স্বীকার করে নেয় ইহুদিদের একটি দল। যাদের বলা হয় নাসারা। এরা নিজেদের খ্রিষ্টের অনুসারী পরিচয় দেয়। খ্রিষ্টানরাই নাসারা। কিন্তু বাকি ইহুদিরা যীশুকে সমাজে অস্থিরতা ছড়ানোর দায়ে রোম শাসকদের কাছে বিচার দাবী করে। রোমের শাসকেরা তখন যীশু সহ তার কিছু অনুসারীকে শূলে চড়ায়। এতে যীশু ক্ষত বিক্ষত হয়। খ্রিষ্টান বাইবেল অনুসারে যীশু মানুষের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দেন। যেহেতু ইহুদিরা রোমদের কাছে যীশুকে তুলে দেয় টাই নাসারা খ্রিষ্টানদের সাথে দীর্ঘ যুগ ধরে চলে যুদ্ধ।

যীশুর মারা যাওয়ার ৬০০ বছর পরে আরবে জন্মায় মোহাম্মদ নামের এক শাসক। তিনি যখন চল্লিশোর্ধ হন তখন হেরা নামের এক গুহায় ধ্যান মগ্ন ছিলেন। ধ্যানরত অবস্থায় তিনি আল্লাহর কাছ থেকে বানী পান জিবরাঈল (গাব্রিয়েল) নামের শীর্ষ পরী বা ফেরেশতার মাধ্যমে। জিবরাইলের পাখা এত বড় ছিলো যে সে এক আসমান থেকে আরেক আসমান গিয়ে ঠেকতো। মোহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহর কাছে কোরআন নাজিল হয়।

নবী যখন কোরআনের প্রচার চালাচ্ছিলেন তখন কুরাঈশ নামের উনার নিজের বংশের লোকদের কাছ থেকে ও উনার নিজের চাচাদের (আবু লাহাব) কাছ থেকে ব্যাপক আক্রমনের স্বীকার হন। ব্যাপক যুদ্ধ হয়। এক গ্রুপে ছিলো হুবাল নামের দেবতার প্রতিনিধি যার নেতৃত্বে ছিলো কুরাঈশ বংশের লোকেরা, তারা যুদ্ধের সময় বলতেন, ও হুবালের দল, আক্রমন। অন্যদিকে ছিলো মোহাম্মদ (সাঃ) ও উনারা সাহাবীরা। এই হুবালের দল কাফের ছিলো। শুধু হয় যুদ্ধ। ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। মহানবী (সাঃ) জয়ী হন।

এরপরে যখন তিনি মক্কা থেকে মদীনায় গেলেন সেখানে চারটি ইহুদি গোত্রে ছিলো। তাদের সাথে চুক্তি করলেন। প্রথমে বলা হলো উনাকে নবী হিসেবে মেনে নিতে কিন্তু ইহুদিরা মানতে চায় নাই। আলী (রাঃ) তখন নবীর পাশে ছিলেন। তিনি ইউহুদীদের উপর আক্রম্ন করতে চাইলে মোহাম্মদ (সাঃ) আলীকে মানা করেন। নবী হিসেবে না করে আবদুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ নামে মদীনা চুক্তি করলেন। শর্ত ছিলো কুরাঈশদের সাথে মিলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করা যাবে না কিন্তু বানু কুরাইযা নামের গোত্রটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন জিবরেল ফেরেশটা। তিনি নবীকে খন্দকের যুদ্ধের পরে বলেন, শত্রু এখনো আছে। নবী জিজ্ঞেস করলেন কোন দিকে শত্রু। জিবরাঈল বানু কুরাইযার দিকে দেখিয়ে দিলেন। ঐ গোত্রের সব নারী-পুরুষ ইহুদিদের ধরে আনা হলো। পুরুষ ইহুদিদের সবাইকে তোরাহ অনুযায়ী শিরোচ্ছেদ করা হলো। মোট ৯০০ জনকে। তবে ইতিহাসবিদেরা বলেন ৬০০ থেকে ৯০০ জনকে। আর নারী ও শিশুদের বিক্রি করে দেয়া হয় সিরিয়ায়। এই গোত্রের রেহানা নামের এক ইহুদী নারীকে মহানবী (সাঃ) বিয়ে করেন। তবে উনার সাথে হিজাব নিয়ে কথা কাটাকাটি হতো রেহানার। রেহানা হিজাব করতে চাইতেন না। কিন্তু নবীর স্ত্রীদের আল্লাহ কোরানে হিজাব করতে বলেছেন এবং বলেছেন, ও নবীপত্নীগন, তোমরা অন্য নারীদের মতো নও। পরবর্তীতে উনার সাথে দাম্পত্য বিরোধ মিটিয়ে ফেলেন মহানবী (সাঃ)।

এরপরে জার্মানে খ্রিষ্টান আডলফ হিটলার ইহুদিদের উপর অত্যাচার চালায়। তিনি নিজেই কয়েক লাখ ইহুদিকে বিনা বিচারে হত্যা করেন। মহানবী মোহাম্মদ (সাঃ) যদিও বিচারের শাস্তি হিসেবে ৬০০-৯০০ ইহুদির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন যেটা তোরাহতে আল্লাহ নির্দেশ করেছিলেন কিন্তু আডলফ হিটলার বিনা বিচারে লাখ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেন।

বিশ্বে ইহুদিরা মূলত এন্টি-সেমিটিজমের স্বীকার হয় খ্রিষ্টানদের কাছ থেকে বেশি। কারন ইহুদিরা যীশুকে রোমানদের হাতে তুলে দেয়। মুসলিমদের মধ্যেও রয়েছে চরম ইহুদি বিদ্বেষ। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার চার্টারে হামাস উল্লেখ করেছে কেয়ামতের আগে সব ইহুদিদের মেরে ফেলা মুসলিমদের দায়িত্ব। গাছের নিচে ইহুদি লুকিয়ে থাকলেও গাছ বলবে ও আবদুল্লাহ, ও মুসলিম, এখানে এক ইহুদি লুকিয়ে আছে। একে হত্যা করো। এটা বুখারী শরীফের হাদীস। হামাস তাদের চার্টারে হাদীস উল্লেখ করেছে।

বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী (খ্রিষ্টান, মুসলিম) ইহুদিদের ঘৃনা করে ধর্মীয় কারনে। আরো একটি কারন আছে। ইহুদিরা নিজেদের জেহোভার নির্ধারিত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে মনে করে ও অন্যদের জেন্টাইল জাতি হিসেবে দেখে। ইহুদিরা নিজেদের জন্য মোজেজ ল' বা মূসার আইন অনুসরন করে এর জেন্টাইলদের অনুসরন করতে বলে নূহের আইন। নিজের সেরা জাতি হিসেবে এই মনে করাটাও আসলে ধর্মীয়। এই বর্নবাদী আচরনের জন্য ইহুদি বিদ্বেষ বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমান ইহুদি বিদ্বেষের মূল কারন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন। বিশ্বের ১০০ এরও বেশি দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিলেও আরব বিশ্ব ও মুসলিম বিশ্ব এখনও সাবই স্বীকৃ্তি দেয় নাই। মাত্র ১১টি মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক রয়েছে এবং অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে কোনো না কোনোভাবে সম্পর্ক আছে তবে শুধু বাংলাদেশের সাথে ইসরায়েলের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশকে জাতিসংঘ বার বার WTO নীতি লঙ্ঘনের কথা মনে করিয়ে দিলেও বাংলাদেশ ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক করতে পারছে না যতদিন না ফিলিস্তিন স্বাধীন হচ্ছে ও আরব বিশ্ব ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২৭
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×