somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্ট্রোক সম্পর্কে কিছু ধারনা, যা আমাদের থাকা উচিত!

১২ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্ট্রোক, আজকাল আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি ব্যাধি। আরেকটু ভালো ভাবে বললে এখন সম্ভবত এমন কোন পরিবার পাওয়া যাবে না যেখানে স্ট্রোকের ইতিহাস নেই। সধারনত আমরা ধরে নেই এটা বয়স্কদের সমস্যা কিন্তু সত্যটা হোল ৭৫ বছরের একজনের যেমন স্ট্রোক হতে পারে, তেমনি একজন ৫৬ বছর বা ১৭ বছরের কিশোর/কিশরির ও স্ট্রোক হতে পারে।

এবার দেখি আসলে স্ট্রোক বিষয়টা কি?

খুব সাধারন ভাবে বললে মস্তিষ্কের কাজ কর্মের বিঘ্ন ঘটাই স্ট্রোক।ব্রেইনের কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওাই হলো স্ট্রোক। স্ট্রোকের ফলে শরীরের একদিক বা সম্পূর্ণ শরীর অবশ হয়ে যাওয়া, স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়া, কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া, শরীরের অংশ বিশেষ দুর্বল হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

স্ট্রোক দুই ভাবে হতে পারে,

১- মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরন হয়ে (হেমেরোজিক)
২- মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে, বন্ধ হওয়া সেলগুলো পচে গিয়ে।(ইস্কিমিক স্ট্রোক)সাধারণত ৮৭ ভাগ স্ত্রোকের কারন এটাই।
স্ট্রোকের কারন


কিভাবে বুঝবেন স্ট্রোক হয়েছে?


এটা আসলে একটা কঠিন প্রশ্ন।কারন স্ট্রোক বলে কয়ে আসে না। জিনিসটা হটাত করেই হয়ে যায়। স্ট্রোকের রোগির কিছু জিনিস লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে কোন কিছু অস্বাভাবি্ক কিনা। অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা মাত্র তাকে নিয়ে ভালো ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। অনেক সময় একটু দেরির কারনে জীবন ও চলে যেতে পারে।
নিচের কোন একটিও যদি আপনারা কারো মধ্যে লক্ষ্য করেন তাকে নিয়ে সোজা ডাক্তারের কাছে চলে যাবেন--
১- হাসার সময় ঠোঁট বাকা লাগ্লে বা একদিকে ঝুলে গেলে,
২--পানি পানের সময় পানি ঠোঁটের পাশ দিয়ে গড়িয়ে পড়লে
৩---দুই হাত একসাথে করে সোজা করে ওঠাতে বললে তখন সমান ভাবে উ্ঠাতে না পারলে,
৪----কথায় জড়তা বা ততলামি লক্ষ্য করলে,
৫-----কানে কম শুঞ্ছেন,অথবা চোখে কম দেখছেন মনে হলে,
৬-----হঠাত করে পড়ে গেলে।

এছাড়া সম্পূর্ণ শরীর অবশ হয়ে গেলে, রোগি কথা না বললে, পড়ে গিয়ে কোন রেসপন্স না করলে।


স্ট্রোকের রিস্ক ফ্যাক্টর

স্ট্রোকের রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোকে সাধারনত দুই ভাগে ভাগ করা যায়,
১-জেগুলো নিয়ন্ত্রন করা যায়।
এই লিস্টে যেসব বিষয় আছে তার মধ্যে উল্লেখ্য হোল, উচ্চরক্ত চাপ, দুশ্চিন্তা, অ্যালকোহল পান, নিকতিনের আসক্তি, জরদা- তামাক পাতা সেবন, ডায়বেটিক, আগের কোন সার্জারি, কোলস্ত্রলের উপস্থিতি, স্থূলতা, কায়িক পরিস্রমের অভাব, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস।

২-যেগুলো সাধারনত নিয়ন্ত্রনে থাকে না।
এক্ষেত্রে বয়স, লিঙ্গ, পারিবারিক ইতিহাসটা অনেক বেশি প্রভাব বিস্তারক।


স্ট্রোক হলে কি করবেন?

প্রথম কাজ একটু ও না ঘাব্রিয়ে, উত্তেজিত না হয়ে রোগিকে বসাবেন।

যত দ্রুত সম্ভব ভালো নিউরোলজিস্টের কাছে নিয়ে যাবেন। বাংলাদেশের জন্য শমরিতার দিন মোহাম্মাদ, এবং পিজির প্রায় সব নিউরলগজিস্ট বেশ নাম করা। দ্বীন মোহাম্মাদ খুব সম্ভব পপুলারেও বসেন।এপোলো, ল্যাব এইডের নিউরোলজিস্টের নাম ও বেশ শুনেছি।(এটা সম্পূর্ণ আমার বেক্তিগত মতামত। এর উপর ভিত্ত করে কেউ কোন সিদ্ধান্ত নিলে আমি দায়ি হব না)

বাসায় সব সময় কিছু অতিরিক্ত অর্থ রাখবেন, কারন যদি কোন বড় ছুটির মধ্যে কিছু হয় (আল্লাহ মাফ করুক) তখন যেনও অর্থের অভাবে কোন কাজ আটকে না থাকে।

গাড়ি চালাতে পারে এমন আত্মীয় স্বজনের নাম্বার জোগাড় করে রাখুন। কারন অবস্থা খুব সিরিয়াস হলে রোগিকে গাড়ি ছাড়া নেওয়া খুব কঠিন।

ডাক্তারের উপর আস্থা রাখার সাথে সাথে পরিচিত কোন ডাক্তারের সাথে কথা বলা। সম্ভব হলে হসপিটালে একটা প্রেসার তৈরি করা জাতে সঠিক চিকিৎসা হয়। বাংলাদেশে এছাড়া রোগীর চিকিৎসা করান খুব কঠিন।


পরিশেষে বলবো, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ডাক্তারের করার খুব বেশি কিছু থাকেনা যেমন টা থাকে হার্ট অ্যাটাকের সময়। তখন হার্ট এর ব্লক ছুটান বা অন্য উপায়ে হার্টকে অনেক টাই আগের মত করা যায়। কিন্তু স্ত্রকে এমন কিছু করা যায় না। এটা সাধারণত অনেক লম্বা সময়ের, মোটামুটি ভালই বেয়বহুল চিকিতসার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। স্ট্রোকের পর পরিবারের সবাইকে খুব সাপরটিভ হতে হয়। ধৈর্য, অদ্ধাবসায় আর নিয়মিত ফিজিয়থেরাপি দিয়ে রোগিকে অনেক খানি ঠিক করা যায়। কিন্তু এটা ও ঠিক অনেক ক্ষেত্র রগি হয়তো ১০০% ঠিক না ও হতে পারে।তাই সময় থাকতে নিজের যত্ন নিন। যেসব জিনিস আভয়েড করলে ভালো থাকা যায় সেসব জিনিস কিজে মানুন, অন্যকে জানান।


মনে প্রানে চাইবো, এই পোষ্টের প্রয়োজন যেনও আপনার কোন দিন না হয়।


stroke



সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৮:৫২
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×