somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকার এপার ওপার - যাত্রা হলো শুরু

২৬ শে মে, ২০০৭ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথা দিয়েছিলাম, আমার ২২০০ মাইল পথ চলার অভিজ্ঞতার উপরে কিছু পোস্ট দিবো। তাই সংক্ষেপে লিখছি।

গুগলের হেড কোয়ার্টার সিলিকন ভ্যালির কেন্দ্রের মাউন্টেইন ভিউ শহরে, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের উত্তর দিকে, সান ফ্রান্সিস্কোর অদূরে। আর আমার বিশ্ববিদ্যালয় হলো ইলিনয়ের আরবানা-শ্যাম্পেইন শহরে, যা মিডওয়েস্টে পড়ে। এটা হলো শিকাগোর ২০০ মাইল দক্ষিণে। ম্যাপে আমার যাত্রা পথ দেখতে পাবেন, মোট পথ হলো ২২০০ মাইলের মতো।

পথে আমরা পেরিয়েছি ৫টা স্টেট। ইলিনয়ের পরে আইওয়া, নেব্রাস্কা, ওয়াইওমিং, ইউটাহ, নেভাডা, তার পরেই ক্যালিফোর্নিয়া। এর মধ্যে শুরুর স্টেট গুলো বেশ সমতল, উঁচু নিচু নেই একেবারেই। কিন্তু ওয়াইওমিং থেকে শুরু হয় প্রচন্ড খাড়া পর্বত। এর মধ্যেই ৬০-৭০ মাইল গতিতে গাড়ি চালাতে হয়।

যাত্রা শুরুর প্ল্যান ছিলো সকালে। কিন্তু আরবানা শ্যাম্পেইনে আমাদের বিশাল সংসার। মানে, বাসাটা ছোট্ট, কিন্তু আমার স্ত্রী জারিয়া বাংলাদেশ ও দুনিয়ার আরো অনেক দেশের হস্তশিল্পের জিনিষ দিয়ে মনের মতো ঘর সাজিয়েছে। তাই অন্যদের মতো গ্রীষ্মের এই তিন মাস সাবলেট দেয়া সম্ভব ছিলো না। (এখন দুই বাসার ভাড়াই গুনছি)। আসার আগে যদ্দুর সম্ভব ঘরের সবকিছু বেঁধেছেদে আসলাম আমরা, সব করতে করতে বিকাল ৩টা বেজে গেলো।

আমার গাড়িটা পুরনো হলেও ইঞ্জিন বেজায় ভালো। গুগলে ইন্টার্নশিপ ঠিক হওয়ার সময়ই সিদ্ধান্ত নেই, পুরো পথ ড্রাইভ করে যাবো। অনেক ভোগান্তি হলেও এটা পুরা জীবনের মতো একটা অভিজ্ঞতা - একটা মহাদেশ পাড়ি দেয়া! যথারীতি বাংলাদেশী "অভিজ্ঞ" ভাইয়েরা হাইকোর্ট দেখানো শুরু করলো, এতোটা পথ পাড়ি দিতে গিয়ে আমরা মরুভূমিতে আটকা পড়বো আমার পুরানো গাড়ি বিকল হয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি। (এখন সেই "বিশেষ-অজ্ঞ"দের চেহারা দেখা দরকার!!)। কিন্তু আশা দিলেন প্রফেসর সালিম রশিদ ... উনি বললেন, এরকম একটা অভিযাত্রা উনারো স্বপ্ন ছিলো, কিন্তু বাচ্চাদের জন্মের পরে আর হয়ে উঠেনি। তাই সময় থাকতে সাহস করে রওনা দিয়ে দেয়াটাই ভালো।

যাহোক, বিকেল তিনটাতে যাত্রা শুরু করলাম। আমেরিকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত চমৎকার। হাইওয়েগুলো ইন্টারস্টেইট নামে পরিচিত, শুধু নির্দিষ্ট জায়গা বা এক্সিট দিয়েই এখানে ঢোকা যায়। হাইওয়েতে সব গাড়িই অন্তত ৬০ হতে ৭৫ মাইল (১০০ হতে ১২০ কিমি/ঘন্টা) বেগে চলে। তবে রাস্তা এতোই মসৃন যে, মোটেও টের পাওয়া যায়না।

তিন মাসের নতুন সংসার পাতার জন্য আমরা এটা সেটা নিতে নিতেই গাড়ির ট্রাঙ্ক আর পিছনের সীট ভরে গেছে পুরাপুরি। আমি ড্রাইভিং শিখেছি আমেরিকাতে এসেই, নিজে গাড়ি কিনে তার পর। শিকাগো গেছি অনেক বার, কিন্তু সেটা মাত্র ১৬০ মাইলের পথ। আর এখানে আমি পাড়ি দিবো তার ১৫ গুণ পথ।

যাহোক, আরবানা থেকে আইওয়ার পথে চললাম। বিস্তির্ণ পথ, দুই পাশে ভুট্টা আর সয়াবীন ক্ষেত। ইলিনয় পুরাটাই চ্যাপ্টা একটা এলাকা, পাহাড় তো দূরের কথা, টিলাও নাই। পিওরিয়া নামের মাঝারি সাইজের একটা শহর পেরিয়ে আমরা এসে পৌছালাম যখন আইওয়ার দ্বারপ্রান্তে, তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। তার পরেও অন্ধকারে ৩/৪ ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে রাত ১০টার পরে এসে পৌছালাম আইওয়ার বড় শহর দ্য মইনে। পথ পেরিয়েছি তখন ৩৫০ মাইলের মতো।

[২য় ছবিটা গাড়ি থেকে তোলা মিসৌরি নদীর দৃশ্য। বাকি পথে দেখার কিছুই ছিলো না, ভুট্টা ক্ষেত বাদে। আর অন্য ছবিটা পিওরিয়ার কাছে, ইন্টারস্টেইট ৭৪ এর ছবি]।
[চলবে]
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০০৭ দুপুর ২:১৪
১৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×