somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সিংগাপুর ও মালেশিয়া ভ্রমন পর্ব (৩) ইউনিভারসেল স্টুডিও

২৪ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার সিংগাপুর ও মালেশিয়া ভ্রমন পর্ব(১)

আমার সিংগাপুর ও মালেশিয়া ভ্রমন পর্ব (২) মেরিনা বে এবং রিভারসাইড

সিংগাপুর ভ্রমনের সবচেয়ে রকিং আর থ্রিলিং পার্ট ছিলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো ইউনিভারসেল স্টুডিও মুভি থিম পার্ক ভ্রমন। এটা এখন পর্যন্ত আমার জীবনের সেরা এক্সপেরিয়েন্স গুলার একটা।বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি দেখে,একটা সাধারন থিম পার্ক কে কতটা ক্রিয়েটিভ ভাবে সাজানো যায় !

ইউনিভারসেল স্টুডিও

এখানে ঢুকতে জনপ্রতি ৭৪ S $ লাগে। বাট, ভেতরে ঢুকে আমার মনে হয়েছে, ৭৪ ডলার এত বড় একটা উত্তেজনায় পরিপূর্ন জায়গার জন্য এটা খুবই সামান্য। জুরাং বার্ড পার্কের মত এই জায়গাটা সিংগাপুর ভিজিটরদের মাস্ট ভিজিট প্লেসে রাখা উচিত। যদিও সময়ের অভাবে জুরাং বার্ড পার্কটা আমার দেখা হয় নি। /:) কিন্তু আপসোস নাই কারন পরের ভিজিটের জন্য ত কিছু রাখতে হবে।



ভেতরে ঢুকেই একটা চরম ধাক্কা খেলাম "মারলিয়েন মনরো" এর ভূত দেখে। তারপর ওনার সাথে ছবি তুললাম।





একটু সামনে গিয়ে দেখি বিশাল জাহাজ টাইটনিক।



আর একটু এগিয়ে মাদাগাস্কায় গিয়ে দেখলাম ছোট একটা প্লেন ক্রাস করে গাছের সাথে আটকে আছে আর পাইলটের মরা দেহটা ঝুলে থাকতে থাকতে কঙ্কাল হয়ে গেছে।





তারপর কিছুসময় নিচের ছবির ক্যারেক্টারদের নাচানাচি আর ফাজলামো দেখলাম। B-)



সেখান থেকে ফার ফার এ্যওয়ে গিয়ে দেখলাম মিস্টার শ্রেক ও তার বউ দিব্যি মানুষজনের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে। :)



তারপর বিখ্যাত ডিজনিল্যান্ড ক্যাসেলের হলে শ্রেক ফোর ডি মুভি দেখলাম। এইখানে একটা সিস্টেম দেখে ভাল লাগলো।শো গুলার জন্য দরকার হল ভরা মানুষ। কিন্তু এক হল ভর্ত্তি মানুষ হতে বেশ কিছু সময়ের দরকার । সেই ওয়েটিং সময়টুকু যাতে বোরিং না হন, সে জন্য স্পেশাল ব্যবস্হা নেয়া হয়েছে।



লস্ট ওয়ার্ল্ড এ বিখ্যাত মুভি ওয়াটার ওয়ার্ল্ড এর স্টেজ। সেখানে ৩ ভাড়, কিছু সময় সবার গায়ে পানি ছিটিয়ে বেশ তামশা করলো। তখন বুঝলাম ফোর ডি হলের সামনে কেন ৩ ডলারের রেইন কোট বিক্রি করছিলো। খানিকটা পানির ঝাপটা আমাদের গায়েও এসে লাগলো। তারপর শুরু হলো মেইন শো। নায়ক ,নায়কা, ভিলেন সমৃদ্ধ টানটান উত্তেজনাপূর্ন সেরকম একটা নিখুত একশন মুভি দেখে আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেলাম।





দর্শক আমরা দুই বন্ধু।



ভাড়দের পানি ছেটানো।



মুভির একশান।



ভিলেনের গুলি খেয়ে নায়ক কুপোকাত।



পরে ধুমধাম বোমা ফাটিয়ে শেষে ভিলেনের পরাজয় এবং নায়ক নায়কার প্রস্হান।





ফুল শো দেখতে এখানে ক্লিকান

জুরাসিক পার্কেও দেখি ৩ ডলারে রেইন কোর্ট বিক্রি হচ্ছে। কাহিনী কি? আবার পানিপুনি নাকি? এমনিতে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড শে দেখে মাথা নষ্ট ! আবার কি হয় না হয় ভেবে আর রিস্ক নিলাম না, কিনলাম একটা রেইন কোর্ট। আমার ঘাড় ত্যারা বন্ধু কিনলো না। শেষে তাকে ৫ ডলার দিয়ে মেশিনে দাড়িয়ে কাপর শুকতে হয়েছিলো। :D

জুরাসিক পার্কে জঙ্গলের মধ্যে একটা তীব্র স্রোতধারার সরু নদীর স্রোতের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ করতে করতে আপনাকে এগুতে হবে। এসময় জঙ্গল থেকে আচমকা দৈত্যকার অনেকগুলা ডাইনোসার যদি আপনাকে খাওয়ার জন্য ছুটে আসে তাহলে কি আত্মা খাঁচায় থাকবে? এইখানে পানির কারনে ছবি তোলা যায়নি। /:)

এটা দেখতে পারেন,

সেখান থেকে সুজা চলে গেলাম প্রাচীন মিশর এ।













এইখানে দ্যা রিভেঞ্জ অফ মামি নামে একটা ভয়াবহ রাইড আছে।যেটাতে দূর্বল হার্টের কেউ চড়লে এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভবনা ১০০% ! না বুঝে ঐ রাইডে চড়ে চোখে তারা দেখতে দেখতে বের হয়ে দেখি, মামি সিনেমার হিরু "ব্যান্ডন ফ্র্যাজারের" ভূত হেব্বি ভাব নিয়া দাড়িয়ে আছে। ওর সাথে ছবি তুলতে গিয়ে দেখি বিশাল লাইন তাই আর ছবি তোলা হলো না। /:)



আমরা ইউনিভারসেল স্টুডিও তে ঢুকেছিলাম বেলা ১১ টা সময় আর এখন বাজে প্রায় ৪টা ।এতটা সময় কিভাবে গেল বুঝতেই পারি নি। কিন্তু এখন পেট কথা বলা শুরু করেছে।পিয়াসের টায়ার্ড ভাবসাব দেখেও না দেখার ভান করলাম। ম্যাপ এ দেখলাম আর একটা এরিয়া বাকি আছে। সেটা হলো সাই ফাই সিটি। নামেই বুঝা যায় এ পর্যন্ত যা যা দেখলাম তারচেয়ে অনেক বেশি চমক ওখানে হয়তো অপেক্ষা করছে। তাই আমার জোরাজুরিতে বন্ধু নিমরাজি হলো। অবশ্য কিছুসময়ের জন্য স্নাক্স, জুস আর বিরি বিরতি দিতে হলো।

সাই ফাই সিটিতে গিয়ে দেখি জটিল সব ঘোরপ্যাচ মারা ট্র্যাক দিয়ে দুটা রোলার কোস্টার অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটছে। সাথে কোস্টারের যাত্রিদের আকাশ বাতাস কাপানো চিল্লাচিল্লি। সেটা ভয়ে না কি আনন্দে বোঝা মুশকিল। আমি আর পিয়াস রোলার কোস্টারে উঠলাম। আমাদের চশমা ,ক্যামেরা পিয়াসের ঘড়ি সব কাউন্টারে নিয়ে নিলো।

আমি এটাতে উঠে এক মুহূর্তের জন্য মৃত্যুর স্বাদ পেয়েছিলাম। :-* বিউয়ান্ড ডিস্ক্রাইব :|



তারপর সেখান থেকে গেলাম ট্রান্সফরমার রাইডে। ওটা আমার কাছে সবচেয়ে বেস্ট মনে হয়েছে।ওটা একটা অবিশ্বাস্য রকম উত্তেজনাপূর্ন রাইড ছিলো। মেগাট্রন আর অপটিমাস প্রাইমের তুমুল যুদ্ধে মধ্য দিয়ে স্বশরীরে আপনাকে যেতে হবে। মেগাট্রন আপনাকে বারবার মৃত্যুর মুখে ফেলবে কিন্তু অপটিমাস প্রাইম মুহূর্তের মধ্যে আপনাকে রক্ষা করবে। কারন পৃথিবীকে বাচানোর জিনিসটা যে তখন আপনার হাতে। যেটা রাইডের শুরুতেই অপটিমাস প্রাইম আপনাকে দিয়ে দেয়।

এটা



বাম্বল বি



মেগাট্রন



দেখুন ত গাড়ীটা চিনতে পারেন কি না?



ফুল শো এখানে।

ওখান থেকে বের হয়ে আমরা দু বন্ধু একদম থ হয়ে গেছি। কেউ কোন কথা বলছিলাম না। :D আস্তে আস্তে হাটা দিলাম নিউয়ার্ক শহরের দিকে।



আর একটা বিখ্যাত ভূত দেখলাম নাম জানি না।



এদের সাথে একটা ছবি তুললাম B-)



উডি যুগলের সাথেও:D



একটু পপকর্নও খেয়ে নিলাম।



এটলাস্ট একটা পুরা দিন শেষে নিউয়ার্ক শহরের একটা পুলিশের গাড়ী চুরি করে ইউনিভারসেল স্টুডিও থেকে বের হলাম।





ধন্যবাদ সবাইকে।
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×