somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি জানেন, আশির দশকে, দেশে কিছু লোক ভাবতো, ঢাকায় ভবিষ্যতে শেয়াল ডাকবে।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অথচ দেখুন আজকের ঢাকা! একটা কুকুর যে ঘুরে বেড়াবে কোথাও দাড়াবে সে জায়গাটুকুও নাই!

কিন্তু আশির দশকে যারা বিশ্বাস করতো, "ঢাকা শহরে শিয়াল ডাকবে" তারা সে সময়কার সচেতন ও জ্ঞানী লোক ছিলেন।তখন আমি স্কুলে পড়ি অনেক বার অনেককে বলতে শুনেছি একথা, "ঢাকা শহরে শেয়াল ডাকবে।"

তাহলে তাঁরা এতো ইনভার্স ভবিষ্যৎবানী কিভাবে করেছিল ? কি ঘটেছিল তখন যা তাদের এমন উদ্ভট ভবিষ্যৎ দেখিয়েছিল ?

স্বাধীনতার পরের বাংলাদেশ যদি কয়েকটি দশকে ভাগ করে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে ৭০ এর দশক ছিল, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত একটি দেশ ও নানা বিপ্লব প্রতিবিপ্লবের দশক।তুলনা মূলক ৮০ দশক ছিল দেশটির উঠে দাড়ানো, সঠিক পথে পরিচালনার ভিত্তি ও উন্নয়নের দশক।আর ৯০ এর দশকে এসে আবার বিপরীত যাত্রা, পরিবাতান্ত্রীক সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে অযোগ্য, অসভ্য, অদক্ষ মানুষের নেত্রীত্বে সন্ত্রাস, কালোটাকা, পেশিশক্তি, দলবাজী, দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, সমাজ, রাষ্ট্র, ভবিষ্যৎ, পরিকল্পনা এমনকি ব্যক্তি চরিত্র নৈতিকতায় পচন ধরিয়ে একটি কুৎসিত দুর্বিত্তায়নের রাজনীতির দশক।২০০০ এর দশক পূর্ববর্তী দশকেরই অনুরুপ কিন্তু মাত্রা অনেক অনেক বেশি।অভিজ্ঞতা আলোকে আরও অনেক দ্রুত পতন পচন ও পতনশীল দশক।আর ২০১০ এর দশকের কথা বলতে গেলে গত বিশ বছরের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ২ বছরেই গত দশকের সমান পতন হয়েছে, বাকি ৮ বছরে যে বিশ্বে বাংলাদেশ গ্রাম রাষ্ট্র থেকে একটি সন্ত্রাসের বস্তীরাষ্ট্রে পরিণত হবে- এটুকু ভবিষ্যৎবানী করতে কাউকে খুব একটা সচেতন হওয়ারও দরকার নেই।

এবার আসুন ৮০ দশকেই কেন সঠিক বললাম ? সবদিক তুলে ধরলাম না।বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নের একটা দিকই দেখি।বিচার, মামলা মোকাদ্দমা।মাটি আর বিচার এই দুই পেয়ে গেলে এদেশের আশি ভাগ মানুষ সরকারের কাছে আর কিছু তেমন চায়নি কখনও।আশির দশকে উপজেলা গঠন ও গ্রামের মানুষের দোর গোড়ায় বিচার নিয়ে যাওয়া ছিল প্রকৃত পক্ষে বাংলাদেশকে বিকেন্দ্রীকরনের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।পাশাপাশি বিভাগে হাইকোর্ট বেঞ্চ।এই ধারা অব্যহত থাকলে আজ ঢাকা শহর কেন্দ্রী এই নারকীয় বাংলাদেশ হতো না, কারন সম্পদ যা এদেশের এই মাটি আর মানুষ, সেই মানুষকেই যখন শহরে আসতে হতো না তখন আজের এই শহরই নিজের প্রয়োজনেই গ্রামে ফিরে যেত।ভাবুনতো আশির দশকের বাংলাদেশের গ্রামের মানুষের আর কি চাহিদা ছিল রাষ্ট্রের কাছে।অথচ সে সময় দেশের প্রতিটি উপজেলায় ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালত।গ্রামের মানুষের জমির বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য যেখানে যুগের পর যুগ জেলা হাকিমের আদালতে লেফ্ট রাইট করতে হতো তা তখন ইউনিয়নের পাশে উপজেলা সদরে।সুনামগঞ্জে ট্রলার আর বাস ভরে খুনের মামলার হাজিরা দিতে আসতে হতো না।সে সময় অনেক উপজেলায় ঐ কোর্ট বিল্ডিংটিই ছিল প্রথম বিল্ডিং।উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন কাঠামো তখন যে আদলে তৈরী হয়েছিল তা অব্যহত থাকলে আজ পুরো বাংলাদেশটাই বিকেন্দ্রী করন হয়ে গ্রামের মানুষের ঘরে চলে যেত।মাটি আর বিচার এই দুইর পর বাংলাদেশের জনগণের যদি চাহিদা থাকে সে যোগাযোগ, মূলত বাংলাদেশে এখন যে সড়ক নেটওয়ার্ক দেখি এর ব্যাকবোন আশির দশকেই গড়ে ওঠে।

এই সব হিসেব কষেই আশির দশকে এসে মনে হয়েছিল, ঢাকায় ভবিষ্যতে শেয়াল ডাকবে।অথচ এই ঢাকা আজ কুত্তা বসবাসেরও অযোগ্য।

পাঠকের কাছে অনুরোধ শুধু এরশাদকে বাদ দিয়ে সে সময়কার রাষ্ট্র পরিচালনার গতিধারা দেখে আরেকবার ভেবে উত্তর খুজুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:৫৭
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×