হোটেলের খাবার খেতে-খেতে আমার জীবন গেল।
সুরভী আমার ভাবীর সাথে বেড়াতে বরিশাল গিয়েছে। সাথে পরীও আছে। পরীকে বললাম যেওনা, বাবার সাথে থাকো। পরী বলল, তুমিও চলো। বেশ কয়েকদিন থাকবে তারা। এর আগে গতমাসে গিয়েছে শরীয়তপুর। এখন আমাকে তিনবেলাই হোটেলে খেতে হচ্ছে। হোটেলের খাবার আমার ভালো লাগে না। একটুও ভালো লাগে না। খেয়ে আরাম পাই না। হোটেলে খেয়ে খেয়েই তো গ্যাস্ট্রিক আলসার বানিয়ে ফেলেছি। এই মাত্র সকালের নাস্তা খেয়ে এলাম। দুপুরেও হোটেলে খেতে হবে। সুরভী বলেছিল রান্না করে ফ্রিজে রেখে যাই। কিন্তু ফ্রিজের খাবার খেতে আমার ভালো লাগে না। বাসি মনে হয়। আমার পছন্দ টাটকা খাবার। খাবারের চেয়ে বেশি সমস্যা আমি একা থাকতে পারি না।
এখন মনে হচ্ছে ওদের সাথে গেলেই পারতাম।
খালি বাসায় অস্থির লাগে। একা একা লাগে। ভয় লাগে। যখন ছোট ছিলাম, তখনও হোটেলের নাস্তা খেতাম। মা বাসায় নাস্তা বানাতেন না। প্রতিদিন সকালে হোটেলের নাস্তা খেতাম। তখন খেতে বেশ লাগতো। এমন বহুবার হয়েছে, মাকে বলেছি দুপুরে রান্না করো না- হোটেল থেকে খাবার কিনে আনবো। বছরের পর বছরের হোটেলের নাস্তা খেয়েছি। আবার বাসায় রান্না করলেও বাসার রান্না না খেয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে এনেছি। এই হোটেলের খাবার খেয়ে খেয়ে এখন গ্যাস্ট্রিকে ভূগছি। খুব কষ্ট। আর এখন যখন হোটেলের খাবার খেতে চাই না, বাসার খাবার খেতে চাই কিন্তু এখন আমাকে হোটেলের খাবার খেতে হয়। প্রতিদিন দু'টা গ্যাস্ট্রিকের অষুধ খাই।
গতকাল রাতে পর-পর দুইটা মুভি দেখলাম।
তামিল মুভি। হিন্দি ডাবিং। দুইটা মুভিই ভয়াবহ। প্রচুর মারামারি কাটাকাটি। যেন মানুষ মেরে ফেলা কোনো ঘটনাই না। নায়ক একাই বিশ ত্রিশ জনকে মেরে ফেলে। পুরো ঘটনা ট্রেনের মধ্যেই। নায়ক ট্রেনের ক্যান্টিনে কাজ করে। ট্রেনের ভিআইপি কামরায় খাবার দিয়ে আসে। এই ট্রেনে করেই যাচ্ছে সিনেমার নায়িকা। আর এক মন্ত্রী। এদিকে ট্রেনে ডাকাত আক্রমন করে। আবার অন্যদিকে ট্রেনের ড্রাইভার হঠাত স্ট্রোক করে মরে যায়। ট্রেন চলছে তো চলছেই। ট্রেনের এক মেয়েকে নায়ক খুব পছন্দ করে ফেলে। ওই মেয়ে আবার গান পাগল। ভয়াবহ অবস্থা। এদিকে ট্রেনের এক কামরায় আগুন লেগে যায়। আগুন লাগা কামরায় আছে নায়িকা। ট্রেন পরপর কয়েকটা বড় স্টেশনে না থামায় মিডিয়া প্রচার করে দেয় ট্রেন ছিনতাই করা হয়েছে। ছিনতাই করেছে জঙ্গীরা।
এখন কাজের কথায় আসি।
আজ ৮ তারিখ কিন্তু এখন পর্যন্ত বইমেলায় যাইনি। যদিও প্রতিদিন টিভি ও ফেসবুক থেকে বইমেলার আপডেট পাচ্ছি। যদিও লোক পাঠিয়ে কিছু বই কিনে আনিয়েছি। আরও আনবো। গত বছরও অনেক বই কিনেছি। সত্যিকথা বলি- সেইসব বই কিছুই পড়িনি। আমাদের জীবনের আয়ু তো সীমিত। বইপত্র নিয়ে এলোমেলো পড়তে গিয়ে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। বইটি পড়ার আগে ভাবতে হবে আমি এই বইটি কেন পড়ব, বইটি থেকে কী চাই। যা পড়া হয়, তা আত্মস্থ করা গুরুত্বপূর্ণ। বই পড়ার মূল উদ্দেশ্য থাকতে হবে আত্মিক উন্নয়ন। বই পড়া শেষে সারমর্ম টাইপের উপলব্ধি ও শিক্ষা লিখে ফেলা যেতে পারে যা হয়ত নিজের এবং অন্যদের কাজে লাগতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৪৯