বিয়ে করেছেন এজন্য আপনাকে অভিনন্দন।
অনেক শুভ কামনা। আপনি নামাজ পড়েন খুবই ভালো কথা। কোরআন, হাদীস পড়েন এটাও অনেক ভালো কথা। মাশাল্লাহ। যিকির করেন এটা ভালো। একজন মুসুলিম আরেকজন মুসলিমকে দ্বীনের দাওয়াত দিবে এটা স্বাভাবিক কথা। এটা এক হিসেবে মুসলিমের দায়িত্বে মধ্যেই পড়ে। ইমানি দায়িত্ব। কিন্তু আপনার স্ত্রী আপনার কথা শুনে না। মানে না। ইহা দুঃখজনক। খুব দুঃখজনক। আসলে এযুগের মেয়ে গুলো এরকমই। এরা ফেসবুক, টিকটক, আর ইউটিউব নিয়ে মহা ব্যস্ত। ধর্মীয় পথ তাদের ভালো লাগে না।
ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী এখন আপনি আপনার স্ত্রীকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতে পারেন, প্রহার করতে পারেন। শয্যা ত্যাগ করতে পারেন। অর্থ্যাত স্ত্রীকে মারতে পারেন। আলাদা বিছানায় ঘুমাতে পারেন। আপনার ধর্ম এবং কোরআন হাদীস এগুলো শেখায়। এগুলো করতে বলে। এগুলো সেই ১৪০০ শ' বছর আগের নিয়ম। কিন্তু ইসলাম একমাত্র ধর্ম তাঁরা নতুন নতুন নিয়ম বের করে না। তাঁরা সেই ১৪ শ' বছর আগের নিয়মেই চলছে। কেয়ামত পর্যন্ত মুসলিমরা কোরআন হাদীসের বাইরে যেতে পারবে না। এদিকে যুগ বদলে গেছে। নিয়ম কানুন, আইন সব বদলে গেছে। এমন কি দেশও কোরআন হাদীসের নিয়মে চলে না। দেশ চলে সংবিধান অনুযায়ী। অর্থাৎ মুসলিমরা কি ১৪ শ' বছর আগের নিয়মকানুন মানতে গিয়ে আধুনিক বিশ্ব থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে?
শুনুন আপনি বিয়ে করেছেন বলেই যে আপনার স্ত্রী আপনার কথায় উঠবস করবে সেটা ভাবা ঠিক হবে না। সে যদি নামাজ কালাম না পড়ে, ধর্মীয় নিয়ম কানুন পুরোপুরি না মেনে জীবনযাপন করে এবং আপনার দ্বীনের দাওয়াত না গ্রহন করে, সে জন্য আল্লাহ তাকে শাস্তি দিবেন। আপনি আবার রেগেমেগে তাকে মারতে যাবেন না। উনি মামলা করে দিলে আপনি বিরাট বিপদে পড়ে যাবেন। নারী নির্যাতন মামলা মারাত্মক মামলা। কোনো ছাড় নেই। বিচারে কিন্তু তখন ধর্মীয় আইন মানা হবে না, তখন দেশের সংবিধান অনুযায়ী বিচার হবে। অর্থ্যাত আপনি ফেঁসে যাবেন। তাকে তাঁর মতো চলতে দিন। তাকে ভালোবাসুন। একদিন হয়তো আল্লাহ তাকে সঠিক পথ দেখাবেন। সব তো আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়। মহান আল্লাহ না চাইলে কিছুই হবে না। আপনি যতই আপনার স্ত্রীর সাথে ঘ্যান ঘ্যান করেন না কেন।
আপনার কাছে আমার প্রশ্নঃ আপনি কি দরিদ্রদের সাহায্য করেন? আপনি কি অসুস্থদের চিকিৎসা করান? আপনি কি দরিদ্র পিতা মাতার সন্তানকে স্কুলে ভরতি করিয়েছেন? আপনি কি মানুষের বিপদে মানুষের পাশে থাকেন? আপনার পাশের বাসায় কেউ না খেয়ে আছে কিনা সে খবর নেন? অনাথ শিশুদের কোলে নিয়ে আদর করেন? অভুক্ত ক্ষুধার্থ কে পেট ভরে ভাত খাওয়ান? একজন বেকারকে চাকরী দিয়েছেন? একজন ভিক্ষুককে পাশে বসিয়ে পেট ভরে ভাত খাইয়েছেন? একজন রিকশাচাকলকে ৩০ টাকা ভাড়ার বদলে ৫০ টাকা দিয়েছেন? দরিদ্র পিতার কন্যাকে বিয়ে দিতে সহযোগিতা করেন? এগুলো করা উচিৎ। শুধু নামাজ রোজা আর কোরআন হাদীস পড়লেই হবে না। হৃদয়বান মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে। মানবিক মানুষ হতে হবে।
আধুনিক বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে হবে। টেকনোলোজি সম্পর্কে জানতে হবে। স্কিল বাড়াতে হবে। আধুনিক চিন্তা ভাবনার বই পড়তে হবে। রামায়ন, মহাভারত, ত্রিপিটক, বাইবেল ইত্যাদি গ্রন্থ গুলোও পড়তে হবে। পৃথিবীর সেরা বই গুলো পড়তে হবে। সক্রেটিস কে জানতে হবে, কনফুয়াসকে জানতে হবে, আইনস্টানকে জানতে হবে, রবীন্দ্রনাথকে জানতে হবে। আধুনিক বিশ্বকে জানতে হবে। ইতিহাস জানতে হবে। শুধু কোরআন হাদীস জানলেই হবে- উত্তর দক্ষিন, পূর্ব পশ্চিম সব দিক গুলোই জানতে হবে। সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে, সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে হলে সব কিছুই জানতে হবে। আপনার নিশ্চয়ই অসুখ হলে তাবিজ কবচ নিবেন না। পানিপড়া খাবেন না। সূরা পড়ে ফু দিবেন না। মধু আর কালিজিরা খাবেন না। সঠিক চিকিৎসার জন্য এবং সুস্থ হওয়ার জন্য আপনাকে যেতে হবে একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৪