somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউনূস সরকার- অন্তবর্তীকালীন, আপদকালীন না কি গণশত্রু রাষ্ট্রযন্ত্র?

১৯ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইউনূস সরকার –অন্তবর্তীকালীন, আপদকালীন না কি গণশত্রু রাষ্ট্রযন্ত্র?
আজকের বাংলাদেশ এক অস্থির, আতঙ্কিত ও শোষণমুখর সময় পার করছে। রাজনৈতিকভাবে যে সরকার বর্তমানে রাষ্ট্রক্ষমতায়, তারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে ‘অন্তবর্তীকালীন’ সরকার হিসেবে। আবার কেউ বলছে এটা ‘আপদকালীন’। কেউ বলছেন, এটা হলো এক ‘বিদেশি মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ’। তবে দেশের সাধারণ মানুষের হৃদয় থেকে উঠে আসা একটি কথাই এখন সবচেয়ে সত্য: এই সরকার আমাদের নয়। এটি হচ্ছে লুটপাট, দমন-পীড়ন ও জনগণকে নিঃশেষ করার এক নিষ্ঠুর যন্ত্র।

১. জনগণের শ্বাসরুদ্ধকর জীবন: দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি
দেশের মানুষের জীবনে আজ শ্বাস নেওয়ারও সুযোগ নেই। পেঁয়াজ, চাল, ডাল, লবণ, তেল যার নামই নিন, সবকিছুর দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। মজুরির হার অপরিবর্তিত, অথচ বাজারের দামে আগুন। একজন নিম্নবিত্ত মানুষ তিন বেলার খাবার নিশ্চিত করতে পারছে না, আর মধ্যবিত্তরা চোখের জলে বিল দিচ্ছে। এ যেন এক অর্থনৈতিক নিপীড়নের রাজত্ব।
এমন অবস্থা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই দেখা যায়নি এমনকি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষেও মানুষ এতটা অসহায় ছিল না, কারণ তখন অন্তত শাসকের আন্তরিকতা ছিল।
২. আইন-শৃঙ্খলা নয়, এটি এক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের যুগ
একটি রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু আজ সেই রাষ্ট্রই তার নাগরিকদের সবচেয়ে বড় ভয়। ভিন্নমত প্রকাশ করলেই গ্রেফতার, পোস্টারে নাম এলেই রাতের অন্ধকারে তুলে নেওয়া। কেউ কেউ আর ফেরতও আসে না। রাজনৈতিক হত্যা, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা, এবং পুলিশি নির্যাতনের করুণ ইতিহাস এই সরকারকে গণবিরোধী প্রতিচ্ছবি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
৩. নারী ও শিশুরা সবচেয়ে অনিরাপদ: ধর্ষণ যেন নিত্যদিনের চিত্র
দেশজুড়ে ধর্ষণের ঘটনা মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউই রেহাই পাচ্ছে না। কিন্তু বিচার নেই, শাস্তি নেই, বরং ধর্ষকরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায়। নারীর চোখে আজ বাংলাদেশ নিরাপত্তাহীনতার এক বিভীষিকাময় ভুখণ্ড।
৪. এ সরকার আসলে কার স্বার্থ রক্ষা করছে?
ইউনূস সরকার নামে পরিচিত বর্তমান প্রশাসন নির্বাচিত নয়। এটি এসেছে বিদেশি সমর্থন ও প্রভাবশালীদের খুশি করতে। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক কর্পোরেট শক্তি, বিশ্বব্যাংক-পন্থী অর্থনৈতিক গোষ্ঠী, এবং কিছু ভিনদেশি রাষ্ট্রদূতের ছায়া। এরা চায় এমন এক বাংলাদেশ, যেটি থাকবে চুক্তি-নির্ভর, স্বার্থ বিক্রির উপযোগী, এবং প্রতিবাদহীন।
দেশের ভূখণ্ডে একটি অদৃশ্য উপনিবেশিক শাসন কায়েম করতে চায় এই শক্তিগুলো আর ইউনূস সরকার তাদের সেটেলাইট মাত্র।
৫. এই সরকার ইতিহাসকে মুছে দিতে চায়
তাদের বক্তব্য, কার্যক্রম এবং নীতি স্পষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আত্মপরিচয়ের বিরুদ্ধে। জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের গুজব, শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি, এবং বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দেওয়ার মত পরিকল্পনা এ সবই এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের অংশ। তারা বাংলাদেশকে 'নতুন' নামে, নতুন ইতিহাসে, নতুন শাসকে সাজাতে চায়।

উপসংহার: এখনই সময় প্রতিরোধ গড়ার
আজ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটিই পথ খোলা: প্রতিরোধ। এই সরকার যদি নির্বাচিত না হয়, যদি তাদের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা না থাকে, যদি তারা জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে, তাহলে এ সরকার অবৈধ, অমানবিক এবং জাতির ভবিষ্যতের শত্রু।
সময়ের দাবি একটি নির্বাচিত, জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক সরকার, যেখানে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, অর্থনৈতিক সুবিচার নিশ্চিত হবে, এবং জাতির আত্মপরিচয় রক্ষা পাবে।
আমরা ১৯৭১-এ মাথা নত করিনি, ২০২৫-এও করব না। ইতিহাসের পেছনে নয়, জনগণের সামনে সরকার চাই।
এই আপদকালীন, বিদেশ-পরিকল্পিত সরকারকে প্রত্যাখ্যান করুন। দেশ বাঁচান। ভবিষ্যৎ বাঁচান।
--- সালাউদ্দিন রাব্বী
সংখ্যালঘু বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ






সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৫১
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×