somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কালো অধ্যায় ১

২৭ শে জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবাইকে শুভেচ্ছ দিয়ে আমার নিজের কথা শেয়ার করতে চাই,
আমি এক সাদাসিদে মানুষ। জম্মের পর থেকেই পারিবারিকভাবে প্রচন্ত ধর্মপরায়ন ছিলাম। ৫ বছর থাকতেই মায়ের সাথে সৌদি আরবে যাত্রা করি। আব্বা তার ৪-৫ বছর পূর্বেই অবস্থান করছিল। সেই শৈশবের দিনগুলো মনে পরে না, কিভাবে গিয়েছলাম, কোথায় উঠেছিলাম। আমাকে এবং আমার ভাইকে সৌদি এক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। তখন বয়স আর কত ১২/১৩ হবে। আরবী ছেলেদের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়। কিন্তু স্রেফ বন্ধুত্ব মনের দিক থেকে নয়। এটা বুঝতে পারি যখন ৫ম বা ৬ষ্ট্র শ্রেনীতে পড়ি। তখন থেকে নিজেকে নি:সহ জীবন যাপন করছি। নিজেকে হা হা কার মনে হতো। সব সময় একাকীত্ব লাগত। তাদেরকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতাম বিনিময় তারা গলাগাল/ ছোটলোক বলে ধিক্কার দিত। অবশ্য প্রতি বছরে বাংলাদেশে যাওয়ার সুযোগ হতো। কিন্তু তা ছিল স্রেফ যাওয়া আসার মতো। যখন বয়স বাড়তে থাকে তখন নিজেকে হতাশার ঝালে আবদ্ব করে ফেলি। কোন একজনকে পাচ্ছিলামনা যে আমার সাথে যোগ-বিয়াগের অংশিদার হবে। এভাবে দেখতে দেখতে ১২টা বছর পার করলাম পরবাসীর মাটিতে। সর্বশেষে যখন দেশে আসি তখন দেশের প্রতি প্রচন্ড মায়া জ্ম্ নেয়। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না আমার দোষ ছিল না যে এত বছর পর দেশে মায়া জম্মালো কেন? আসলে ছোটবেলায় থেকে মাদ্রাসা পরা শুনা করি প্রথম নিজেকে আবিষ্কার করি সৌদি ছেলে হিসাবে। যখন নিজেকে খাপ খাওতে পাচ্ছিলাম না তখন থেকেই আমার মনে জম্ম দেয় যে আমার সাংস্কৃতি কোনটা।কোনটা আমার রেওয়াজ হিসাবে বেছে নিব? যাগ্গে সেসব কথা ..
প্রতিবছরে আমরা দেশে আসতাম।সর্বশেষ যখন দেশে আসি তখন এই দেশের প্রতি মায়া জম্মিয়ে যায় আমার। তখন সৌদিতে ফিরে আব্বাকে বুঝালাম এমনকি ২-৩দিন ধরে কান্নকাটি করে ফেল্লাম যে আমি দেশেই ফিরে যাব। শেষ মেস্ আব্বা আমাকে আমার মা ভাই বোনকে সহ দেশে পাঠিয়ে দিলেন। দেশে এসেই পরের বৎসরে মেট্রিক পরীক্ষা দেই। পরীক্ষা দেওয়ার আগে আমার বড় বোনের জন্য পাত্র দেখার হৈ চই পড়ে যায়। তখনও জানতামনা যে আমাদের দোর্ভোগের দিন গনিয়ে আসছে। কে জানত এর মধ্যে আকাশ কালো মেঘ ডাকা ছিল নাকি আকাশে জোৎনার চাদ উজ্জল হয়ে আলো দেখা দিবে। এরই মধ্যে এক ছেলে আসল আমাদের বাসায়। এক কলেজ থেকে পাস কোর্স থেকে পাশ। পিতা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। অবস্থা মোটেও ভাল না। জানিনা সে কি হেসাবে আমাদের সাথে আত্নীয়তা করতে চাইল, আত্নীয়তার উদ্দেশ্যে নাকি সৌদি রিয়ালের লোভে। শেষ মেস্ তার সাথেই আমার বোনের বিয়ে হয়। এই বিয়েতে আমার আত্নীয় স্বজন কেউ রাজী ছিল না। শুধু আমার আম্মা রাজী ছিল। আমার আব্বা ছিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার আর আমার মা ছিলেন ক্লাশ এইট পাশ। কথাটা না বল্লেই ভাল হতো।আমার আম্মা ছিলেন প্রচন্ড জেদী এবং খোশ মেজাজের। এই বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তারা প্রায় দুই বৎছর ছিল আমাদের বাসায়। প্রথম প্রথম আমি তাকে মান্য করতাম ভাই হিসাবে। কিন্তু যখন দেখি সে ভাবগুর হিসাবে সময় কাটায়, শুশুরের বাড়ি পেয়ে সে মহাসুখি, আমাদরে সাথে আত্নীয়তা করে সে মহাধন্য, চাকরি করলে আবার ছেড়ে দেয় তখন আর সহ্য করতে পারছিলাম না। তখন তাকে আমার কাছে দিন দিন অসহ্য মনে হচ্ছিল। তার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতাম। অবস্থা এমন পর্যন্ত পৌছালো যে আমাকে কলেজের হোষ্টেলে গিয়ে কয়েক সপ্তাহ থাকতে হলো।যদিও আমাদের দালান ছিল।শেষ মেস্ সে আমার বোনকে নিয়ে গ্রাম অঞ্চলে চলে যায়। তখন থেকে শুরু হয় আমার জীবনের ঘাত আর প্রতিঘাত জীবন। মনে হচ্ছিল খোদা আমাকে দেশে পাঠিয়ে অতীত জীবনের বিলাসিতা খাফ্ফার আদায় নিতে চাচ্ছে। সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত। মার চেচামেচি মোটও ভাল লাগত না। মা ছিলেন এক রাজনীতি প্রচন্ড ভক্ত। বলা চলে অন্ধ বিশ্বাস। মাকে আমি প্রচন্ড ভালবাসি শ্রদ্বা করি। কিন্তু তার একগুয়ামিতা / অন্ধবিশ্বাস আমার কাছে মোটও ভাল লাগত না। বাসায় এক মুহুর্তে জন্য ভাল লাগত না। এজন্য একা কীর্ত সঙ্গিনি নিজেকে আবদ্ব করে ফেল্লাম। বাসায় থাকলে একাকীত্ব থাকতাম। আর বাহির হলে গুটি কয়েক বন্থু ছিল শুধূ তাদের কাছেই আড্ডা দিতাম। এর মধ্যে ভার্সিটিতে পা রাখি। পা রাখার সাথে সাথেই ছাত্র রাজনীতিতে যোগদান করি । শেষ মেস্ ছাত্র রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় দপ্তর যাওয়ার সুযোগ হয়।তাও ৪/৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরে।আসলে ছাত্র রাজনীতি ডোকার আমার মোটও ইচ্ছা ছিল না, যেখানে প্রাচুর্যের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছি সেখানে আমার মতো অধম বান্দা রাজনীতির প্রশ্নেই উঠে না। যাগ্গে বাসার অশান্তির পরিবেশের কারেনই আমাকে যোগ দিতে হলো।প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ি তখন ৩য় বর্ষে, সেসময় আমার শ্রদ্বেয় পিতাজান ইন্তিকাল করেন। আব্বার বিয়োগে আমি চেষ্টা করি সংসারের হাল ধরার। কিন্তু মায়ের খোটা উপার্যন নাই বিধায় নিজেকে তিরষ্কার ভাবি।সংসারের প্রতি উদাসীন হই। সারাদিন বাইরে বাইরে ঘুরপাক করি আর বাসায় ফিরলে হয় নেটের সামনে বসি, না হয় ইতিহাস বা প্রবন্ধ নিয়ে পড়তে বসি। আসলে সেসময় কঠিন অধ্যায় পার করেছিলাম। তখণ মনে হচ্ছিল পৃথিবীটা দিন দিন আমার খাছে সংকীর্ন হয়ে আসছিল।ইউনিভার্সটিতে কম্পিউটার সায়েন্সে পাশ করার পর চাকরির জন্য হন্যে হয়ে খোজি। প্রতি সপ্তাহে ২-৩টা ইন্টারভিউ দেই। জানিনা আমাকে চাকরি খোজতে হলে কেন? কারন আমার পিতা আমাদের জন্য অনেক কিছু রেখে গিয়েছেলেন। বাড়ি, দোকান জমি সবই রেখে গিয়েছিলেন, কিন্তু তারপরেও আমি চাকরির জন্য হন্য হয়ে খোজলাম। ।আসলে তখন আমি মানসিক রোগে ভোগছিলাম যা আমি নিজেও টের পাইনি। যাগ্গে শেষ মেস একটা চাকরিও পেয়ে যাই, আইটি অফিসার হাসাবে।অবশ্য বেশী দিন টিকে থাকতে পারিনি। ৫/৬ মাস হবে। শেষ পর্যন্ত স্থির নেই এই দেশে আর থাকব না।তখন কাউকে না জানেয়ে অন্য পথিকের দিকে পা বাড়ালাম। ধিক্কার দেই আমার দেশ। যে দেশের মায়া মমতার জন্য আমার টনক নড়ল সে দেশে আমি একটু স্বস্থির নিশ্বাস পেলাম না। রেখে গেলাম আমার দেশের জীবনের কয়েকটা কালো অধ্যায়.............
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৫৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×