-সকালে দেখা করতে পারবা ??
-হুম ..কখন?
-এইতো সকাল ৭টায় আমার একটা পড়া আছে তারপরে তুমি কলেজে আসিও প্লিজ
-মাইরালচে!
-কেনো কি হইছো গো !
-কি হয়নাই বলো ! এতো ভোরে লাস্ট কবে ঘুম থেকে উঠছি আমার মনে পড়েনা আর তুমি বলো কিনা এই ঠান্ডায় বিছানা থেকে উঠে কলেজে যাইতে !
-হুম.. জানিতো সেটা বাট তুমি আমার জন্য এইটুকু করতে পারবা না বাবু :-(প্লিজ প্লিজ
-আমি উঠতে পারিনা !
- ওকে আমি তোমাকে ঘুম থেকে তুলে দিবো বাবু
-অকা ঠিকাচ্ছে বেইবি ;-)
-উম্মা ..আমার বাবুতা গুলুগুলু । ওকে এখন ঘুমিয়ে পরো আমি সকালে তুলে দিবো ।
-অকা । টাটা গুডনাইট বেইবি
কথা শেষ করে ছেলেটা ভাবতে থাকে মেয়েটাকে কালকে চমকে দিতে হবে একা একা ঘুম থেকে উঠে ।তাই ফোনটা নিয়ে সাড়ে ছয়টায় এর্লাম দিয়ে রাখে । কিন্তু দেখা করার উত্তেজনায় রাতে ঘুম হয়না । শেষ রাতে ঘুমিয়ে পড়ে ছেলেটা । সকাল হতেই এর্লামের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় ছেলেটার তারপর কম্বলের নিচ থেকেই তার একটা বন্ধুকে ফোন দেয়
-হ্যালো
-পড়া কয়টায় রে?
-মামা আমিতো টাশকির উপ্রে আছি
-ক্যান কি হইছে?
-কি হয়নাই কও ব্যাটা..তুমি আম্মে এতো সকালে ফোন দিছো আবার জিগাও পড়া কয়টায় আমিতো ধন্য হই গেলাম রে
-ফাজলামি রাখ আগে ক পড়া কয়টায়
-হাহা..পড়াতো আটটায় । তুমি যাবা?
-হ ডাক দিছ আমারে
-আইচ্ছা আমি কি স্বপ্ন টপ্ন দেখতাছি ??
-জ্বি হ্যাঁ তোমার স্বপ্নে দোষ আছে তাই এম্মে কথা কইতাছো ..হালা ফোন রাখ
টুট টুট টুট..
ফোনটা পাশে রেখেই ছেলেটা রেডি হতেই বন্ধু হাজির । কিন্তু বন্ধুর চোখে মুখে ছেলেটাকে নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ কারণ যে ছেলে ১১টার আগে সূর্যের মুখে দেখে সে আজ সাড়ে ছয়টায় উঠছে সো ডালমে কুছতো কালা হ্যায় থুক্কু ডাল হি কালা হ্যায় । এইসব ভাবতে ভাবতে তারা কলেজে পৌঁছুলো যখন ছেলেটা তখন হুট করে বলে
-দোস্ত আজ পড়তে যাবোনা তুই যাহ
-মানে কি ??? (টাশকিত)
-কিছুনা রে তুই যাহ
-আগেই জানতাম কোনো কাহিনী আছে
-কোনো কাহিনী নাই । এইনে ব্যানসনের প্যাকেট এখন ভাগ
-উহু.. যাবোনা পড়তে । দেখবো তুই কি করিস ।
-অকা ঠিকাছে যাইস না তাইলে ।
তারপর পকেট থেকে ফোনটা বের করে ছেলেটা মেয়েটাকে কল দেয় । কয়েকবার কল দিয়ে মেয়েটাকে পায়না । তারপর মেয়েটাই জানায় যে তার আসতে আর ১০মিনিট লাগবে ।
গুনে গুণে ১৪মিনিট পরে শীতের হাড় কাঁপানো কুয়াশা ভেদ মেয়েটাকে দেখেতে পায় ছেলেটা । একটা সবুজ সালোয়ার কামিজে একটা পরী হেঁটে হেঁটে আসছে আর ঠোঁটে মাতাল করা সেই মিষ্টি হাসি যার নেশায় পাগল হয়ে এখানে দাঁড়িয়ে থাকা কিন্তু মেয়েটার পাশে আরোও একটা মেয়েকে দেখা যাচ্ছে । আচ্ছা পাশের ওই মেয়েটা কে? কাছে আসতেই জানতে পারে যে ওটা তার বান্ধবী । তারপর কথাবার্তা শুরু হয় তাদের । কিন্তু মেয়েটার মুখে খৈ ফুঁটলেও ছেলেটা চুপ করে সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছে..
তারপর মেয়েটা আবদার করে বসে যে তারা আজ কুয়াশার চাদর গায়ে জড়িয়ে রিক্সায় ঘুরবে । ছেলে প্রথমে একটু অমত করলেও পরে হাসি মুখে রাজি হয়ে যায় । একটা রিক্সা ডেকে উঠে পরে কপত কপতি । রিক্সাওয়ালা রিক্সার হুডটা তুলে দেয়ে যাতে তাদের একটু সুবিধে হয় ।
রিক্সায় পাশাপাশি বসে আছে দুজন কিন্তু কেউ কথা বলছে না কারণ একটু সঙ্কচ হচ্ছে প্রথম প্রথম । নিরবতা ভেঙে মেয়েটা কথা শুরু করে আর ছেলেটা চুপ করে শুনে । মেয়েটা দেখে ছেলেটা ঠান্ডায় কাঁপছে তাই তাকে চাদরে জড়িয়ে নেয় । ছেলেটা একটু লজ্জা পায় । মেয়েটা ছেলেটার কাঁধে মাথা রাখে ।ছেলেটা মেয়েটাকে ডান হাতে জড়িয়ে কাছে টেনে নেয় । মেয়েটা এই প্রথম লজ্জা পাচ্ছে । ছেলেটা জানে এটা কারণ মেয়েটা লজ্জা পেলে নাকটা লাল হয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পরে ছেলেটা তার ঠোঁট জোড়ার উপর আরোও দুটো ঠোঁট জোড়া অনুভব করে সাথে কিছু নিঃশ্বাস যেগুলোতে ছেলেটার নাম আছে ।