somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গার্মেন্টস শিল্প বিপর্যয় নাকি বিপ্লবঃ মালিক পর্ব ০২

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত পর্ব নিয়ে তেমন আলোচনা জমে ওঠেনি। ফেসবুকে হামজা ভাই ও বন্ধু দ্বিজুর দুটো প্রশ্ন ছিলো দুইটার জবাবে আবেগ এসেছে বেশি।

দ্বিজুর প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বি কারা? প্রতিদ্বন্দ্বিরা যদি কেউ দ্বিগুন বেতন দিয়ে, কেউ আবাসন ব্যবস্থা সহ বেশি বেতন দিয়ে শ্রমিক রেখে লাভ করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না? এই ব্যর্থতা কার?
আমার আবেগী উত্তরঃ বন্ধু, তোকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হলে আগে কষ্টিং নিয়ে লেকচার দিতে হবে। সেটা খুব কঠিন এখন। শোন, "ব্যার্থতা কার?" এইটা আদ্যোপান্ত একটা রাজনৈতিক প্রশ্ন। আসলে প্রশ্ন হওয়া উচিত "ব্যার্থতা কাদের?" ব্যার্থতা শ্রদ্ধেয় নুরুল কাদির সাহেবের। সেই মালিক শ্রেণীকে ব্যাক টু ব্যাক এলসি চিনিয়েছিলো আর সরকারকে শুকিয়ে ছিলো কাচা টাকার গন্ধ। কোন সুস্পষ্ট নীতিমালা না করেই একটা কৃষি প্রধান দেশকে একটা "মাইগ্রেটিং ইন্ডাষ্ট্রিয়াল সিস্টেম"-এ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। মালিকের পাওনা বরাবর এখানে নিশ্চিত কিন্তু শ্রমিকের পাওনা কখনোই নিশ্চিত ছিলো না, এখনো নাই। অনেক কথা আমি এখানে বলতে পারবো না। তবে বন্ধু বিশ্বাস কর, এই যে শ্রমিকের বেতন সহ যেসব কথা ফেসবুকে পত্রিকায় ধোঁয়া তুলে নিয়ে যাচ্ছে তা কোন সুল বয়ে আনবে না।
দেখ, পাশের দেশ ইন্ডিয়ার বায়ারের কাজ আমরা করি, কেন এই কাজ গুলা আমরা পায়? আমরা কাজ পাই খুব কম টাকার কাজ গুলা, মানে প্রতি ডজন শার্টের মজুরি ১২ থেকে ১৮ ডলারের মাঝে। কিন্তু ৩০ থেকে ৩৫ ডলারের কাজও আছে, আমরা সেই গুলা পাই না কেন? আমরা এফ-ও-বি ওর্ডার-এর পরিবর্তে সি-এম নির্ভর কাজ কেন পাই?
এই প্রশ্ন গুলা বোঝাটা খুব জরুরী।
এবার চালের দাম কেন আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না? এটাও জানাটা জরুরী।
শ্রমিকের বেতন বাড়ানো শেষ কথা নয় বন্ধু।
আমার চেনা কিছু মালিক তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। তবু আশার কথা শ্রদ্ধেয় আরিফ ভাই একটা দূর্দান্ত পরিকল্পনা করছেন। এখনই বিশদ বিবরনে যাওয়া যাবে না। তবে দিন বদলাচ্ছে। ধীরে বদলাবে। আর ধীরে বদলে আমি বিশ্বাসী। সেই ১৯৭৮ সাল থেকে যে ভুল গুলা চলে আসছে তা রাতারাতি বদলাবে না। এই শিল্পটার ভেতরের খবর আমি জানি আর জানি বলেই এই ধরণের মালিক ঘেষা কথা বলছি।
ফেসবুক পত্রিকা এই সব কেবল শ্রমিককে স্টাম্পিড করতে পারে, যেমন করছে রাজনৈতিক নেতারা। শ্যা একটু গর্ব করেই বলি, আমরা কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কাজ না করলে হাজিরা বোনাস, ইনসেন্টিভ পলিসি, লিভ এনক্যাশ মেন্ট এই সব আসতো না। আমরা শ্রমিকের হেলথ-সেফটি নিয়ে কাজ করছি, গার্ম্নেটস-এ আর্গোনোমিক্স এপ্লাই হচ্ছে। কৈ একবারো কেউ তো বলে নাই গার্ম্নেটস-এ ন্যুনতম ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল সুবিধা থাকতে হবে? ডে কেয়ার সেন্টারে বাচ্চাদের শিক্ষার ব্যাবস্থা থাকতে হবে। হ্যা আমরা করছি। আমরা শিল্পটাকে টিকিয়ে রেখে, হ্যা মালিকের স্বার্থ শতভাগ নিশ্চিত করেই শ্রমিকের পাওনা বাড়াতে কাজ করছি।
৮০০০ টাকা কেন, ৫০০০ টাকার প্রভাব কয়জন মালিক নিতে পারবে দেখবো, একটা ফ্যাক্টরি যদি বন্ধ হয় তবে সেই সব শ্রমিকের কি হয় তাও দেখবো।
আফসোস, তখন তাদের পাশে বুদ্ধিজীবিরা থাকবে না, থাকবে এই রক্তচোষা মালিক গুলাই।
যা হোক, লেখাটা আরো কয়েকটা পর্ব থাকবে। আশা করি পড়বি...

হামজা ভাইয়ের প্রশ্নঃ Sromik der beton na barle je Bariwala ra vara barabe na ba Dokandar ra faeda adae korte parbe na, eta ki nishchit kore bola jae?
আমার আবেগী উত্তরঃ ভাই, হ্যা কথা ঠিক। বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়াবে না কিংবা দোকানদাররা ফায়দা লুটবে কিনা এটা নিশ্চিত করা যাবে না। তবে ঘটনা কি ঘটে শুনুন। বাড়ির মালিকরা (বিশেষ করে আশুলিয়া-ঢাকা) যখন-ই খোঁজ পায় কোম্পানি বেতন বাড়িয়েছে তখন-ই কোন যুক্তির ধার না ধেরে বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এখন এমনও দেখেছি বছরে দুইবার বেতন বাড়ার খবর শুনে দুইবার ভাড়া বাড়িয়েছে। আবার দেখা গেছে গতবার যখন বেতন বাড়লো ১৬২২ টাকা থেকে ৩০০০, তখন কিন্তু বাড়ি ভাড়া মাথা পিছু ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকাও বেড়েছে এমন খবর পেয়েছিলাম।
দেখুন ভাইয়া আমি কিন্তু বলেছি যে শ্রমিকের সঞ্চয় বাড়েনি। বেতন বাড়ানোর উপর যেভাবে জোর দেয়া হচ্ছে, সেভাবে কিন্তু শ্রমিকের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে কথা হচ্ছে না। এই বেতন বাড়ানোর আন্দোলনটা কত টা শ্রমিকদের জন্য আর কতটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সেটা বুঝে নেয়াটা জরুরী।
আসুন দেখি, চায়না বা ভিয়েতনাম এসব দেশে একটা ফ্যাক্টরি করার কিছু নিয়ম কি কি? যেমন একটা ফ্যাক্টরীর চারপাশে ন্যুনতম ৫ ফিট বাগান থাকতে হবে, শ্রমিকদের জন্য আবাসান, প্রফিডেন্ট ফান্ড-গ্রাচুইটি-প্রফিট শেয়ার-লিভ এনক্যাশ, সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টা দিন প্রতি শ্রম। কিন্তু আমাদের দেশে সরকার কি এসবের উপর কোন জোর দিছে? দেয় নাই। মালিকেরাও এসব নিয়ে সচেতন না। যার কারণে যেটা নিয়ে কথা বলা দরকার সেটা দূরে থাক, যে সব কারনে আন্দোলন জোরদার হবে সেটা নিয়েই আমাদের মাথাব্যাথা।
দেখুন পাট শিল্প কিন্তু এইভাবেই ধবংস হয়েছে। আজ যারা শ্রমিকের বেতন বাড়াও, ওমুক দেশে তমুক এই দেশে কেন নয় এই সব বলে বলে মুখে ফেনা তুলছে তাদের জন্য বলছি যে সিস্টেম বদলাতে হলে সিস্টেমকে আগে বুঝতে হবে। নতুবা ক্যান্সার সেল ওপেন করার মত ভুল হবে। আমি চাই না ১৯৯৬-৯৭ সালের গার্মেন্টস বিপর্জয় আবার আসুক।


এখন মালিক পর্বে ফিরে আসি, দেখুন এদেশে শ্রমিকের কাজের পরিবেশের অবস্থা যতই সঙ্গীন হোক, শ্রমিকের জীবন যতই খারাপ হোক, তা নিয়ে মিডিয়া কিছুটা লাফালাফি করবে, বিলেতে বিদেশে ক্রেতাদের মাঝে তোলপাড় হবে, কিন্তু একটা বিষয় ভেবে দেখুন, আমেরিকা বা ইউরোপের অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে তারা আজকের ৬ ডলারের একটা টি-শার্ট কাল কি ৮ ডলারে কিনবে? কিংবা ওয়ালমার্ট-টেসকো-এইচএন্ডএম কি নিজেদের ট্যাগ প্রাইস ঠিক রেখে নিজেদের লভ্যাংশ কমাবে? কখনোই না। তারা চেষ্টা করবে বাংলাদেশে ব্যাবসা ধরে রাখার জন্য। বিদেশি ডোনেশান আসবে এদেশে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নের বিভিন্ন খাতে, ফ্যাক্টরির প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য কনসালটেন্ট আসবে। কিন্তু ব্যবসা কিন্তু থাকবে। তবে হ্যা, হাই ভ্যালু প্রোডাক্ট এদেশে আসবে না, আমরা বিদেশি নিম্ন বিত্তদের পোশাক বানাবো, সস্তা দামের পোশাক বানাবো, ডজন ১২ ডলারের কিংবা ১৪ ডলারের মেক প্রাইসের কাজ আসতেই থাকবে। বেশি মুল্যের কাজ করবে ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া-চায়না এরা।
আমি আমার কর্মজীবনে বাঙালী মালিকানাধীন কোন ফ্যাক্টরী দেখিনি যারা হিউম্যান রিসোর্স বিভাগ নিয়ে মাথা ঘামায়। শ্রমিক কিংবা কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে গবেষনা করার কোন পদক্ষেপ তাদের নেই, অথচ এটাই সবচেয়ে জরুরী।
আমি খুব অবাক হয়ে যাই এদেশের অনেক স্বনামধন্য গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী সকল কর্মচারীর অর্জিত ছুটির টাকা পরিশোধ করে না, এমনকি শ্রমিকের ক্ষেত্রেও কিছু বিধি নিষেধ দেয়া থাকে। কোন কোন ফ্যাক্টরি তো শ্রমিককেও তাদের ওর্জিত ছুটির টাকা প্রদান করে চাকরি ছেড়ে যাবার সময়। সেখানেও পাওনা টাকার অঙ্ক নিয়ে চলে মুলামুলি।
একজন মালিক বলুক যে তিনি তার শ্রমিকদেরকে বিশ্বাস করেন? আমি পাইনি। যে মালিক বলবে যে তিনি বিশাস করেন, তার প্রতি প্রশ্ন, “এবার কুরবানি ঈদের বোনাস কবে দিচ্ছেন? নিশ্চয় ছুটির দিন। কেন বলবেন কি?” উত্তর হচ্ছে, বোনাসের টাকা হাতে পেলে শ্রমিকরা শেষ দিন কাজে আসবে না। কথা ঠিক, কিন্তু আসবে না কেন? কারণ মালিক শ্রমিকের প্রতি সেই বিশ্বাস অর্জন করেননি। মাসে বেতন ১০ তারিখে পরিশোধ করা হয়, কোন কোন স্থানে ৭ তারিখ, খুব কম স্থানে ৫ তারিখ। কিন্তু তার আগে কোথাও প্রদান করা হয় কি না জানি না। কোন কোন ফ্যাক্টরি ওভারটাইমের টাকা দেয় মাসের ২০ তারিখের পর। এই সব ত্যাগ করতে হবে। হ্যা, আজ আপনি শ্রমিককে বিশাস করে মাসের ৩ তারিখে বেতন-ওভারটাইম সব পরিশোধ করবেন, বছর শেষ হলেই অর্জিত ছুটির টাকা দিবেন। প্রথম মাসে শ্রমিক চলে যাবে অনেকে এই সুযোগ নিয়ে। আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি ৬ মাসের মাঝে আপনার প্রতিষ্ঠানের মাইগ্রেশান বা এবসেন্টিজম শতকরা ৪%-এর নীচে থাকবে।
ঈদের ছুটি আরেক ভয়ংকর ব্যাপার। অধিকাংশ ফ্যাক্টরি ঈদের ছুটি স্বমন্বয়ের নামে ঈদের আগে ছুটির দিনগুলা কাজ করিয়ে নেয়। এইবার যেমন তিনদিন সরকারী ছুটি, মাঝে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি এবং বাকী তিনটা ছুটি স্বমন্বয়ের ছুটি। মানে এই দিনগুলা শ্রমিকেরা কাজ করেছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলা। একবার ভাবতে পারেন, একটানা ১ মাস কাজ করে যাওয়ার ফল কতটা খারাপ? অথচ ইপিজেড-এ নিয়ম হচ্ছে নৈমত্তিক ছুটি থেকে স্বমন্বয় করা, নৈমত্তিক না থাকলে অর্জিত থেকে কেটে নেয়া।
এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেফটি বিষয়ে আমাদের মালিকেরা কোন খেয়াল করেন কি? দেখুন, এখনই কিন্তু আমাদের শ্রমিকের সংকট। সে যে কারনেই হোক সংকট তো। এখন যে সম্পদ প্রয়োজনের তুলনায় কম, তা ব্যবহারে যত্নবান হওয়াটা জরুরী। আর এখানে সম্পদ হচ্ছে মানুষ। যারা ভাবেন অটোমেশনের মাধ্যমে শ্রমিক কমিয়ে ফেলবেন, তারা দেখুন অটোমেশনে ইংল্যান্ড কত এগিয়ে, কিন্তু পোশাক শিল্প কিন্তু ওখানে টেকেনি। শ্রমিক নির্ভর প্রোডাকশান সবচেয়ে বেশী ফ্লেক্সিবল। তাই শ্রমিকের যত্ন নেয়াটা এই মূহুর্তে খুব জরুরী। আমার চেনা কিছু ফ্যাক্টরী আছে যেখানে ৫ থেকে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে। এবং সেটা শুধু মাত্র শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য। আমি তো দেখি অধিকাংশ ফায়ক্টরিতে চিকিৎসা কেন্দ্র থাকলেও ডাক্তার নেই। এই ধরণের প্রতারণার কি মানে? যেটা করা দরকার সেটা করে ফেলুন। অযথা অডিট পাশ করানোর জন্য গাদা গাদা মিথ্যা কাগজ পত্রের ঝামেলা আর কতদিন?
এখনো, অধিকাংশ ফ্যাক্টরি প্রোডাকশন বুকিং করেন গার্মেন্টস পিস হিসাবে। দিনে প্রতি লাইনে ১০০০ থেকে ১২০০ শার্ট প্রোডাকশান দিতে হবে। এর জন্য ০১ ঘন্টা লাগুক আর ১২ ঘন্টা লাগুক চলবে। এখন সব গার্মেন্ট কিন্তু এক নয়। কোনটা তৈরীতে বেশী সময় লাগে কোনটা কম। আমি এস-এম-ভি-এর কথা বলছি। দেখুন আধুনিক ব্যবস্থায় আমরা তৈরী করি পোষাক কিন্তু বিক্রী করি হচ্ছে সময়। এখনো মান্ধাতার আমলের মত প্রতি লাইনে মাসে ৩০০০০ শার্ট বানাতে না পারলে ফায়ক্টরি লসে আছে এই ধারণার দিন শেষ। মার্কেটিং হবে সময়ের। ফ্যাক্টরির ক্যাপাসিটি কত মিনিট সেই অনুযায়ি মার্কেটিং হবে।
(আগ্রহীদের জন্যঃ
ধরুন একটা সুইং লাইনে মেশিন আছে ৫০ টা, দিনে ১০ ঘন্টা কাজ হবে। তারমানে ঐ লাইনে ইনপুট মিনিট= ৫০ * ১০* ৬০ = ৩০০০০ মিনিট।
এখন ঐ লাইনের এভারেজ ইফিসিয়েন্সি যদি ৫৫ % হয়, তবে এভেইলএবল মিনিট হচ্ছে = ৩০০০০*৫৫%= ১৬৫০০ মিনিট।
এখন এস-এম-ভি বুঝতে হবে। SMV means Standard Minute Value. কোন কাজ করতে একজন আদর্শ শ্রমিকের যে সময় লাগে তার সাথে কন্টিঞ্জেন্সি এলাউন্স যোগ করলে যে সময় পাওয়া যায় তাকে এস-এম-ভি বলে। সাধারণ একটা শার্টের এস-এম-ভি হচ্ছে ১৭ মিনিট। এখন ওই লাইনে একজন মার্চেন্ডাইজার দিনপ্রতি ১৭ মিনিটের (১৬৫০০/১৭)=৯৭০ টি শার্ট বুকিং দিতে পারবে। এখন যদি এমন কোন শার্ট আসে যার এস-এম-ভি ২৫ মিনিট তাহলে সে দিন প্রতি বুকিং দিবে (১৬৫০০/২৫)=৬৬০ পিছ।
এখন উৎপাদন কমে গেছে বলে যে সকল মালিক গন হাহুতাশ করবেন, তাদের বলছি, কস্টিং করতে হবে এস-এম-ভি-এর ভিত্তিতে। সাধারণত প্রতিমিনিট ০.০৫৬ ডলার। এখন ১৭ মিনিটের গার্মেন্ট-এর মুল্য হবে ডজনে (১৭*০.০৫৬*১২)=১১.৪২৪ ডলার আর ২৫ মিনিটের হবে (২৫*০.০৫৬*১২)=১৬.৮ ডলার। আপনাকে যেটা মনে রাখতে হবে, দর কষাকষির সময় যেন এর কম না হয়। আর আপনার যদি ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার থাকে তাকে বলতে হবে ঐ লাইনের এভারেজ ইফিসিয়েন্সি যেন ৫৫% এর নীচে না নামে বরঞ্চ যত বেশী হবে ততই লাভ। হুম, এখন সময় হচ্ছে একটা ভালো ক্যালকুলেটর কেনার।)

এখনো অনেক ফ্যাক্টরিতে গালাগালি চলছে, মিশ লেভেল বা টপ লেভেল এগুলা ইগনোর করছেন। জেনেও মেনে নিচ্ছেন। আমি জানি মাস শেষে আপনাদের লাভের অংশ কেটে রেখেই কোম্পানির লাভ লোকশান হিসাব হয়। রেগে যাবেন না প্লিজ। গার্মেন্ট কস্টিং-এর বর্তমান পদ্ধতিটা বেশ ভালোই। ব্যবসার-এর উন্নতি শব্দটার একটা বড় ভিত্তি হচ্ছে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি। সেটার দিকে নজর দিন। আপনার কর্ম পরিবেশ হোক ইবাদতের স্থান, কারণ কোথায় যেন পড়েছিলাম, কর্মের চেয়ে বড় ইবাদত নেই। সেই ইবাদতের স্থানে আপনি কেন কাউকে প্রশ্রয় দিবেন গালিগালাজ করার জন্য?
আমি খুব আশা করি যে একদিন মানুষ গামেন্টস ফ্যাক্টরিকেই প্রাধান্য দিবে, তারা ফুড ম্যানুফ্যাচারিং-এ কিংবা অটোমোবাইল কোম্পানির চেয়ে বেশি না হোক, সমমানের সন্মান বোধ করবে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিকে নিয়ে। গার্মেন্ট ট্রেড ছাড়ার জন্য মরিয়া আমার বন্ধুরা যেন আরো আগ্রহী হয় এখানে কাজ করতে। এগিয়ে আসতে হবে মালিকদেরকেই।

(জানি লেখাটা আবেগী জগা খিচুড়ি হয়েছে, তবু লিখলাম। আমি চাই আমার চেয়ে গুছিইয়ে লিখুক আমার বন্ধুরা।)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×