somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অযোধ্যায় 'বাবরি মসজিদ' ধ্বংসের দীর্ঘ ১৭ বছর পর তদন্ত রিপোর্ট পেশ, অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারীবাজপেয়িসহ বিজেপি'র শীর্ষস্থানীয় নেতারা

২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা তদন্তে গঠিত লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারীবাজপেয়িসহ প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনের এ তথ্য ভারতের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। স্পর্শকাতর এই প্রতিবেদনের তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় গতকাল ভারতের পার্লামেন্টে হইচই করেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ আইনপ্রণেতারা। তাঁদের চাপে অধিবেশন দু-দুবার মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
প্রতিবেদনে যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাজপেয়ি ছাড়াও রয়েছেন বিজেপি নেতা এল কে আদভানি, বিজেপির সাবেক সভাপতি মুরলি মনোহর জোশি, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ার, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিংঘাল ও গিরিরাজ কিশোর।
কমিশনের ৯০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাবরি মসজিদ রক্ষায় ওই সময়ের সরকার, রাজনৈতিক নেতারা ও প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে জাতীয় ইতিহাসে ‘অন্যতম ঘৃণ্য’ কাজ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল এবং এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে বিজেপির নেতারা এ ব্যাপারে জানতেন না বা তাঁরা নিরপরাধ।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ১৬ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে উগ্রপন্থী হিন্দুরা। মসজিদটি ধ্বংসের ১০ দিন পর ওই ঘটনার তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের অসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম.এস লিবারহানকে প্রধান করে ‘লিবারহান কমিশন’ গঠন করা হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর চলতি বছরের ৩০ জুন কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে ভারত সরকার ওই প্রতিবেদন এখনো জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি। জনসমক্ষে প্রকাশ করার আগে প্রতিবেদনের এসব তথ্য যাচাই করা হবে। প্রতিবেদনটি পার্লামেন্টের অধিবেশনে উপস্থাপন করার কথা। এ ব্যাপারে বিচারক লিবারহান বলেন, ‘আমার মুখ বন্ধ। আমি প্রতিবেদনটি নিয়ে কাউকে কোনো তথ্য দিইনি।’
১৯৯০ সালে এল কে আদভানি ওই মসজিদটি ভাঙার পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন। উগ্রপন্থী হিন্দুদের দাবি, অযোধ্যায় যেখানে বাবরি মসজিদ ছিল, সেখানে আগে একটি মন্দির ছিল এবং ওই স্থানটি হিন্দু দেবতা রামের জন্মস্থান।
এদিকে প্রতিবেদনটি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় অভিযুক্ত বিজেপির নেতা আদভানি বলেন, ‘আমি এ ধরনের অভিযোগ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত।’ বাজপেয়ির মতো নেতাকে অভিযুক্ত করার ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি পার্লামেন্টের চলতি অধিবেশনেই প্রতিবেদনটিকে আলোচনায় আনার দাবি জানান। এ ছাড়া গোপনীয় এই প্রতিবেদনের তথ্য কীভাবে সংবাদমাধ্যমের কাছে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অন্যান্য বিরোধী দল। বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির প্রধান মুলায়ম সিং যাদব এ ঘটনায় সরকারকে অভিযুক্ত করে তদন্ত দাবি করেছেন। বিজেপির মুখপাত্র রাজীব প্রতাপ রুডি অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দল সুনির্দিষ্টভাবে এসব তথ্য ফাঁস করেছে।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে লিবারহান কমিশনের একটি কপিই রয়েছে। তা নিরাপদে রাখা হয়েছে এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। সংবাদপত্রের প্রতিবেদনকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মানু সিংভি বলেন, ‘জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়নি এমন প্রতিবেদন নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারি না। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার, ১৭ বছর ধরে দেশবাসী জানে, কারা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।’ এনডিটিভি, এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×