somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোপালগঞ্জে উত্তাল জনরোষ ও একটি পূর্বপরিকল্পিত অস্থিরতা তৈরির ষড়যন্ত্র।

১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গোপালগঞ্জে উত্তাল জনরোষ ও একটি পূর্বপরিকল্পিত অস্থিরতা তৈরির ষড়যন্ত্র।
==============================================

গতকাল গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর ইউনিয়নে যেভাবে জনরোষের বিস্ফোরণ ঘটে গেল, তা ছিল না শুধু একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া বরং এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে বৃহৎ একটি রাজনৈতিক অশুভ পরিকল্পনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মভূমি গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে তাঁকে কটাক্ষ করে কথা বলা মানে শুধু একজন নেতা নয়, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও জাতিসত্ত্বার ওপর সরাসরি আঘাত।

ঘটনাপ্রবাহ সংক্ষেপ:
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ উলপুর হাইস্কুল মাঠে এক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতা বক্তৃতার মাঝে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননাকরভাবে উপস্থাপন করেন। সভাস্থলের বাইরের সাধারণ মানুষদের মধ্যে তাৎক্ষণিক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। মূহূর্তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। জনতা হামলা করে মঞ্চ ভেঙে ফেলে, গাড়িতে আগুন লাগায় এবং বক্তব্য প্রদানকারীকে ঘিরে ধরে। পুলিশ হস্তক্ষেপ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়।সে সময় ক্ষমতা লিপ্সুদের বাচাতে সেনাবাহিনী গুলি করে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১) ও সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন (২৪)।
আহত অন্তত ২০০ জন।

এছাড়া অন্তত ১৫ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
পূর্বাভাস জানা সত্ত্বেও প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা
সরকার অবগত ছিল যে গোপালগঞ্জের মাটি বঙ্গবন্ধুপ্রেমে গড়া। এই অঞ্চলে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে তা হবে 'আগুনে ঘি ঢালার' মতো। তবুও কেন এই সভার অনুমতি দেওয়া হলো? কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না? এমনকি বক্তার পরিচয়, অতীত কর্মকাণ্ড সবই জানা সত্ত্বেও প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা ও কে লাভবান?
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুরো দেশ জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, কিশোরগঞ্জ ও রংপুরে এনসিপির কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। কিছু এলাকায় পুলিশ-জনতা সংঘর্ষও হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে এই পরিস্থিতি কার জন্য লাভজনক?
মানুষ মনে করে- এটি হতে পারে একটি পরিকল্পিত 'ক্রাইসিস পলিটিক্স' এর অংশ। যেখানে ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকার দেশে পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এই মর্মে প্রচার করতে পারে দেশে নির্বাচন আয়োজনের মতো পরিবেশ নেই।
স্মরণ রাখা দরকার, ড. ইউনূস দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার জন্য নানা ধরনের কৌশল প্রয়োগ করে আসছেন। একদিকে বিদেশী লবিং সহায়তায় ক্ষমতায় বসা, অন্যদিকে দেশে ‘নিরাপত্তাহীনতা’র অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে চলা সবই যেন এক ছকে বাঁধা পরিকল্পনা।

জনগণের বার্তা, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ
এই ঘটনার মাধ্যমে গোপালগঞ্জের জনগণ আবারও প্রমাণ করেছে, বঙ্গবন্ধুর সম্মান রক্ষা করতে তারা যে কোনো আত্মত্যাগে প্রস্তুত। অথচ একটি গণতান্ত্রিক দেশের সরকারের উচিত ছিল সেই আবেগের প্রতি সম্মান দেখানো, উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া।
শান্তির পথে না ষড়যন্ত্রের পথে?
এই ঘটনা শুধু একটি অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির প্রতিচ্ছবি নয়, বরং ভবিষ্যতের একটি সংকেতও বটে। আমরা কি আরও গভীর সংকটে যাচ্ছি? রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখার জন্য পরিকল্পিত নৈরাজ্য কি আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে? নাকি দেশের জনগণ তাদের সচেতনতা ও ঐক্য দিয়ে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে?

সরকার ও প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়া, জনগণের আবেগ ও নিরাপত্তার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া। অন্যথায় ইতিহাস কিন্তু কখনো ক্ষমা করে না।

সালাউদ্দিন রাব্বী
সমাজকর্মী

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:২৮
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×