somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ: একটি রাজনৈতিক নাটকের মঞ্চমহরা

১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক দিন লেখা হয়নি, কারণ লেখার বিষয় স্থির করতে পারছিলাম না। অধিকন্তু সময়ের সীমাবদ্ধতাও একটি কারণ।

সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক আকাশে ভাদ্রমাসের মেঘের খেলা চলছে। অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তায় স্পষ্ট কোনো দৃশ্য কল্পনা করার জো নেই।

তাই অস্থির চিন্তার সমন্বিত একটি দৃশ্যকল্প আঁকার ক্ষুদ্র এই প্রয়াস।

ক'দিন আগেও রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে ড. ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বাধীন একটি জোট গঠনের কথা শোনা যাচ্ছিল। সাবেক রাষ্ট্রপতি বি. চৌধুরীর বিকল্পধারা, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, মাহমুমুদুর রহমান মান্না সাহেবের নাগরিক কমিটি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ইব্রাহিম সাহেবের কল্যাণ পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল ওই জোটের শরিক হতে যাচ্ছেন- এমনটাই খবর ছিল।

অন্যদিকে, বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক লে. জে. হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি মহাজোট ছেড়ে বেশ কযেকটি ইসলামিক দল নিয়ে জোট গঠন করবেন অথবা এককভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন অথবা বিএনপি ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না-- ইত্যকার গরম গরম কথা শোনা যাচ্ছিল।

বিএনপি ১৮ দলীয় জোট সম্প্রসারণের জন্য সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি মহাজোটের মধ্য থেকেও শরিক ভাগিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগকে একঘরা করার পরিকল্পনা করেছিল।

আওয়ামী লীগও সমমনা ও স্বাধীনতার পক্ষের দলগুলোকে জোটভুক্ত করে মহাজোট সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছিল।

কিন্তু বর্তমানে সেসব বিষয় আর আলোচনায় নেই। ইউনূস সাহেব প্রকারন্তরে বিএনপির সমর্থনেই কথা বলছেন-- মার্কিন কূটনীতিকরা যেমন বলছেন।

এরশাদ সাহেব এখন আর মহাজোট থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার হুমকিযুক্ত মেঘগর্জন করছেন না।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং রায় কার্যকর করার দৃপ্ত প্রতিশ্রুতি ঘোষণাকারী সরকারী মন্ত্রীরাও এখন আর সে বিষয় নিয়ে গরম গরম বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন না।

গণজাগরণ মঞ্চের তরুণ প্রজন্মও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিকারী কোনো কার্যক্রম করছে না।

যুদ্ধাপরাধী দলীয় শীর্ষ নেতাদের বাঁচাতে জামায়াতে ইসলামি এবং ছাত্র শিবির ২৫ অক্টোবরের পর প্রবল আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের যে জিহাদি ঘোষণা দিয়েছিল তারও কোনো বাস্তব প্রতিফলন পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

বর্তমানে সরকার নির্বাচন করার উদ্দেশ্যে (বিএনপিসহ অথবা বিএনপি ব্যতীত) মন্ত্রীদের পদত্যাগ, দলীয় মনোনয়ন বিক্রর মাধ্যমে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। উপরোন্তু, আকস্মিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী গতকাল রোববার পরোক্ষভাবে জানিয়ে দিলেন তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব চান না।

অন্যদিকে বিরোধী জোট দফায় দফায় গগনবিদারি শ্লোগানে রাজপথ কাঁপিয়ে মিছিল সমাবেশের পরিবর্তে পিলে চমকানো ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের দ্বারা ধিমে-তেতালায় হরতাল করে যাচ্ছে।

তৃতীয় শক্তি হিসেবে নতুন জোটের আশা ত্যাগ করে এবং নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে বি. চৌধুরী এবং কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরমর্শ দিয়েছেন। একই সাথে বিরোধী দলকে হরতাল প্রত্যাহারেরও পরামর্শ দিয়েছেন।

আজ সোমবার প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকেও শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই তাদের এই আন্দোলনকে নির্বাচনী প্রচারণা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, নির্বাচনের আগে সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের উজ্জীবিত করতেই এই আন্দোলন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলীয় অস্তিত্বের প্রশ্নে শেষ মুহূর্তে হলেও বিএনপি নির্বাচনে যাবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সর্বদলীয় সরকারে যোগ দেবে। বিএনপি তার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনেকটাই নমনীয়-- বিষয়টি অনেক আগেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাদের প্রধান আপত্তি শেখ হাসিনাকে নিয়ে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে তারা চান না।

আগামী ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে দেশে নতুন সরকার আসছে-- এমন স্বপ্নও দেখাচ্ছেন ও দেখছেন অনেকেই।

তাহলে কি চলমান অস্থিরতার আড়ালে সকলের মধ্যে একটি সমঝোতা ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে? নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে সকলে মিলে নাটক করছে?

কোনো স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। আপনারা কেউ কি পারছেন? বা পেরেছেন?

জানাবেন প্লিজ.....................................




০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×