somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামুতে যদি ১০-২০ হাজারও ফেইসবুক ইউজার থাকতো তাহলে এই ঘটনাটি কোন ভাবেই ঘটানো সম্ভব হতো না।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রামুতে যদি ১০-২০ হাজারও ফেইসবুক ইউজার থাকতো তাহলে এই ঘটনাটি কোন ভাবেই ঘটানো সম্ভব হতো না।এমনকি ঢাকায়ও দেখেন অনেকের ফেইসবুক প্রফাইলে/ফটোতে এরকম অনেক কন্টেন্ট আছে, তাই বলে কেউ তাদের হত্যা করতে ছুটছে না।এটা থাকতেই পারে ইন্টারনেটে কন্টেন্টের জন্য কাউকে দোষ দেয়া যায় না, দেওয়া হয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে ও ইনটেনশনকে।
যেমন আরব, ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া যেখানেই মুসলিমদের বিক্ষোভ হয়েছে তাতে অংশগ্রহনকারী বড় একটা অংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, হয়তো এইমাত্র মিছিলে পাশের ছেলেটির প্রফাইলে কোন ট্যাগ দেখে এসেছে পাশের একজন বিক্ষোভকারী, তাই বলে তাকে সে মারতে যায়নি।সেখানে দেখা গেছে সবারই আমেরিকান দূতাবাস, আমেরিকা, ছবির পরিচালক এগুলির উপরই সবার ক্ষোভ ,লক্ষ্য।কোথাও সাম্প্রদায়ীক সম্প্রতী বিঘ্ন হয়নি।ইন্টারনেটের সুবাদে সারা বিশ্বে এ ইস্যূতে একই পাবলিক সেন্টিমেন্ট ডেভলপ করেছে, এই আন্তর্জাতিক মোব নিয়ন্ত্রিত হয়েছে সয়ংক্রিয় ভাবে।আপনি ভাবতে পারেন না, যদি বিষয়টির সাথে বিশ্বের এত ব্যাপক সাধারন মানুষ সংযুক্ত না থাকতো তাহলে দেশে দেশে কি ব্যপক ম্যাসাকার হয়ে যেত, একটা বিশ্ব ধর্মযুদ্ধের চেয়েও ১৩ মিনিটের একটি ভিডিও অনেক বেশি ক্ষতি করতে পারতো।বাংলাদেশেই যদি ৩২ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী না থেকে ৩২শত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকতো তাহলে এতদিনে এই ভিডিওটি দিয়েই সারাদেশে ইসলামি দাঙ্গা বাঁধিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করে ফেলা যেত।
আমরা তাই বলি একটা দেশে যত কম ফেইসবুক তত বেশি অভিশাপ আর যত বেশি ফেইসবুক তত আশির্বাদ।আর সাধারন মানুষকে এই অভিশাপে রাখাই সরকার, বিরোধীদল, ধর্মব্যাবসায়ী সকলের মূল কামনা।নরকের কীটেরা নরকই ভালোবাসবে তা খুবই স্বাভাবিক তা না হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষনার পরও এতদিনে যেখানে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমপক্ষে ১৫% অতিক্রম করার কথাছিল, সে পরিমান ব্যান্ডউইথও ছিল, অথচ আজও ২.৪%

রামুর ঘটনা ঘটার পরিবেশ তৈরীর জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়, কারন রামুতে ১০-১৫ হাজার ইন্টারনেট না থাকার পেছনে সকল কারন এই দপ্তরের কারসাজি।

কিছু সাপোর্টিং খবরঃ ডেইলি স্টার-এর উপসম্পাদক ইনাম আহমেদ গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে, সেখান থেকে পাঠিয়েছেন মর্মস্পর্শী সব প্রতিবেদন। আমাকে তিনি জানিয়েছেন, তিনি অন্তত ২০০ জনকে জিজ্ঞেস করেছেন, তাদের কেউই ফেসবুক খুলে ওই ছবি দেখেনি, যার প্রতিবাদে এত কাণ্ড। তা হলে এত ক্ষোভ, এত আগুন কেন। কারণ, একটা খুবই আপত্তিকর, অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন ছবি ইন্টারনেট থেকে নেওয়া হয়েছিল মোবাইল ফোনে। তারপর সেই ছবি ব্লুটুথে গেছে এক মোবাইল ফোন থেকে আরেক মোবাইল ফোনে। সেটা কেউ কেউ দেখেছে, আবার অনেকেই দেখেনি। যারা দেখেছে, তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। জানানো হয়েছে, এটা করেছে অমুক বড়ুয়া। আর যায় কোথায়?

যেমন- এক পুলিশ অফিসার মাইকে বলেছিলেন, আমার গায়ে যদি ইউনিফর্ম না থাকতো তাহলে আমিও এই মিছিলে যেতাম।

ঘটনার রাতে (২৯ সেপ্টেম্বর) ওসি তাঁকে ফোন করে দ্রুত আসতে বললে তিনি আসেন। তিনি এসে দেখেন, রামু বাজারের মোড়ে ফারুকের দোকানে অনেকে জড়ো হয়ে ফেসবুকের ছবি দেখছেন। তিনি দোকানে ঢুকে দেখতে পান, উত্তর কুমার বড়ুয়া নামের এক তরুণের ফেসবুক থেকে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার একটি ছবি তাঁর ২৬ জন বন্ধুর কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি কম্পিউটারটি জব্দ করে থানায় আনেন। এরপর উত্তমকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাসায় যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, উত্তমের মা ও তাঁর বোন ছাড়া বাসায় কেউ নেই। তিনি তাঁদের আটক করে থানায় আনেন। রামু মোড়ে এসে দেখতে পান, সেখানে সমাবেশ হচ্ছে। এতে রামু নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নূরুল ইসলাম ওরফে সেলিম ও মৎস্যজীবী লীগের নেতা আনসারুল হকসহ কয়েকজন বক্তব্য দেন। ওসিও বক্তব্য দেন। এক ঘণ্টা পর সমাবেশটি শেষ হয়। এলাকায় তখন উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কিন্তু ওসি একেবারে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।

পরিকল্পনাকারীরা ঘটনার আগের দিন বৃহস্পতিবার ইন্টারনেট থেকে আলোচিত ছবিটি ডাউনলোড করে তা পোস্টার আকারে প্রিন্ট করে। এই ছবি প্রতিবাদ সমাবেশে দেখিয়ে লোকজনকে উত্তেজিত করা হয়। রামুর ব্যস্ততম জনবহুল এলাকা চৌমুহনীতে সন্ধ্যার পর এমনিতেই শত শত লোক থাকে। ঘটনার মূল হোতারা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাতেই তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় ঠিক করে। এ কাজের জন্য তারা রামু বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্থানীয় কয়েক নেতাকেও ব্যবহার করে। চৌমুহনীতে রাতের প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম সেলিম ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনসারুল হক ভুট্টো, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বাবুও বক্তৃতা করেন।

আবার দেখুন, ইন্নোসেস অব ইসলাম ট্রেলরটি দেখার পরও আরবে কোন ধর্মীয় দাঙ্গা লেগে যায়নি।এমনকি মিশরের রাজনীতিতে কিছুদিন আগেও যেখানে মুসলিম খৃষ্টান দাঙ্গার উপক্রম হয়েছিল সেখানে এই ঘটানার পর মিশের কেন কোথাও অন্য ধর্মের সাথে দাঙ্গা লাগেনি।কারন মিশরের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রায় ৩০%, তিউনিশিয়ায় ৪০% এর উপর, লিবিয়ায় প্রায় ২০% থাকায় সেখানে রাস্তার মোবের সাথে ইন্টারনেটেরও সংযোগ ছিল।তাদের মধ্যে যে মার্কীন দূতাবাসের দিকে আক্রমন করতে যাচ্ছে তার প্রফাইলেও ভিডিওটি ট্যাগ আছে, তাই বলে তার মিউচুয়াল ফ্রেন্ড তাকে হত্যা করতে আসেনি।বা প্রতিবেশি খ্রিস্টানের ফেইসফবুকে মহানবীর অপমানের ছবি দেখে দা নিয়ে তাকে জবাই করতে যাচ্ছেন না।কারন বিষয়টি সম্পর্কে তারা সবাই ভালো ভাবে অবগত, অন্যের মুখে ঝাল খেয়ে লাফ দিতে হচ্ছে না, তাই একে অন্যকে মারছে না।
কিন্তু বাংলাদেশ, রামু ? তাই বলছিলাম ইন্টারনেটে ধর্মীয় অবমাননার বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়ীক উত্তেজনার পিছনে অন্যতম কারন যে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কম, মাত্র ২%, তা কোন ছাগল মিডিয়া বুজলো না।

রামুর ঘটনাটি ছিল স্বতস্ফুরর্ত, অন্তত ঘটনার পরিবেশ তৈরীর ৯৯% নিশ্চিত ভাবেই স্বস্ফুর্ত ছিল।ঘটনার সূত্রপাত বা উত্তপ্ত পরিবেশে কোন কোন ছোট পরিকল্পনা সক্রিয় হলেও এটুকু বলা যায় রামুর ঘটনার ৯৫% ছিল স্বস্ফুর্ত ৫% পরিকল্পিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×