* ইতিহাস *
কথিত আছে যে, ঢাকার এই গুরুদুয়ারাটি যেখানে অবস্থিত, সেই স্থানে ষোড়শ শতকে শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক অল্প সময়ের জন্য অবস্থান করেছিলেন। এই স্থানে থাকা কালে তিনি শিখ ধর্মের একেশ্বরবাদ এবং ভ্রাতৃত্ববোধের কথা প্রচার করেন, এবং ধর্মের আচার অনুষ্ঠান পালনের শিক্ষা প্রদান করেন।
শিখ ধর্মের ৬ষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ সিং এর সময়কালে (১৫৯৫-১৬৪৪ খ্রিঃ) ভাইনাথ (মতান্তরে আলমাস্ত) নামের জনৈক শিখ ধর্ম প্রচারক এই স্থানে আগমন করে গুরুদুয়ারাটি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কারো কারো মতে, গুরুদুয়ারাটি নির্মাণের কাজ শুরু হয় ৯ম শিখ গুরু তেগ বাহাদুর সিং এর সময়কালে (১৬২১-১৬৭৫ খ্রিঃ)।(১) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে এর নির্মাণকার্য সমাপ্ত হয়। পরবর্তীতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি ভগ্নদশা প্রাপ্ত হয়। (২)
বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ১৯৭২ সালে গুরুদুয়ারাটির ভবনের কিছু সংস্কার করা হয়। ১৯৮৮-৮৯ সালে এটির ব্যাপক সংস্কার সাধন করা হয়, এবং বাইরের বারান্দা ও সংলগ্ন স্থাপনা যোগ করা হয়। সংস্কার কার্যের অর্থায়ন করা হয় বাংলাদেশে ও বিদেশে অবস্থানরত শিখ ধর্মাবলম্বীদের দানের মাধ্যমে। ঢাকার আন্তর্জাতিক পাট সংস্থার তদানিন্তন প্রধান সর্দার হরবংশ সিং এর নির্মাণকার্য তদারক করেন। (২)
* ২ স্থাপনা *
গুরুদুয়ারাটির ভবনে একটি গম্বুজ রয়েছে। মূল উপাসনার স্থানটি দরবার সাহিব নামে পরিচিত। এর উত্তর প্রান্তে শিখ ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থ সাহিবের একটি অনুলিপি কাঠের বেদীতে রাখা আছে। গুরু তেগ বাহাদুর সিং এর এক জোড়া পাদুকা গ্রন্থ সাহিবের নীচে একটি কাঁচের বাক্সে রাখা আছে। (১)
* ৩ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান *
গুরুদুয়ারাটি সকল ধর্মের মানুষের প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত। এখানে প্রতিদিন শিখ ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থ সাহিব থেকে পাঠ করা হয়, এবং প্রার্থনা করা হয়। প্রতি শুক্রবার এখানে সাপ্তাহিক উপাসনা ও কীর্তন করা হয়ে থাকে। এই দিন সকালে এবং প্রার্থনার শেষে খাদ্য বিতরণ করা হয়ে থাকে।(১)
* ৪ তথ্যসূত্র *
(১) Gurdwara Nanak Shahi, বাংলাপিডিয়া হতে।
(২) ঢাকার গুরুদুয়ারা নানকশাহীর সম্মুখে অবস্থিত তথ্য-ফলক।
(টীকা - এই নিবন্ধটি আজ বাংলা উইকিপিডিয়াতে যোগ করেছি। গতকাল দুপুরে গুরুদুয়ারাটির ছবি তোলার পরেই এর সম্পর্কে তথ্য যোগাড় করেছিলাম। )
(টীকা ২ - এই সিরিজে ঢাকার প্রাচীন মসজিদ, মন্দির, দূর্গ ও অন্যান্য স্থাপনা সম্পর্কে আরো তথ্য দেয়ার আশা রাখি। সব নিবন্ধ এর সাথে সাথে বাংলা উইকিপিডিয়াতেও যুক্ত করছি। আপনাদের সবাইকেও আহবান জানাই, আমাদের অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্যের কথা ইন্টারনেট তথা ডিজিটাল মাধ্যমে তুলে ধরুন। এসব পুরাকীর্তিকে সংরক্ষণ করার দায়িত্ব আমাদের সবার। নইলে কিন্তু বিদেশীরাই ... )
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৫৮