পিলখানা ইতিহাস হয়ে থাকবে। ছাইচাপা দিয়ে তাকে ঢেকে রাখা যাবেনা। সব কিছুর একটা টার্নিং পয়েন্ট আছে। তেমনি পিলখানা ইতিহাসের গুরুত্ব পূর্ন এক টার্নিং পয়েন্ট। বাংলাদেশের সার্বোভৌমত্ব প্রশ্নের মূখে ফেলে দিয়েছে যারা, ইতিহাস তাদের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে হিসেব নিবে। ক্ষমা করবেনা। জাস্ট সময়ের ব্যাপার মাত্র।
কোটি কোটি ঘৃনা থুতু হয়ে ঝরে পড়বে ওইসব গাদ্দারদের মূখে, যারা পিলাখানাকে এক্সপেরিমেন্টাল প্লট হিসেবে নিয়েছিল।
সব সত্য এখনো বের হয়নি, একদিন হবে ইনশাআল্লাহ। সেই সময় হয়তো খুব বেশী দূরে নয়।
৬ বছর আগে ঢাকার পিলখানাসহ সারা দেশে বিডিআর বিদ্রোহে ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় সারা দেশে ৫৭টি মামলায় পাঁচ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। এদের ৮৭০ জনকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদ-।
বিদ্রোহের সর্বশেষ মামলার রায়ে সদর রাইফেলস ব্যাটালিয়নের ৭৩৩ আসামির মধ্যে ৭২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। ৬৪ জনকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদ-। সব মিলিয়ে এসব মামলার রায়ে পাঁচ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়।
বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের কিছু দিন পরই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে এতো বিশাল সংখ্যক কর্মকর্তার নিহত হওয়ার ঘটনা আলোচনা-সমালোচনায় ঢেউ তোলে।
১. ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি কার নির্দেশে বিডিআর হেডকোয়ার্টারের আশপাশের লোকজনকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছিল?
২. ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কেন লে. কর্নেল মুকিত বিডিআর সদর দফতর থেকে সেনাবাহিনী এবং বিডিআর মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে ফ্যাক্স বার্তা পাঠিয়েছিলেন?
৩. বিডিআর সদর দফতরের ৫ নম্বর গেটে সেদিন কেন পুলিশ এবং র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়নি?
৪. বাংলাদেশ টেলিভিশন সেদিন বিদ্রোহের ঘটনা কেন প্রচার করেনি?
৫. ঘটনার সময় বিডিআর হেডকোয়ার্টারে দেশের বাইরে থেকে একাধিক ফোন কল এসেছিল। তদন্তকারীরা কি এগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন?
৬.সরকার কেন পুলিশের আইজিকে তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে?
৭. তথ্য সংগ্রহের নামে সিআইডি দল বিডিআর সদর দফতর থেকে কি সরিয়েছ
বিডিআর সদর দফতরে পাহারারত পুলিশ সদস্যরা ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কি ধরনের তথ্য-প্রমাণাদি সেখান থেকে সরিয়েছে?
তবে শক্ত হাতে বিদ্রোহ দমন করায় হতাহতের সংখ্যা কম হয়েছে বলে দাবি করে সরকার পক্ষ।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। রক্তাক্ত এ বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিডিআরের নাম বদলে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একই সঙ্গে বাহিনীর পোশাকও বদল করা হয়। বিদ্রোহের পর বিডিআরের নিজস্ব আইন ও ফৌজদারি আইনÍ -এই দুই আইনে বিচার শুরু হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিডিআর বিদ্রোহের পর বাহিনীর নিজস্ব আইনে ৫৭টি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার রায়ে পাঁচ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। এরা সবাই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চাকরিও হারিয়েছেন। মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন ১১৫ জন। খালাসপ্রাপ্ত সবাই চাকরি ফিরে পেয়েছেন।
তবে মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো সুযোগ নেই। রায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিডিআর আইনের কার্যকারিতা। বিদ্রোহের ক্ষেত্রে নতুন আইন কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। এ আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ-।
বিদ্রোহের অভিযোগের ক্ষেত্রে সব মামলায় প্রায় একই ধরনের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- মহাপরিচালকের আদেশ অমান্য করা, অধীনস্থদের নিয়ন্ত্রণ না করা, বিদ্রোহের তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানানো, অনুমতি ছাড়াই অস্ত্র সংগ্রহ ও অস্ত্রাগার লুট, মহাপরিচালক বাসভবনে অবৈধ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ, পিলখানার ফটকে অবৈধ অবস্থান করা এবং নিজেকে আড়াল করা, বিদ্রোহ সৃষ্টি ও এতে সহায়তা করা।
রায় ঘোষণার সময় আদালত যে সব বিষয় বিবেচনায় এনেছিলেন তা হলো- আসামিদের পূর্বের আচরণ, তাদের পদবি-নিয়োগ, আসামি নিজে ও তাদের আত্মীয়স্বজনের স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান, চাকরি ক্ষেত্রে তিনি কোনো পদক পেয়েছেন কি না, আসামিদের পারিবারিক অবস্থা কেমন, আসামি দোষ স্বীকার করেছেন কি না এবং প্রচলিত আইনের যথাযথ ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয় রায়ের শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ।
রায়ের ফলে অনেক জওয়ানের চাকরি চলে যাওয়ায় বাহিনীর ভেতরে যে বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণের জন্য নতুন জওয়ান নিয়োগ দেওয়া হয়, হচ্ছে
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪