এক মেয়ে আমার পিছু নিয়েছে।
বোকা মেয়েটা ভুল মানুষ বেছে নিয়েছে। অথবা অন্ধকারে সে ঠিক ঠাওর করতে পারেনি। মেয়েটা ফিসফিস করে কিছু বলছে। আমি পাত্তা দিচ্ছি না। হেটেই চলেছি। মেয়েটা আমার হাত ধরলো।
রাত সাড়ে নয়টা। শীতল বাতাস বইছে। হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। আমি ফুটপাত ধরে হাঁটছি। ফুটপাত মোটামোটি অন্ধকার। হাইকোর্টের এই রাস্তার লাইট গুলো বেশির ভাগ সময় নষ্ট থাকে।
আমি ঝটকা মেরে হাত ছাড়িয়ে নিলাম। মেয়েটি থেমে গেলো। আমি হন হন করে হেটে চলে গেলাম। কিছু দূর গিয়ে আমি থামলাম। মেয়েটার কাছে ফিরে এলাম। মেয়েটার চোখে পানি! মেয়েটা বেশ রোগা। চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। সেই কারনে চোখে মুখে একটা মায়ামায়া ভাব চলে এসেছে।
মেয়েটিকে এই ফুটপাতে একদম মানাচ্ছে না। তাকে মানাতো লম্বা বেলকনিতে। একহাতে চায়ের মগ, অন্যহাতে সুনীলের কবিতার বই। আমি বললাম, বৃষ্টির মধ্যে পথে পথে ঘুরছো কেন? বাসায় যাও।
মেয়েটি একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বলল, আজ একটাও খদ্দের পাইনি। ঘরে চাল নেই। খাবো কী?
আমার মনটা খুব খারাপ হলো। আমাদের দেশের মানুষ গুলো এত গরীব কেন! এখন মেয়েটাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমার পকেটে অল্প কিছু টাকা আছে। সব গুলো টাকা মেয়েটার হাতে দিলাম। বললাম, আজ বাসায় চলে যাও। বৃষ্টিতে ভিজো না। কিন্তু মেয়েটা টাকা নিলো না। বলল, দান, খয়রাত চাই না। আমি বললাম, ভালোবেসেই দিয়েছি। মেয়েটা বলল, ভালোবাসা লাগবে না। তুমি চাইলে আমি তোমাকে ভালোবাসা দিতে পারি।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে হাটতে শুরু করলাম। যে কোনো সময় ঝুম বৃষ্টি নেমে যাবে। বিজলি চমকাচ্ছে। মেয়েটা চিৎকার করে বলল, স্যার তোমার টাকা নিয়ে যাও। ভালোবাসার কথা বলতেই লজ্জা পেলে! ভেবে নাও পৃথিবীতে আর কেউ নেই। শুধু তুমি আমি ছাড়া। আসো কিছুক্ষন দুজন দুজনকে উপভোগ করি। আমি আমার হাটার স্প্রীড বাড়িয়ে দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১:১৬