১। অমানুষের ভিড়ে আর কোনো মানুষ নেই। ধামাচাপায় সব ছাই হয়ে যায় এভাবেই! দূষিত আগুনে পুড়ে যাওয়া দৃষ্টি নিয়ে এভাবে আর কতদূর? নরক নেমে এসেছে মানুষের মতো পিশাচের পায়ের তলায়।
২। হিংস্র হায়েনায় খুবলে খাচ্ছে মানবতা। পশুগুলো আজ মানুষের রূপে। বিশ্বজিতের সাথে বেঈমানী করা জাতির মঞ্চ প্রস্তুত। জালিমের বিচার চাই।
৩। কোপানোর সময় মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল যে সব ফেসবুক-বলদ এ নিয়ে আহাজারি করছে, তাদের সামনে ঘটনা ঘটলে কি করতো? সাক্ষ্য দেয়ার ভয়ে ঘটনাটা দেখতোও না। পালিয়ে যেতো। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতো-- মানুষ আজ নিরব দর্শক!
৪। এইটা তো খুবই স্বাভাবিক, সব সময়ে রাতের অন্ধকারে করে রেললাইনে লাশ ফেলে আসে, ওইদিন রাতে মনে হয় অন্য আরেকটা contract ছিলো তাই এইটা দিনেই সারা লাগসে, যা দিন পড়েছে এখন এদের কেউ double শিডুইল দেওয়া লাগে।
৫। মেয়েটা চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেনি ছেলেটাকে! আহারে---
একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছেলে মেয়ে দুইজন কিস করলে দেখা যেত আশে পাশের সবাই তেড়েফুঁড়ে আসত! কিন্তু একটা জলজ্যান্ত মানুষকে কোপাচ্ছে এই দৃশ্য দেখার পরেও সবাই নির্বাক স্ট্যাচু হয়ে ভিডিও ধারণ করতাছে।
৬। যে ভিডিও দেখে ভিডিওকারীকে গালাইয়া উদ্ধার করছেন ভিডিওটা না করলে এতো আবেগ কিভাবে দেখাতেন? আর খুন খারাবি প্রায় হয় যেগুলাতে এতো আবেগ আসেনা আপনাগো। এইডা ভিডিও করে সামনে দিছে বলেই এতো আবেগ আসছে। তাকে ধন্যবাদ না দিয়ে গালাইতেছেন কেন? কেউ এগিয়ে আসেনি বলার আগে দেখেন আপনি কোনদিন কিসে এগিয়ে এসেছেন?
৭। বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ করার সাহস মানুষের নাই। মানুষ এখন ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে বসবাস করে। আমরা অন্যায় দেখে মজা নেই। ন্যায় কে বিচার করি অন্যায় দিয়ে। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, রুখে দাঁড়াও এই শব্দগুলো একসময় হারিয়ে যাবে...
৮। সকাল দশটার ঘটনা, রাত ১১ পর্যন্ত মামলাও হয় নাই, আসামিও ধরা পরে নাই। আজকে নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী একটা কঠোর নির্দেশ দিবেন, তারপর হয়ত আসামি ধরা পড়তে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলবেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই দেশে যদি এইরকম না হয়, তাহলে কোন দেশে হবে?
৯। পরের ইস্যু কি? নিশ্চয় ভারত বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ। আসেন আমরা ভুলতে থাকি
১০। চোখের সামনে প্রিয়জনের বিপদ দেখে কেই বা স্থির থাকতে পারে। মৃত্যুঝুঁকি নিয়েও মেয়েটা খুনিদের সাথে লড়াই করে গেছে স্বামীকে বাঁচানোর জন্য। না দেখতে চাওয়া রক্তাক্ত দৃশ্যই আমাদের সামনে বারবার চলে আসে। আলোচনার ঝড় ওঠে, এরপর আবার ধীরে ধীরে থেমে যায় সবকিছু। কিন্তু বিচার কখনো দেখি না আমরা।
মানবিক শিক্ষাই যদি না থাকে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি দিয়ে আমরা কী করবো! জীবনের নিরাপত্তাই যদি না থাকে উন্নয়ন দিয়েই আমাদের কী লাভ!
১১। খালি উন্নয়নে না, সব দিক দিয়েই আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে...
আজ বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফ (২৫) নামের এই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে ওসি মোয়াজ্জেমের তালতো ভাই স্থানীয় ওসি এর পেছনে প্রেমঘটিত বিষয় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন
১২। বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলার সময় যখন জাতীয় সংগীত বাজে, অহংকারে বুকটা ভরে যায়। কিন্তু যখন এই বাংলাদেশেই প্রকাশ্যে মানুষ খুন হয়, এবং আমরা তা নিরব দর্শক হয়ে দেখি, কিছুই করতে পারি না, তখন সেই দর্শকের তালিকায় নিজেকে ভাবতে গিয়ে অহংকার নয়, ঘৃণায় আস্তাকুৃৃঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে নিজেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ২:০১