দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ খেলার জন্য অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল গত মাসের ২৮ তারিখে ঢাকায় পা রাখার কথা ছিল। পরবর্তীতে কথিত নিরাপত্তহীনতার ঝুঁকিতে টাইগারদের বিরুদ্ধে সফর বাতীল ঘোষণা করে তারা। তবে অস্ট্রেলিয়ার এটাই কোন প্রথম সফর বাতিল নয়। এর আগেও তারা বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সফর বাতিল করেছে।চোখ বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে সে সব সফর বাতিলের ঘটনায়।
১৯৯৬ শ্রীলঙ্কা:
১৯৯৫ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে লঙ্কান তারকা মুত্তিয়া মুরালিধরনকে বারবার ‘নো’ ডাকার পরই টান পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কার সম্পর্কে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সপ্তাহখানেক আগে কলম্বো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তামিল টাইগারদের বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন ৯১, আহত ১৪০০। এ ঘটনার পরই বেঁকে বসে অস্ট্রেলিয়া, সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। স্বাগতিকদের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ দুটি তারা খেলতে যায়নি শ্রীলঙ্কায়। অগত্যা শ্রীলঙ্কা পেয়ে যায় ওয়াকওভার। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঠিকই মুখোমুখি হয়েছিল, ফাইনালে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
২০০২ জিম্বাবুয়ে:
২০০২ সালের এপ্রিলে জিম্বাবুয়েতে দুটি টেস্ট খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। সফরের ঠিক আগে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া। জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের বিতর্কিত নির্বাচনের জবাবে অস্ট্রেলিয়া সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ২০০৩ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলে জিম্বাবুয়েতে। এ ছাড়া ২০০৪ সালে দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে সিরিজ খেলতেও জিম্বাবুয়েতে পা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেবার আরেক গোল বাধল জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে। ফর্মকে গুরুত্ব না দিয়ে কেবল ‘বর্ণ কোটা’র ভিত্তিতে খেলোয়াড় নির্বাচনের প্রতিবাদে ধর্মঘট ডেকেছিল জিম্বাবুয়ের ১৩ শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়। এর প্রতিবাদে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল নাম প্রত্যাহার করে নিলেও প্রায় পূর্ণ শক্তি নিয়েই অস্ট্রেলিয়া সফরটি করেছিল। তবে জিম্বাবুয়েকে টেস্ট থেকে বহিষ্কার করায় সফর তিনটি ওয়ানডেতেই সীমাবদ্ধ থাকে।
২০০২ পাকিস্তান:
২০০২ সালের মে মাসে নিউজিল্যান্ডের পাকিস্তান সফর চলার সময় করাচি টিম হোটেলের বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন ১২ জন। সঙ্গে সঙ্গে সফর বাতিল করে কিউইরা। নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই বছরের আগস্টে পাকিস্তান সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন গ্লেন ম্যাকগ্রা, শেন ওয়ার্নের মতো অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র খেলোয়াড়েরা। একপর্যায়ে সফরই বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া।
২০০৮ পাকিস্তান:
২০০৮ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন টেস্ট ও পাঁচ ওয়ানডে খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। এন্ড্রু সাইমন্ডসের মতো কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় তীব্র আপত্তি জানান এ সফর নিয়ে। শেষমেশ নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তান সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া। তবে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই সফরের পাঁচটি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয় নিরপেক্ষ ভেন্যু আরব আমিরাতে। আর টেস্ট সিরিজটি হয় ২০১০ সালের জুলাইয়ে, ইংল্যান্ডে।