somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতি রোমন্থন-৩

২৫ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরারচর নামার পর আমরা রিক্সা নিতাম বাড়ীর উদ্দ্যেশে। গ্রামের নাম ওসমানপুর। ভাড়া ২০ টাকা। আমি বসতাম বাবার কোলে, আমার বোন বসতো মার কোলে। রাস্তার ৩ ভাগের ১ ভাগ ছিল কাচাঁ মাটির রাস্তা। বাড়ী যাবার পথে রাস্তার দুপাশে পড়ত আগুন জ্বলা শিমুল ফুল গাছ, একাধিক ইটের ভাঁটা, একটা শ্মশান, পাট আর আখের ক্ষেত। একটা বড় ব্রিজ ছিল যেখানে আমাদের সবার নামতে হত, রিক্সা ঠেলে উঠাতে হতো। পথ যেন আর শেষই হতে চাইতো না। আমরা ২ ভাই বোন শত প্রশ্ন করতাম বাবা কে, আর কত দুর ঠাম্মার বাড়ী? আমাদের বাড়ীর নাম ছিল বাবুর বাড়ী। আশেপাশের সবাই চিনত এক নামে। রিক্সাউয়ালারা এই নাম বললেই চিনত, কারণ আমাদের বাড়ী ছিল অত্র এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় বাড়ী। কাচাঁ রাস্তায় আমাদের রিক্সা ঢুকলেই আশেপাশের বাড়ীর সবাই কুশলাদি জানতে চাইতো, কতদিন থাকবো, কেমন আছি এই সব। তখনকার অধিকাংশ বাড়ীগুলোতে বাশঁঝাড় ছিল। দিনের বেলাতেই কেমন গা ছমছম করতো। রাতে বের হবার তো প্রশ্নই উঠেনা। আমাদের গ্রামে তখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছায় নি। যাকে বলে সভ্যতা বিবর্জিত এলাকা।

রিক্সা বাড়ীর দুয়ারে পৌঁছানো মাত্রই আমার কাজ ছিল দৌড়ে গিয়ে ঠাকুরমার কোলে উঠে পরা। আর প্রতিবারই ঠাকুর মা বলত, " আমার মানিকটা কত বড় হয়ে গেছে "। আমি ঐ মূহুর্তে নিজেকে অনেক বড় ভাবতে শুরু করতাম এবং কোল থেকে নেমে পড়তাম। দ্বিতীয় কাজ ছিল সারাবাড়ী এক দৌড়ে ঘুড়ে দেখে আসা, সব ঠিকঠাক আছে কিনা।

আমাদের ২টা গরু ছিল। কাল একটা গরু দুধ দিত। গরুর খাবারের জন্য রাখা খড়ের গাদা ছিল আমার খেলার সামগ্রীগুলোর মধ্যে অন্যতম। এরি মধ্যে পাশের শেখবাড়ির ওসমান চলে আসতো আমার কুশলাদি জানতে। শহড়ের চাকচিক্য দেখে প্রথমে একটু হকচকিয়ে গেলেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে আমার সাথে মিশে যায় সে। তারপর আমার দাদু কে গিয়ে প্রনাম করতাম সাথে আব্দার দোলনা ঝুলিয়ে দেবার, কারণ গরু দেখাশুনা করত দাদু আর দোলনা ঝুলানোর আবশ্যক উপাদান গরু বাঁধার দড়ি পাওয়া যেতনা তার এপ্রোভাল ছাড়া ! শেষ পর্যন্ত দাদুকে রাজি কারানো যেত সহজেই, উনি আমাদের অনের আদর করতো। তাঁর কাছেই প্রথম আমরা শিখেছি, ডোনট ঊচ্চারণটা ভুল, শুদ্ধটা হবে ডুনট। ঊনি বলতো ঊনি নাকি এন্ট্রান্স পাশ। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানেও বুঝতে পারতাম দাদু অনেক জানে। আজও বুঝতে পারি না, সভ্যতা বিবর্জিত এক গ্রামে নিভৃত এক মানুষ আজ থেকে ২০ বছর আগে শুধু অন্যের জন্য নিজের সারাটা জীবন পাড় করে দিল কিভাবে কিছুই না করে বোনের সেবা শুশ্রুষায়?

আমার ঠাকুরমা বিধবা ছিলেন। ঠাকুর দাদা মারা গিয়েছে আমার বাবার বয়স যখন ১৮ বছর। আমার বাবা তখন থেকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। বাবা যখনি সময় পেত আমাদের শিখাত যে তোমার ৫ পূর্ব পুরুষের নাম মনে রাখার চেষ্টা করবে। কারণ আমার ঠাকুর দাদা আমার বাবাকে ৫ পুরুষের নাম শিখিয়ে গেছেন। সেই হিসাবে আমি জানি ৭ পুরুষের নাম। আমার থেকে শুরু করলে নাম গুলো হয়:

১। রাজীব মিত্র
২। অসিত মিত্র
৩। হেরম্ব মোহন মিত্র
৪। পিয়ারি মোহন মিত্র
৫। দেবপ্রসাদ মিত্র
৬। মহেশ মিত্র
৭। রামকানাই মিত্র


আমি ও চাই আমার পূর্ব পুরুষদের স্মৃতি ধরে রাখতে, অন্তত নাম গুলো মনে রাখতে। এক দিন আমর%
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×