somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণ - বারাক ওবামা আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতে গেছেন!!!

০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বারাক ওবামা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন!

তিনি আমেরিকার ৪৪তম প্রেসিডেন্ট, এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট।

ওবামার জন্ম ১৯৬১ সালে, তাঁর বাবা কেনিয়ার কৃষ্ণাঙ্গ ও মা আমেরিকার শ্বেতাঙ্গ। সেই সময়ে বর্ণবাদের ছোবল ছিলো আমেরিকার অনেক স্থানে, এমনকি অনেক রাজ্যে শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের বিয়েও নিষিদ্ধ ছিলো, ছিলোনা কালো মানুষদের ভোটাধিকার। আর আজ অশ্বেতাঙ্গ ওবামা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন বিপুল ভোটে। গত ৪০ বছরে এতো বিশাল ব্যবধানে কেউ নির্বাচিত হয়নি এদেশে।



১৯৬০ সালে প্রেসিডেন্ট কেনেডি বলেছিলেন, আজ থেকে ৪০ বছর পরের নতুন আমেরিকাতে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে, এমন কি কৃষ্ণাঙ্গ একজন মানুষ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন। কিন্তু আসলেই যে ২০০৮ সালে তা সত্যি হবে, কেউ তা জানে না।

----

ওবামার কথা শুনেছিলাম ইলিনয়ে আসার সময়েই, সেই ২০০৪ সালে। তখন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নির্বাচনী সম্মেলনে এক জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে ওবামা সবার নজর কাড়েন। তিনি সেই সময়েই মার্কিন সিনেটে নির্বাচিত হন, এর ৪ বছরের মাথায় মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তিনি এলেন, দেখলেন, জয় করলেন।

----

আমি এখন সিএনএনের নিউজ দেখছি, কৃষ্ণাঙ্গ একজন ভাষ্যকার এতক্ষণ অনেক কথা বললেও এখন কেবলই ঝরঝর করে কাঁদছেন। ষাটের দশকেও যেখানে কৃষ্ণাঙ্গদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হতো, সেখানে আজ কৃষ্ণাঙ্গ বারাক ওবামা পুরো আমেরিকার ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন

----

শিকাগোর গ্রান্ট পার্কে লাখ লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে।
আমেরিকাতে কোনো জনসভাতে এতো মানুষের সমাগম কেউ কখনো দেখেনি। সবাই জমায়েত হয়েছে, ওবামার বিজয় উদযাপনের জন্য। গ্র্যান্ট পার্কে আমরা গিয়েছিলাম মাস চারেক আগে, বিশাল ময়দান, টিভিতে দেখছি তার পুরোটাতেই জনমানুষের ঢল নেমেছে।

আজ সারাদিন রাস্তাঘাটে গাড়ি কম দেখেছি, কারণ তিন চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও মানুষে ভোট দিতে গেছে। এবারের নির্বাচনের মতো আবেগময়, উদ্দীপনাময় নির্বাচন আমেরিকাতে বহুদিন হয়নি।

----------

ওবামার কৃতিত্ব কম না, সিএনএনের সমীক্ষাতে দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গ ভোটারেরাও ওবামাকে ভোট দিয়েছে, গায়ের রঙটা বেশি প্রাধান্য পায়নি। শ্বেতাঙ্গ গ্রামাঞ্চলের শ্রমজীবী ভোটারেরা সাধারণত রিপাবলিকানদের ভোট দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওবামাকে এবার তারা ভোট দিতে পিছপা হয়নি।

-------

জন ম্যাককেইন এই মাত্র মঞ্চে এসেছেন, হার স্বীকার করে নিয়ে ওবামাকে অভিনন্দন জানালেন। পরাজয়ের মুহুর্তে ম্যাককেইন ধীর স্থির ভাবে বক্তব্য রাখছেন

ম্যাককেইন বলছেন, কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য এই নির্বাচন এক ঐতিহাসিক ক্ষণ। ১০০ বছর আগে আমেরিকার নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও কৃষ্ণাঙ্গরা সমান অধিকার পেতোনা, ১০০ বছর আগে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট কৃষ্ণাঙ্গ বুকার টি ওয়াশিংটনকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানালে বিতর্কের সৃষ্টি হয়, আর আজ সেই অধিকারবঞ্চিত মানুষদের একজনই আমেরিকার ক্ষমতার শীর্ষে।

ম্যাককেইনের বক্তব্যটা খুব ভালো লাগলো, মর্যাদার সাথে হার স্বীকার করে নিয়ে তিনি ওবামার সমর্থনে সারাদেশবাসীকে একতাবদ্ধ হওয়ার জন্য আহবান জানালেন

সমর্থকদের অনেকে ওবামার নাম শোনামাত্র "ভুয়া ভুয়া" বলা শুরু করলে ম্যাককেইন তাদের থামিয়ে দেন, বলেন, এই দীর্ঘ লড়াইতে হার জিত হবেই, কিন্তু আগামী প্রেসিডেন্টের জন্য, সারা দেশের জন্য সবাইকে একতা বদ্ধ হতে হবে। ম্যাককেইন এখন তার সমর্থক, পরিবার ও পরিজনকে ধন্যবাদ জানালেন।

ক্লান্ত বিধ্বস্ত পরাজিত ম্যাককেইন এখন আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছেন মঞ্চ থেকে।

---------

ওবামা ভাষণে বলছেন, আজকের পরে আর কেউ কখনো সন্দেহ করতে পারবেনা, আমেরিকা এমনই দেশ যেখানে সব কিছু সম্ভব, সবারই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব।


---
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:০২
৪৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×