somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের দেশের লেখকেরা আর্থিক দিক দিয়ে কেন দুর্দশাগ্রস্ত?

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথম কথা হলো- বাংলাদেশের লোকজন বই খুবই কম পড়ে। বছরে একবার বাংলা একাডেমিতে বই মেলা হয়, তখন কিছু বই বিক্রি হয়। এছাড়া সারা বছর তেমন একটা বই বিক্রি হয় না। বাংলাদেশের প্রকাশনী গুলোর খুবই করুণ অবস্থা। হাতে গোনা দু তিনটা প্রকাশনী খেয়েপরে বেঁচে আছে, বাকি গুলো কোনো রকমে টিকে আছে। একসময় আজিজ মার্কেটে অনেক বইয়ের দোকান ছিলো। এখন সেসব বইয়ের দোকান জামা কাপড় আর খাবারের দোকান হয়ে গেছে। ফেসবুক, টিকটক আর ইউটিউব দেখে বাংলাদেশের মানুষজন বই পড়ার সময় পায় না। অনেক সরকারি আমলা অফিসের কাজ বাদ দিয়ে বই লিখেন। সেই বই হাতে নিয়ে ফেসবুকে ছবি পোষ্ট করেন। দুঃখজনক কথা হলো- সেই বই ২৫ কপিও বিক্রি হয় না।

আমাদের পাশেই কলকাতা। কলকাতার মানুষজন আমাদের চেয়ে বেশি বই পড়ে। কলকাতার বই আমাদের দেশে ভালো বিক্রি হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আমাদের লেখকদের বই বিক্রি হয় না। কারন আমাদের দেশের লেখকরা ভালো লিখতে পারেন না। আমাদের দেশের সকল লেখক লেখার পাশাপাশি চাকরী করে থাকেন। চাকরী না করলে তাঁরা শুধু লিখে পেট চালাতে পারবে না। আমাদের দেশে যারা ধনী তাঁরা লেখালেখি করেন না। আমাদের দেশে তেলবাজি করার জন্য বহু লোক বই লিখেন। যেমন বঙ্গবন্ধু ও তার ছেলে শেখ রাছেলকে নিয়ে বহু বই লেখা হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনাকে নিয়েও অসংখ্য বই লেখা হয়েছে। দুদিন আগে একলোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। উনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটা মোটা বই লিখেছেন। জালিয়াতি ও প্রতারনার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উনার একটা দৈনিক পত্রিকাও আছে। উনি যে বইটা শেখ হাসিনাকে নিয়ে লিখেছেন, সে বই নাম ছিলো- শেখ হাসিনার ধর্মচিন্তা।

আমাদের দেশের বর্তমানে সকল লেখকরা ফেসবুক মুখী হয়ে গেছেন। তাদের বেশির ভাগ কর্মকান্ড ফেসবুক কেন্দ্রীক। যদি আমাদের দেশের লেখকরা চাকরী না করতো, শুধু লিখতো- তাহলে তাদের না খেয়ে মরতে হতো। সত্যি কথা বলতে আমাদের দেশে এখন ভালো লেখক নেই। একমাত্র হুমায়ূন আহমেদ লেখালেখির জন্য চাকরী ছেড়ে দিয়েছিলেন। শুধু লিখে লিখে তিনি, বেশ ভালো ছিলেন। গাজীপুরে বিশাল একটা বাংলো করেছেন। যার নাম নুহাশ পল্লী। বাংলাদেশের আর কোনো লেখক হুমায়ূন আহমেদের মতো বিলাসিতা করতে পারেন নি। লোকজন তার বই পাগলের মতো কিনতো। এরকম আর অন্য কোনো লেখকের বেলায় দেখা যায়নি। এখন যে কয়জন লিখছেন, তাঁরা সহজ সরল মানুষ নয়। তাদের মন নানান জটিলতা কুটিলতায় ভরা। একজন জটিল কুটিল মানুষের পক্ষে ভালো লেখা সম্ভব নয়। লেখকদের হতে হয় উদার। বিশাল হৃদয়ের অধিকারী।

পশ্চিমা দেশের লোকজন দূর্দান্ত লেখেন। তাদের একটা বই হাজার হাজার কপি বিক্রি হয়। আমাদের দেশে একজন লেখকের ৩০০ শ' কপি বই, তিন বছরেও বিক্রি হয় না। যদিও লেখকরা দাবী করেন তাদের বই হুহু করে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তম সংস্করন বের হয়ে গেছে ইত্যাদি। লেখকরা প্রকাশকের সাথে মিলে মিথ্যা বলেন। বর্তমানে এমনই করুণ অবস্থা যে লেখক নিজেই নিজের বইয়ের গুণগান করেন। পাঠকরা গুণগান করেন না। আসলে গুণকীর্তন গাওয়ার মতো লেখা আমাদের দেশের লেখকরা লিখতে পারেন না। আমাদের দেশে একজন সুনীল, শীর্ষেন্দু বা সমরেশ মজুমদারের মতো লেখক নেই। ফেসবুক না থাকলে আমরা জানতেই পারতাম না আমাদের দেশে এত এত কবি সাহিত্যিক আছে। ইদানিং কিছু অসৎ মানুষ লেখক সেজেছে। তাঁরা তাদের মন্দ কাজ গুলো লুকিয়ে রাখার জন্য সাহিত্যিক সেজেছে। তাঁরা অন্যকে টাকা দিয়ে নিজের নামে বই লেখায়।

আমাদের দেশে একসময় ভালো ভালো লেখক ছিলেন। যেমন- হুমায়ূন আজাদ, হুমায়ূন আহমেদ। তাদের বই অনেক বিক্রি হতো। আর এখন যার ফেসবুকে ফ্যান ফলোয়ার বেশি তার বই মোটামোটি বিক্রি হয়। বাংলাদেশে যে পরিমান মসজিদ আছে, সে পরিমান লাইব্রেরী নাই। অথচ প্রতিটা এলাকায় একটা করে লাইব্রেরী থাকা খুবই দরকার ছিলো। তাদের জাতির কল্যান হতো। কিন্তু আমাদের সরকার লাইব্রেরীর চেয়ে মসজিদ তৈরিতে বেশি আগ্রহী। কারন মসজিদ করলে বেহশত নিশ্চিত। আর লাইব্রেরী করলে ইহুদী নাসারা হবে। আমাদের দেশে একজন শিক্ষিত ব্যাক্তির চেয়ে একজন আলেম কে বড় ভাবা হয়। যাইহোক, আমাদের দেশে অল্প কিছু পাঠক আছে, একজন সত্যিকারের পাঠক। তাঁরা পড়েন। প্রচুর পড়েন। কারন তাঁরা জানেন, পড়ার চেয়ে, জানার চেয়ে- আর কিছু দামী নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৪
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×