somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ভাল মানুষ কিভাবে চেনা যায়?

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ বিবিসি বাংলা।

ভাল মানুষ সব সময় হাসি খুশি থাকে।
তাদের মধ্যে কোনো লোভ থাকে না। তাঁরা নিজের পরিবারের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করে। তাঁরা অসহায় ও দরিদ্র মানুষের কথা ভাবে। তাদের জন্য কিছু করতে চেষ্টা করে। ভাল মানুষরা অযথা আড্ডা দেয় না। মন্দ মানুষদের সাথে মিশে না। ভাল মানুষেরা যতটুকু পারে গরীব মানুষদের সাহায্য করে। ভাল মানুষেরা দেশের সমস্যা গুলো নিয়ে ভাবে। সমাধান খুঁজে বের করতে চেষ্টা করে। নারীদের সম্মান করে। ক্ষুধার্থ মানুষকে পেট ভরে ভাত খাইয়ে দেয়। ভাল মানুষেরা গুজবে কান দেয় না। তাঁরা আগেই চিলের পেছনে দৌড়ায় না। তাঁরা নিজের মেধা খাটায়। নিজের বিবেক সব সময় জাগ্রত রাখে। বিবেক জাগ্রত থাকার কারনে তাঁরা অন্যায় করতে পারে না।

ভাল মানুষেরা পৃথিবীর সেরা মুভি গুলো দেখে।
সেরা বই গুলো পড়ে। দেশ বিদেশ ভ্রমন করে। টিভিতে নিউজ শুনে। দৈনিক পত্রিকা পড়ে নিয়মিত। বেকারদের চাকরীর ব্যবস্থা করে দেয়। অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়। ভাল মানুষেরা কথা কম বলে। সময়ের কাজ সময়ে করে। কখনও কোনো কিছু নিয়ে বাহাদুরি করে না। তাদের চলাফেরা সহজ সরল সুন্দর। সবচেয়ে বড় কথা তার 'ভান' জানে না। স্ত্রীর সাথে ভাল আচরন করে। কাউকে নিয়ে উপহাস করে না। ভাল মানুষেরা দালালি করে, চাটুকারিতা করে না। ভাল মানুষেরা সব সময় মানবিক ও হৃদয়বান হয়। সবাই জানে এই দুনিয়া হৃদয়বান মানুষদের জন্য। কৃপণদের কেউ ভালোবাসে না। কৃপণরা এটা বুঝে না- ধন সম্পদ নিয়ে কবরে যাওয়া যাবে না। ব্যাংকে প্রচুর টাকা, আলমারির ভিতর থরে থরে সাজানো টাকার বান্ডিল। সেই টাকা যদি মানুষের কাজে না লাগে তাহলে সেই টাকা মূল্যহীন।

আপনাকে একটা সত্য কথা বলি।
আমি নিজেই একজন ভাল মানুষ। আমি কোনোদিন কারো ক্ষতি করিনি। কারো সাথে ঝগড়া করিনি। মারপিট করিনি। কাজে ফাঁকি দেইনি। জীবনে অসৎ হইনি। রাস্তাঘাটে মেয়েদের দিকে কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে থাকিনি। সমাজের সব শ্রেণীর মানুষকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। আমাদের বাসায় যে মহিলাটি ঘরের কাজে মাকে সাহায্য করে, তাকেও আমি সম্মান করি। রাস্তায় কোনদিন ময়লা ফেলিনি। ময়লাওলা না এলে পনের মিনিট হেঁটে গিয়ে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলে দিয়ে আসি। কেউ বাসার ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে তাকে আমি ঠিকানা খুঁজে পৌঁছে দিয়ে আসি। কাউকে ঠকাই না। অথচ নিজে বারবার ঠকি। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। তাই মানুষ হবে সহজ সরল। জটিল কুটিল নয়। আমি যৌতুক প্রথা ঘৃণা করি। আমার আপন চাচা যৌতুক নিয়েছে বলে, আমি তার বিয়ের অনুষ্ঠানে যাইনি। সেই চাচার সাথে আমি আজও কথা বলি না। আমার আব্বা মারা যাবার পর আমার সেই চাচা বাবার সম্পত্তির ভাগ আমাদের দেয়নি। মামলা করিনি। ঝগড়াও করিনি।

আমার এক মহিলা কলিগ একদিন আমাকে বলেছিলো-
ভাই আপনি একজন আসলেই ভাল মানুষ। শুধু আপনার একটাই দোষ। আপনি সিগারেট খান। সেই কলিগ আমার প্রতি অনেক মায়া দেখিয়েছেন। দুপুরে আমি হোটেলে খেতাম। কিন্তু উনি আমার জন্য বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসতেন। তার হাতের রান্না ভাল ছিলো। তার হাতের গরুর মাংস বা ডাল ভর্তা দারুন হতো। একদিন আপাকে বলেছিলাম- ইলিশ মাছের ভর্তা খেতে কেমন লাগে আপা? পরের দিন আপা আমার জন্য ইলিশ মাছের ভরতা নিয়ে এসেছিলেন। আপা আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। আমাকে ভাই বলে ডাকতেন। আমরা পাশাপাশি বসতাম। আপা আমার কাছ থেকে ভালো ভালো মুভির নাম নিয়ে যেতেন। দেখতেন। এমনকি আপাকে আমি জোর করে অনেক বই পড়িয়েছি। একদিন আপার বিয়ে হয়ে গেলো। উনি চাকরী ছেড়ে দিলেন। এখন আপা মাঝে মাঝে ফোন দেন। উনি এখন তার স্বামীর সাথে চিটাগাং থাকেন। আপার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলের নাম 'সেরা'। মেয়ের নাম- 'রেবতি'।

আমি অবশ্যই ভাল মানুষ। আমি কোনোদিন যুদ্ধ করিনি।
কারো মালামাল লুট করিনি। দাসদাসী রাখিনি। তাদের ভোগ করিনি। অনেক গুলো বিয়ে করিনি। আমি আমার স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নেই না। স্ত্রীর সম্পদ নিজের বলে দাবী করিনি। আমি কাউকে বলি না, তোমার মাথা ভরতি উকুন হয়েছে। তুমি মাথার চুল ফেলে দাও। রোজা রাখো। বরকি কোরবানী দাও। আমি মানুষকে সব সময় ভাল পরামর্শ দেই। কুসংস্কার থেকে দূরে থাকতে বলি। পড়ালেখা করতে বলি। কবরের আযাব নিয়ে তাদের চিন্তা করতে মানা করি। জ্ঞানী লোকদের ইতিহাস জানতে বলি। আমি ছেলেমেয়েদের বলি- নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলো। আধুনিক টেকনোলোজি সম্পর্কে জানো। জ্ঞানের চর্চা করো। মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে 'জ্ঞান'। জ্ঞান অর্জন করো আর প্রজ্ঞাবান হও। আমল করে কিছু পাবে না। নেকী, ফজিলত, সোয়াব ইত্যাদি শব্দ গুলো ভুলে যাও। কোরআন আর হাদিসের বাইরেও অসংখ্য ভাল ভাল বই আছে। সেগুলো পড়ো।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার শিশুদের উদ্দেশ্যে - আমরা তোমাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


তোমরা এসেছিলে মাথার উপর বোমা পড়ার ভয়ার্ত গল্প নিয়ে। যে বোমা তোমাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে, লোকালয় ধ্বংস করেছে। আমরা কান বন্ধ করে উদাসীন হয়ে বসে ছিলাম। তোমরা এসেছিলে ছররা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবিতে গণতন্ত্রের নামে মবতন্ত্র

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১০



তথাকথিত গণতন্ত্রকামীদের পীর আল্লামা পিনাকী এবং ছোট হুজুর ইলিয়াস মোল্লার উস্কানীতে দেশজুড়ে চলছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে মবতন্ত্র। আল্লামা পিংকুর যুক্তি হচ্ছে- যে বা যারাই তাদের (গণতন্ত্রকামীদের) সূরে কথা না... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×