somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিতালীর কদম তলায় বর্ষবরণ'১৪২৩ বঙ্গাব্দ

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এসো হে বৈশাখ এসো এসো,
তাপস নিশ্বস বায়ে,
মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।
এসো, এসো হে বৈশাখ এসো এসো
চিরায়ত এই আহ্বানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো পহেলা বৈশাখ।
বাংলা নববর্ষ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ।

প্রতিবারের ন্যায় এবারও মিতালী বিদ্যাপিঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে মিতালীর কদম তলায় নববর্ষ বরণ ১৪২৩ উদযাপিত হল।
শুরুতেই কোরআন তেলওয়াত করলেন বিদ্যাপিঠের সিনিয়র শিক্ষক জনাব মোশাররফ হোসেন চৌধুরী।



তৎপর জাতীয় সঙ্গীত :



এর পরপরই কবি গুরুর আহ্বান
এসো হে বৈশাখ এসো এসো..... সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হলো বর্ষবরণের সূচনা।


সঙ্গীত ... ....


আবৃতি আর মিষ্টি কোলাহলে ভরে গেল পুরো বিদ্যাপিঠ প্রাঙ্গন :


আবৃতি করলেন শিক্ষক সুদীপ রঞ্জন মন্ডল :


উপস্থাপিকা আশা ও কম নন, তিনি তার কথা আর সূর দিয়ে সবাইকে মোহিত করে রাখলেন।


দর্শক মাঝে উৎসবের আমেজ


মিতালীর কদম তলায় দর্শক সারিতে রয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অন্যতম অভিভাবক সদস্য জনাব মোঃ মিজান উল হক খোকন ও মিসেস সেলিনা আক্তার, প্রধান শিক্ষক মিসেস রফিকা রহমান, সহকারী প্রধান শিক্ষক মিসেস শাহীন আরা নাসরীন, প্রাাথমিক শাখার কো-অর্ডিনেটর মিসেস মাহবুবা আক্তার, শিক্ষক প্রতিনিধি জনাব ফরিদ আহমেদ সহ বিদ্যাপিঠের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্র-ছাত্রীদ্বয়।



এরই মাঝে দর্শকদের মাঝে মিষ্টি মুখ করন অভিযান। মেঠো বাংলার আদি খাদ্য উপাদান বাতাসা, নাড়ু, মুরকি, আরো কতকি ! বিতরন করা হলো :


অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে উপস্থিত হলেন গোপীবাগ প্রতিবেশী পরিষদের সম্মানিত যুগ্ম-সম্পাদক জনাব শেখ গোলাম আহমেদ :


এদিকে অনুষ্ঠানটি আরো প্রাণবন্ত ও স্বরনীয় রাখার জন্য ফ্রেমবন্ধী করার আকুল প্রয়াস :


শিক্ষকদের সম্মিলিত ফটোবন্ধীত্ব বরন :


ফটোসেশনের কয়েকটি মুহুর্ত :



বৈশাখী ফটো ট্রেন :


বিদ্যাপিঠের প্রাণপুরুষ, আমাদের সকলের গণি ভাই সহ অভিভাবক সদস্য মিজান উল হক :



যার কৃতিত্বে এ অনুষ্ঠানটি স্বরনীয় ও ফ্রেমবন্দী হয়ে থাকবে যুগ-যুগান্তর, সেই তরুন ফটোগ্রাফার জনাব রবিন :



মিতালী বিদ্যাপিঠ যাদের সহযোগিতায় সব সময় এগিয়ে যায়, নুরুআনোয়ার :


বিদ্যাপিঠের ছাত্রী :



কিছু ইতিকথা :

মোঘল সম্রাট আকবরের হাত ধরে বাংলা সনের পথচলা। বাংলা সন প্রবর্তনের পিছনে প্রধানত দুটি কারণ পরিলক্ষিত হয়।
প্রথমতঃ আকবরের শাসনকার্য হিজরী সন অনুযায়ী পরিচালিত হত। এতে খাজনা আদায়ে অসুবিধার সৃষ্টি হত। কারণ চান্দ্রবর্ষ প্রতি বছর ১০/১১ দিন এগিয়ে যায়। এতে করে যুগ পরিক্রমায় আরবী মাসগুলো সব ঋতুতেই আসে। সূর্যের সাথে সৌরবর্ষের হিসাব থাকায় দিন-মাস-ঋতুর গণনা সব সময় একই থাকে। শস্য উৎপাদন ও খাজনা আদায়ের সমন্বয় সাধনের জন্য সম্রাট আকবর সৌরবর্ষের হিসাবে বাংলা সালের প্রবর্তন করেন।

আকবরের আদেশে ১৫৮৫ খৃষ্টাব্দ মোতাবেক ৯৯২ হিজরীতে ফসলী সন বা বাংলা সনের ফরমান জারী হয়। ৯৯২ হিজরীতে আদেশ জারী করলেও ৯৬৩ হিজরীতে আকবরের সিংহাসন আরোহণের সাল থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। ৯৬৩ সালে বাংলা ও হিজরী সাল একই ছিল। অতঃপর হিজরী সাল প্রতি বছর ১০/১১ দিন এগিয়ে যাওয়ায় ফলে, এখন বাংলা ১৪২৩ আর আরবী ১৪৩৭।

সম্রাট আকবরের নির্দেশে বাংলা সনের ক্যালেন্ডার প্রস্ত্তত করেন তৎকালীন পন্ডিত, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেহ উল্লাহ সিরাজী।

পুনশ্চঃ সম্রাট আকবর, রাজা শশাংক, সুলতান হোসেন শাহ, তিব্বতিয় রাজা স্রংসন- বাংলা সনের প্রবর্তক হিসাবে জানা যায় । কিন্তু বেশীর ভাগ ঐতিহাসিকদের মতে সম্রাট আকবর'ই নব বর্ষের প্রবর্তক বলে গন্য ও বিবেচিত।

বৈশাখী উৎসবের ইতিবৃত্ত :

সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। চৈত্রের শেষ দিনে বঙ্গের জমিদারদের নিকট প্রজারা তাদের সকল খাজনা, মাশুল, শুল্ক পরিশোধ করত। পরদিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ তারা উৎসবের আয়োজন করত। মূলতঃ তাদের এদিনের প্রধান কাজ ছিল একটি হালখাতা তৈরী করা। হালখাতা মানে বর্তমান খাতা বা নতুন হিসাব বহি। অর্থাৎ নতুন বছরের যাবতীয় হিসাব নতুন করে শুরু করার খাতা। এটা হল পহেলা বৈশাখ উদযাপনের সংক্ষিপ্ত প্রচলিত ইতিহাস।

তবে বাংলাদেশে- বার্ষিক মেলা, হালখাতা, বলীখেলা, লাঠি খেলা, ষাড়ের দৌড়, গরুর দৌড়, মোরগের লড়াই, হাডুডু খেলা ইত্যাদি উৎযাপনের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ পালনের ইতিহাস লক্ষ্য করা যায় ।

পরিশেষে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই কাব্যিক কথন :

নিশি অবসান প্রায় ঐ পুরাতন বর্ষ হয় গত,
আমি আজি ধূলিতলে জীর্ণ জীবন করিলাম নত।
বন্ধু হও শত্রু হও যেখানে যে রও, ক্ষমা কর আজিকার মত,
পুরাতন বরষের সাথে পুরাতন অপরাধ যত।

শুভ নববর্ষ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×