সম্ভাব্য প্রকাশকালঃ ২০২১সাল
প্রাথমিক রিয়্যাকশনঃ বিশ্বের কয়কটি দেশে সাময়িক নিষিদ্ধ
বক্স অফিসঃ সুপারহিট
পুরস্কারঃ হরর ক্যটাগরিতে অস্কার সহ অন্যান্য।
১ম দৃশ্যঃ
Norwegian Nobel Institute, অসলো, নরওয়... বিকাল ৪টা..
কেসি পলিন, নোবেল শান্তি কমিটির ডেপুটি চেয়ার, উদ্বিগ্ন হয়ে বসে আছেন।
কেন যেন তার ভালো লাগছে না। হাতে সময় নেই একদম। ফাইনাল ড্রাফট দেখতে হবে। কমিটির প্রধান উইলিয়াম জগল্যান্ড তিন সপ্তাহ অফিসে আসছেন না। এত বড় একজন মানুষ কাজে অবহেলা করবেন না। এর আগে কোনদিন এমন হয় নি। নিশ্চই কোন কাজে ব্যাস্ত হয়েছেন। পলিন ল্যাপিতে নজর দিলেন। কি এক অদ্ভুত কারনে এটি কাজ করছে না। বিরক্ত হয়ে তিনি বাথরুমে গেলেন.।.।
আয়নায় তাকিয়ে নিজের চেহারা দেখলেন বয়সের ছাপ বেশ বোঝা যাচ্ছে...। বয়স পঁয়ষট্টি তার। মুখে পানি দিয়ে চোখ খুলতেই তিনি চিৎকার করে বেহুঁশ হয়ে গেলেন.।.। আয়নায় তিনি দেখেছিলেন রক্তাক্ত একচোখ বের হওয়া বীভৎস চেহারা.।.।.।
২য় দৃশ্যঃ
U.S. Embassy, অসলো, নরওয়ে। রাত ৯টা
রোজ এন্ডারসন বসে আছেন ব্রিচ গাছের ওপরে, একদম মগডালে। খুব ভালো লাগছে তার। গাছের হলুদ পাতার আড়ালে নিজেকে তার পাখি মনে হচ্ছে। বিরক্ত লাগছে তার ব্যাগটা নিয়ে। সেটি গাছে ওঠার সময় ডালে আটকে যায়। বিরক্তির কারণ ব্যাগের ভেতরে থাকা মোবাইল। চার ঘন্টা সে গাছে বসে আছে মাঝে মাঝেই সেটি বেজে উঠছে। নিচের কয়েকটি ডাল নামলেই ব্যাগটা ঝুলে রয়েছে। রোজের ইচ্ছে করছে লাথি দিয়ে সেটা নিচে ফেলে দেয় কিন্তু ডালে বসে থাকতেই তার ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে অনন্তকাল তিনি এই গাছে বসে থাকার জন্য জন্ম নিয়েছেন.।.।
৩য় দৃশ্যঃ
কেসি পলিনের চেতনা ফিরে এলো। তিনি বুঝতে পারছেন না কোথায় আছেন। হঠাৎ সৎবিৎ ফিরে এলেই তিনি উঠে বসতে যেয়ে আঁতকে উঠলেন। প্রচণ্ড ব্যাথা পেয়েছেন কোমরে। ধরে ধরে দাঁড়ালেন। হাত ঘড়িতে সময় দেখলেন রাত ৯টা ১০। বাথরুম থেকে বের হয়ে অবাক হয়ে গেলেন ছয় ঘণ্টা তিনি অচেতন অথচ কেউ তার খোঁজ নিল না। মোবাইলটা নিয়ে কল চেক করতে যেয়ে আরও অবাক হলেন। কেউ কোন কল দেয় নি তাকে। কিন্তু পাঁচটায় তার মিটিং ছিল রোজ এন্ডারসনের সাথে, মনোনয়নগুলো নিয়ে। সেও কোন খোঁজ নিল না! পলিন তার পিএস কে ফোন দিতে যেয়ে আবিষ্কার করলেন তার মোবাইলে কোন নেটওয়ার্ক নেই। দরজা খুলতে যেয়ে আবিষ্কার করলেন সেটি বাহির থেকে লক করা।
ইমার্জেন্সি বেল বাজিয়ে তিনি বের হলেন। দ্রুত তার এপিএস এসে তার দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে থেকে শুধু একটাই প্রশ্ন করলো ম্যাম আপনি রুমের ভেতরে গেলেন কি করে। আমি নিজে আপনাকে লিফটে পৌঁছে দিয়েছিলাম। পলিন কিছু বলল না। অনেক ঝাক্কি গেছে আজ। দ্রুত বারি পৌঁছান দরকার। রওনা দেয়ার দশ মিনিটের মধ্যে ফোন এল তাকে দ্রুত তার অফিসের পাশে ইউএস এম্ব্যাসিতে আসার জন্য অনুরোধ করছেন তার পিএস। দ্রুত তিনি সেখানে গেলেন। যা দেখলেন, তাতে তার স্ট্রোক হওয়ার মত অবস্থা.।.।.।
নোবেল শান্তি কমিটির অন্যতম সদস্য রোজ এন্ডারসন অফিসের পাশের ব্লকে ইউএস এম্ব্যাসির ভেতর একটি ব্রিচ গাছের মগডালে বসে পা দুলিয়ে দুলিয়ে চিৎকার করে কিসব বলছেন। নিরাপত্তা এবং ফায়ার ডিফেন্সের লোকজন অনেক চেষ্টা করেও তার কাছে যেতে পারলেন না। পলিন বুঝতে পারছেন না তার বয়সী একজন মহিলা এত বড় গাছে, এত উপরে উঠলেন কি করে??
৪র্থ দৃশ্যঃ
সারা রাত উদ্ভট সব স্বপ্ন দেখেই তার ঘুম ভাঙল পলিনের। পিএস কে ফোন দিয়ে তিনি রোজ এর খবর নিলেন। রোজ কে গাছ থেকে কেউ নামাতে পারেনি। কারণ তিনি বিপদজ্জনক জায়গায় বসে ছিলেন কেউ তার কাছে গেলেই তিনি অভিশাপ দিচ্ছিলেন এবং মহা শক্তি দিয়ে অত বড় ব্রিচ গাছ নাড়াচ্ছিলেন। রাত তিনটার সময় তিনি নিজেই নেমে যান। এবং স্বাভাবিক ভাবে সবাইকে জিজ্ঞেস করেন কেন এসেছে সবাই? তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় আপনি ওখানে কি করছিলেন? রোজ সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলেন। আমি স্যার আলফ্রেড নোবেলের সাথে ওখানে গল্প করছিলাম। তিনিই তো আমাকে ব্রিচগাছে চড়িয়েছেন। রোজ কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
৫ম দ্রশ্যঃ
নোবেল শান্তি কমিটি প্রধানের বাসভবন, বিসলেট, অসলো, নরওয়ে।
পলিন হাসপাতালে রোজকে দেখে ছুটে এলেন কমিটি প্রধান উইলিয়াম জগল্যান্ড -এর বাসায়। এসে তিনি অবাক হয়ে গেলেন উইলিয়াম এর অবস্থা দেখে। উইলিয়াম বসে বসে কাগজ খাচ্ছেন আর ঘর বারি জুড়ে দেয়ালে, মেঝেতে সবখানে আলফ্রেড নোবেলের ছবি আঁকছেন। এবং তিনি সম্পুর্ন উলঙ্গ। পলিন দ্রুত পুলিশ কে ফোন দিলেন।
৬ষ্ঠ দৃশ্যঃ
সারা সহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে গেল। ইউএস এম্ব্যাসি সেখান থেকে তাদের অফিস সরিয়ে নিচ্ছে। কারণ নরোজিয়ান নোবেল ইন্সটিটিউট একটা আতংকের নাম। এর আশেপাশে কেউ গেলে তারা অস্বাভাবিক আচরন করছে। দূর থেকে দেখা যায় রাতের বেলা কেউ এই বিল্ডিঙের উপর হেঁটে বেড়াচ্ছে। দেখতে অনেকটা স্যার আলফ্রেড নোবেলের মত। নোবেল কমিটির পাঁচ সদস্যের দুইজন অস্বাভাবিক এবং প্রলাপ বকছে। একজন এক্সিডেন্টে মারা গেছেন। আরেকজন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
৭ম দৃশ্যঃ
পলিন ঘুমাতে পারছে না। কারণ ঘুমালেই সে স্যার আলফ্রেড নোবেল কে স্বপ্ন দেখছেন। তিনি কিছু একটা বলছেন। পলিন তার ভাষা বুঝছেন কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? নোবেল তাকে শান্তি পুরস্কার ঘোষণা দিতে নিষেধ করছেন। হুমকি দিচ্ছেন নাহলে তাকেও অন্যদের মত শাস্তি পেতে হবে।
পলিন বুঝতে পারছেন না কি করবেন। এর মাঝে তার ফোন এল। অফিস থেকে সিকিউরিটি ফোন করেছে। তার অফিসে আগুন লেগেছে। কাগজপত্র সহ কম্পিউটারের সার্ভার পুরে গেছে। সিকিউরিটি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে পলিনের মত দেখতে কেউ একজন সবখানে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু চেহারা স্পষ্ট নয়। পলিন ফোন রেখে দিল বুকের বাম পাশে প্রচণ্ড ব্যাথা করছে তার.।.।.।
৮ম দৃশ্যঃ
Oslo City Hall, অসলো, নরওয়ে।
পলিন দারিয়ে আছে। অসংখ্য ক্যামেরা এবং বিশ্বের মিডিয়াপারসন তার সামনে। সবাই তার কথা শুনবে। কতদিন সে এই স্বপ্নটা দেখেছে। প্রধানের মত সে ঘোষণা করবে শান্তি লরিয়েটের নাম। পলিন গলাটা হাল্কা শুধরে নিয়ে তার বক্তব্য শুরু করলো। কিন্তু নোবেল লরিয়েটের নাম ঘোষণা করতে যাওয়ার আগেই সে পড়ে গেল.।.।.।
পলিন হাসপাতাল থেকে ফিরে এলো চার বছর পর। এই চার বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় নি। পলিন ভাবল তাকে শুরু করতে হবে নতুন করে.।.।.।.। কি আছে এই রহস্যের পিছনে তাকে জানতেই হবে.।.।.।.।.।.।.। To be continued..............