somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কানাডায় ৭০ দিন - ১২ তম পর্ব

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বাবা (তারেক-উল আলম) গত বছর কেনাডা বেড়াতে এসেছিলেন। কেনাডা থেকে দেশে ফিরে একটা বই লিখেছেন – ‘কানাডায় ৭০ দিন’। আজ পড়ুন এর ১২ তম পর্বঃ


স্কুলের নাম এমিলিকার

অলডেক্স ব্র“কলেনে লুসির স্কুল দেখতে গেলাম ধ্রুবকে নিয়ে। লুসি এই স্কুলে শিশুদের খেলাধূলার শিক্ষক। স্কুলের নাম এমিলিকার। শিশুদের স্কুল। আমাদের দেশে অনেক সরকারি কলেজ ও এতো বড় নয়। বিশাল জায়গা নিয়ে স্কুল কম্পাউন্ড। গাড়ি পার্কিং এবং খোলা জায়গা। স্কুলের পেছনে বিশাল খেলার মাঠ।

স্কুলটি এক তলা। বড় বড় কয়েকটি ক্লাসরুম। প্রতিটি ছাত্রের জন্য এক টি চেয়ার এবং এক টি টেবিল। সুন্দর ভাবে সাজানো। প্রতিরুমের পেছনের অংশে হার্ডবোর্ডের পার্টিশন,প্রয়োজনে যাতে রুম বড় করা যায়।

এমিলিকার শিশুদের একটি এলমিন্টোরী স্কুল। স্কুলরে পাঠ্যক্রম অষ্টম শ্রেনী র্পযন্ত। এদের শিক্ষা, শিক্ষার সুযোগ সুবিধা, শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষার মান আমাদের কল্পনার বাইরে ! শুধু পড়াশোনা নয় সাথে খেলাধূলা, খাওয়া দাওয়া, আমোদ প্রমোদ সব কিছুই রয়েছে। শিশুরা বাড়ির চেয়ে স্কুলকেই বেশি পছন্দ করে এবং স্কুলেই থাকতে চায়। স্কুল তাদের কাছে বড় আকর্ষণীয়, বড় আনন্দের জায়গা। এখানে বিভিন্ন বিভাগে রয়েছে দায়িত্ব প্রাপ্ত সুপার ভাইজার। প্রধান সুপার ভাইজারের অধীনে তার সেকশনের অন্যান্য শিক্ষকরা কাজ করে।

স্কুলে রয়েছে লাইব্রেরি, খেলাধূলার সরঞ্জামাদি, ডাইনিং হল, স্টোর রুম এবং বড় বড় ক্লাস রুম। লুসি কাজ করে খেলাধূলার সেকশনে। এ বিভাগের দায়িত্বে আছে মিসেস ডরিন--লুসির সুপারভাইজার।

মিসেস ডরিন জ্যামাইকান মহিলা। যে রকম কল্পনা করেছিলাম তেমন ভয়ংকর কিছু নয় ! মাঝারি ধরণের ছোট খাটো ফিগারের এক সাধারণ মহিলা। ভদ্র, অমায়িক। লুসিকে দেখেই আবেগে জড়িয়ে ধরলো। ধ্র“বকে কিউট কিউট করে আদর করতে লাগলো। আমাদের পরিচয় পেয়ে খুউব খুশি ! নাতি দেখতে সুদূর বাংলাদেশ থেকে এসেছি জেনে একটু বিম্মিত হলো যেনো ! দেশ থেকে নেয়া সামান্য উপহার প্রদান করলাম ডরিনকে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো এবং বিনয়ের সাথে গ্রহণ করলো।

আজ স্কুলের শেষ কর্ম দিবস। সামারের ছুটি হয়ে গেছে দুই মাসের জন্যে। ২/৪ জন বাদে স্কুলের প্রায় সব শিক্ষার্থীই চলে গেছে বাড়িতে। যে ক’জন রয়েছে তাদের মায়েরা অফিস থেকে ফেরার পথে নিয়ে যাবে। লুসি ধ্রুবর জম্মের ১ মাস আগে থেকেই ১ বছরের মাতৃত্ব কালিন ছুটিতে। আজ মিসেস ডরিনের সাথে আমাদের পরিচয় করানোর জন্যেই এলো।

লুসি ঘুরে ঘুরে আমাদের স্কুলের সব কিছু দেখালো। করিডোরে তার এক সহকর্মীর সাথে দেখা। লুসিকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো। আমাদের পরিচয় পেয়ে খুব আনন্দ প্রকাশ করলো। ধ্র“বকে দেখে খুব খুশি ! অনেক আদর করলো। বলা বাহুল্য সহকর্মীটি একজন ফলিস্তিনিী।

লুসি আমাদের মাঠে নিয়ে গেলো যেখানে শিশুদের গাইড হিসাবে, ইন্সট্রাকটর হিসাবে তাকে থাকতে হয়। লুসির ছুটিকালীন তার পরিবর্তে সাময়িকভাবে নেয়া গাইডের সাথে পরিচয় হলো। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম এখানে সব গাইড, সব শিক্ষক, সব সুপার ভাইজার--সবাই মহিলা, পুরুষ দেখলাম না একজনও। ৪/৫টি শিশুর সাথে দেখা হলো, বয়স ৭/৮ হবে। তারা ধ্র“বকে পেয়ে মহাখুশি ! ধ্রুব দেড় মাস বয়সের শিশু, সেও পিট্ পিট্ করে তাকিয়ে তাদের দিকে। পারলে এখুনিই নেমে পড়ে তাদের সাথে খেলতে ! ধ্রুব-কে হাসাতে কতো রকমের কসরত তাদের ! এরাই তো তার বন্ধু হবে একদিন ! আমরা ওদের ছবি নিলাম ধ্রুব-র সাথে।

আর মাত্র আধা ঘন্টা পরেই স্কুল গেট বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সবাই ব্যস্ত নিজ নিজ কাজ শেষ করতে। আমরা মিসেস ডরিনের কাছে বিদায় নিতে গেলাম। তিনি ও খুব ব্যস্ত। বেশিক্ষণ সময় দিতে পারলোনা। আমরা তার সাথে ছবি তুললাম। আমাদের কফি খাওয়ার দাওয়াত দিলো তার বাসায়। মিসেস ডরিনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা বাসার পথ ধরলাম।

(ক্রমশ)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×