somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী - ২৯

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি মানুষকে বিশ্বাস করি।
আসলে আমি মানুষকে বিশ্বাস করতে পছন্দ করি। আমি জানি- মানুষ ভন্ড, মিথ্যাবাদী এবং প্রতারক। তবু আমি দিনের পর দিন মানুষকে বিশ্বাস করে যাচ্ছি। আর প্রতিনিয়ত ঠকছি। বিশ্বাস করে ঠকার পর আমার বেশ মন খারাপ হয়। প্রচন্ড মন খারাপ হয়। কিন্তু তারপরে আবার নতুন করে আমি মানুষকে বিশ্বাস করি। আমৃত্যু আমি মানুষকে বিশ্বাস করে যাবো। বিশ্বাস করে ঠকা ভালো। তবে ইদানিং লোকজন আমাকে খুব বেশি ঠকাচ্ছে। লোকজন কি আমাকে গাধা মনে করছে? আমার সরলতার সুযোগ নিচ্ছে? যারা বিশ্বাস করে তারা সবাই'ই কি ঠকে। সবাইই কি প্রতারনার শিকার হয় আমার মতো? আমার সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে।

সেদিন বাসার কাছ থেকে এক কেজি আদা কিনলাম।
আদা আমার দরকার নাই। দেখলাম এক বুড়ো লোক বৃষ্টির মধ্যে আদা নিয়ে বসে আছে। দেখে বেশ মায়া লাগলো। আদা কিনে বাসায় এসে দেখি সব গুলো আদা পচা। বুড়োকে বিশ্বাস করলাম। বিশ্বাস এর বদলে সব গুলো আদা পচা দিলো। ফেলে দিলাম। অতি সামান্য ঘটনা তবু আমার খুব মন খারাপ হয়েছে। একলোক ভ্যানে করে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। পেঁয়াজ দেখে মনে পড়লো, সুরভি পেঁয়াজ কিনতে বলেছে। কিনলাম পাঁচ কেজি পেঁয়াজ। পরের দিন সুরভি বলল, দেখো বেশির ভাগ পেয়াজ'ই পচা। শেষমেষ ময়লার জুড়িতে ফেলে দিলাম। বাজার থেকে নুডুলস কিনলাম। বাসায় এসে দেখি নুডুলস এর মেয়াদ আরো দুই মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। খেজুর কিনলাম। মেয়াদহীন খেজুর দিয়ে দিলো। অথচ এই দোকান থেকেই আমি সারা বছর কেনাকাটা করি।

চারিদিকে শুধু চাষ করা মাছ।
বাজার ভর্তি চাষকরা মাছ। চাষের মাছ খেতে একটুও মজা না। তবুও চাষের মাছ অনেক দাম। ৫/৬ শ' টাকা কেজি। এদিকে আমি চাষের মাছ খেতে পারি না। প্রতিদিন বিভিন্ন বাজারে ঘুরে বেড়াই। দেশী মাছ পাই না। এক জাগায় শিং মাছ পেলাম। দেখে মনে হলো চাষ করা না। এক কেজি শিং মাছ কিনেলাম। লোকটা বলল, একদম দেশী শিং। যদি দেশী শিং না হয়, তাহলে আপনাকে এক লাখ টাকা দিব। খুশি মনে শিং মাছ নিয়ে বাসায় ফিরলাম। মাকে দেখালাম, মা বলল, এই গুলো দেশী শিং না। চাষের। আমি মার কথা বিশ্বাস করলাম না। পাশের বাড়ির রফিক আংকেলকে ডেকে নিয়ে এলাম। উনি অভিজ্ঞ লোক। উনি মাছ দেখেই বললেন, এ গুলো চাষের শিং। মনটা ব্যাপক খারাপ হলো। মাছ গুলো বুয়াকে দিয়ে দিলাম।

আদা বিক্রেতা, পেঁয়াজ বিক্রেতা, নুডুলস বিক্রেতা অথবা মাছ বিক্রেতা আমাকে ঠকালো। তাতে ওদের কয় টাকা লাভ হলো? আমি তো কাউকে টাকা কম দেই নি। দামাদামিও করি নি। যা বলেছে তাই দিয়েই কিনেছি। আমার তো সৎ পথের টাকা। কষ্টের টাকা। হিসাবের টাকা। অনেক দিন ধরে ইলিশ খেতে খুব ইচ্ছা করছে। বাজারে প্রচুর ইলিশ। কিন্তু অনেক দাম। সীমাহীন দাম। আমি সারা বাজার ঘুরে ঘুরে দেখি, কেউ কেউ এক হালি, দুই হালি করে ইলিশ কিনছে। মনে মনে ভাবি তাদের কত টাকা! অনেক সাহস সঞ্চয় করে, বুকে হাত রেখে ২৭০০ শ' টাকা দিয়ে দুইটা ইলিশ কিনে ফেলি। বিরাট বড় ইলিশ। দুইটা ইলিশ আড়াই কেজি ওজন। আমার সামনেই মাপলো।
বাজার থেকে বাসার কাছে এসে কি মনে করে একটা দোকানে মাপলাম মাছ দুটো। ৫০০ গ্রাম ওজন কম। দু'টা মাছ দুই কেজি। আড়াই কেজি নয়।

সুরভি বলল, কি হয়েছে তোমার?
তুমি তো খুব সুন্দর বাজার করো। ইদানিং এমন হচ্ছে কেন? আমি বললাম, চা দাও। সুরভি চা করতে গেলো। বেশ কিছু দিন ধরে সময় খুব খারাপ যাচ্ছে। মন মেজাজ বেশ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। চা খেয়ে আমি আর সুরভি বাইরে গেলাম। বেশ ভালো সময় কাটালাম। সুরভি যা খেতে চেয়েছে তাই খাইয়েছি। মানা করি নি। বাদাম, ঝালমুড়ি, বেলপুরি, আইসক্রীম, ফুসকা। লুচি, কাবাব, ফানটা এবং সব শেষে কোল্ড কফি। টিএসসিতে বসে বিয়ের আগের মত দুইজনে অনেক গল্প করলাম। গল্প করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। ফুলার রোড দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ঢাকা মেডিকেল পর্যন্ত গেলাম। রিকশা করে এক ঘন্টা ঘুরলাম। দোয়েল চত্বর থেকে সুরভিকে মাটির গহনা কিনে দিলাম। রাত দশ টায় বাসায় ফিরলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০৬
১৬টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×