যাহা করিবো আত্নত্যাগের দ্বারায় করিব, যাহা পাইব আত্নবিসর্জনের দ্বারায় পাইব, যাহা দিব আত্নদানের দ্বারাতেই দিব।
- অত্যুক্তি, রবীন্দ্র রচনাবলী
যাহা বিনষ্ট হইবার তাহাকে বিনষ্ট হইতে দিতে হইবে, যাহা অগ্নিতে দগ্ধ হইবার তাহা ভস্ম হইয়া যাক। মৃতদেহ যদি লুপ্ত না হইয়া যাইত তবে পৃথিবীতে জীবিতের অবকাশ থাকিত না, ধরাতল একটি প্রকাণ্ড কবরস্থান হইয়া থাকিত। আমাদের
হৃদয়ের ভক্তিকে পৃথিবীর ছোটো এবং বড়ো, খাঁটি এবং ঝুঁটা, সমস্ত বড়োত্বের গোরস্থান করিয়া রাখিতে পারি না। যাহা চিরজীবী তাহাই থাক্; যাহা মৃতদেহ, আজ বাদে কাল কীটের খাদ্য হইবে, তাহাকে মুগ্ধ স্নেহে ধরিয়া রাখিবার চেষ্টা না করিয়াই শোকের সহিত, অথচ বৈরাগ্যের সহিত, শ্মশানে ভস্ম করিয়া আসাই বিহিত। পাছে ভুলি, এই আশঙ্কায় নিজেকে উত্তেজিত রাখিবার জন্য কল বানাইবার চেয়ে ভোলাই ভালো। ঈশ্বর আমাদিগকে দয়া করিয়াই বিস্মরণ-শক্তি দিয়াছেন।
- ভারতবর্ষ, রবীন্দ্র রচনাবলী
জীবনের ক্ষেত্রকে বড়ো করিয়া দেখিতে পাই না বলিয়াই জীবনকে বড়ো করিয়া তোলা এবং বড়ো করিয়া উৎসর্গ করিবার
কথা আমাদের স্বভাবতঃ মনেই আসে না সে সম্বন্ধে যেটুকু চিন্তা করিতে যাই তাহা পুঁথিগত চিন্তা, যেটুকু কাজ করিতে যাই
সেটুকু অন্যের অনুকরণ। আমাদের আরও বিপদ এই যে, যাহারা আমাদের খাঁচার দরজা এক মুহূর্তের জন্য খুলিয়া দেয় না তাহারাই রাত্রিদিন বলে, ‘তোমাদের উড়িবার শক্তি নাই।’ পাখির ছানা তো বি-এ পাশ করিয়া উড়িতে শেখে না; উড়িতে পায় বলিয়াই উড়িতে শেখে।
- পথের সঞ্চয়, রবীন্দ্র রচনাবলী
সকল কবির কাব্যেরই গূঢ় অভ্যন্তরে এই পূর্বমেঘ ও উত্তরমেঘ আছে। সকল বড়ো কাব্যই আমাদিগকে বৃহতের মধ্যে আহ্বান করিয়া আনে ও নিভৃতের দিকে নির্দেশ করে। প্রথমে বন্ধন ছেদন করিয়া বাহির করে,পরে একটি ভূমার সহিত বাঁধিয়া দেয়। প্রভাতে পথে লইয়া আসে, সন্ধ্যায় ঘরে লইয়া যায়। একবার তানের মধ্যে আকাশ-পাতাল ঘুরাইয়া সমের মধ্যে পূর্ণ আনন্দে দাঁড় করাইয়া দেয়।
যে কবির তান আছে, কিন্তু কোথাও সম নাই–যাহার মধ্যে কেবল উদ্যম আছে, আশ্বাস নাই–তাহার কবিত্ব উচ্চকাব্যশ্রেণীতে স্থায়ী হইতে পারে না। শেষের দিকে একটা কোথাও পৌঁছাইয়া দিতে হইবে, এই ভরসাতেই আমরা আমাদের চিরাভ্যস্ত সংসারের বাহির হইয়া কবির সহিত যাত্রা করি; পুষ্পিত পথের মধ্যে দিয়া আনিয়া হঠাৎ একটা শূন্যগহ্বরের ধারের কাছে ছাড়িয়া দিলে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়। এইজন্য কোনো কবির কাব্য পড়িবার সময় আমরা এই দুটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি, তাঁহার পূর্বমেঘ আমাদিগকে কোথায় বাহির করে এবং উত্তরমেঘ কোন্ সিংহদ্বারের সম্মুখে আনিয়া উপনীত করে।
-নবাবর্ষা, রবীন্দ্র রচনাবলী
দুই বছর আগে একুশে বইমেলায় আমার বোন "রবীন্দ্র প্রবন্ধ চয়ন" নামে একটা বই কিনে দিয়েছিলো। অনেক দিন পর সেই বইটা একটু দেখলাম। বইয়ের পেন্সিল দিয়ে আন্ডারলাইন করা কিছু অংশ শেয়ার দিলাম .......
(মজার বিষয় এক লাইন লিখে গুগল করলেই পুরা লেখা চলে এসেছে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি, শুধু একটা লিখছি )
শুভ জন্মদিন পৃথিবীর দ্বিতীয় রোমান্টিক ব্যক্তি ...... (ট্রিট কই? কেক খামু .......আর কইলাম না)