somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবা, তোমার কি অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠিক যে অবস্থায় আমি এখন আছি, সেই অবস্থায় এসব লেখালেখির মানে হয় না। এসব লেখা হয়তো উচিত ও না। আমার এখন উচিত একজন আদর্শ বড় বোনের মত আমাদের ছোট ভাই বোনগুলোকে সাহস দেওয়া। মা কে বোঝানো।সবাইকে বলা যে কিচ্ছু হয়নি, সব ঠিক হয়ে যাবে। এখন কেব্ল সময়ের ব্যাপার। বাবা ভালো হয়ে ঘরে এলেন বলে! কিন্তু জানি না কি এক অদ্ভুত কারনে আজকাল এদের কারো সামনে পড়তে ইচ্ছে করে না। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে নিরলিপ্তের মত বসে থাকি কিংবা অভিনয় করি কিছুই আমার কানে যাচ্ছে না। প্রতিদিনের অজস্র ফোন কলগুলো নিতান্তই আবেগহীন অপারেটরের মত রিসিভ করে যাই।

সে যাই হোক। আজ আমার বাবার জন্মদিন। আসলে আজ না। কত কাল ছিল আমার বাবার জন্মদিন। নাহ, এবার আমরা বাবাকে কোন গিফট দেই নি। অফিসে ফোন করে বাবাকে জালাই নি। মা বাসায় একটা কেইক বানিয়ে লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে বাবার জন্য অপেক্ষাও করেন নি। আমাদের আজকের দিন কেটেছে হসপিটালে। ভোর থেকে রাত অবধি বাবার চিন্তায়। আরও ভালো করে বললেই বাবার জীবনের চিন্তায়।বাবা আইসিইউ তে আছেন আজ ২২ দিন হোল। আজ সকাল ৬ টায় ডাক্টার বলল বাবার মাথায় তারা আরেক দফা অপারেশন করতে চায়। মাত্র ২ সপ্তা আগের অপারেশনের ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছেন কিনা সেটাই আমরা জানি না। এর মধ্যেই আরেকটা করার অনুমতি দিতে হবে আমাদের। পায়ের তলার মাটি একটু একটু করে যেনও নরম হয়ে যায় এসব কথা শুনলে। নিজের জীবনের তুচ্ছ তুচ্ছ সিদ্ধান্ত কোন দিন নিজে নিতে পারিনা যেখানে সেখানে আজকে আমার বাবার বাচা মরার সিদ্ধান্ত নেবার ভার এসে পরেছে। সারাক্ষন শুধু একটাই চিন্তা আমি আমার বাবাকে কষ্ট দিচ্ছি নাতো!


আমার বাবা এমন এক মানুষ যিনি তার মেয়েদেরকে একটা ফুলেও টোকাও দেন নি। আজ সেই মানুশটার মাথার খুলি আলাদা করে রাখা। পুরো মাথার শুধু চামড়াটুকু সেলাই করে রাখা। যাও একটা হাত নাড়তে পারেন, সেই হাতটাও বেঁধে রাখা যেনও তিনি মাথায় হাত দিতে না পারেন। আজ না পেরে, একটুক্ষনের জন্য হাত খুলে দিয়েছিলাম, তেমন কিছু না বুঝলেও হাতটা যেভাবে মাথার উপর নিয়েছেন বুঝতে পারছিলাম কি ভয়ানক কষ্ট তিনি পাচ্ছেন।

মানুশটা কথা বলতে পারছেন না। আমাদের কাউকে চিনেন ও না। আমরা তো কথা বলেও কাউকে কিছু বঝাতে না পারলে কত বিরক্ত হই।আর এই মানুশটা এক দিকে আমরা বুজচ্ছিনা সে জন্য কষ্ট পাচ্ছেন, আরেকদিকে নিজে বঝাতে পারছেন না সেজন্য নিজের উপর রাগ করছেন। মানুশটা এতটাই অসহায় যে নিজে নিজে পাশটুকুও ফিরতে পারছেন না।

আমার বাবাটা স্ট্রোক হবার আগের রাতেও আমাকে আদর করেছেন, ভাত খাইয়ে দিয়েছেন। আমরা যেনও আরাম করে স্কুল কলেজে যেতে পারি সেজন্য আমাদেরকে গাড়ি দিয়ে নিজে বাসে ঝুলেছেন। এই মানুশটার জন্য আমি আজ কিছুই করতে পারছি না। কিচ্ছু না। আমরা মানুষরা এতো অসহায় কেন?? আমাদের কিচ্ছু করার নেই?? ডাক্তারদেরকে যে বিশ্বাস করবো তাও পারিনা, তাদের হাতে যেনও স্রেফ জিম্মি হয়ে আছি।

আপনারা সবাই আমার বাবার এই জন্মদিনে দোয়া করবেন আল্লাহ যেনও তার সব কিছু দিয়ে সুস্থ ভাবে, খুব তাড়াতাড়ি আমাদের বাবাকে আমার বাসায় ফিরিয়ে দেন। বাবাকে ছাড়া বাসাটা যে ভীষণ শুন্য লাগে।

আর বাবা আমি এখনো এতো বড় হইনি যে এতো বড় বড় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। এসব আমার কাজ না। তাড়াতাড়ি বাসায় আসো তো!!

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৩৭
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×