somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হোয়াইট হাউসে বাংলার জুয়েল (সাবাস বাঙালি। লেখাটি পড়ে ভালো লাগল তাই শেয়ার করলাম...)

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিশ্চিত হয়ে গেছে বারাক ওবামার বিজয়। দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। টিভিতে, ইন্টারনেটে ওবামার ‘বিজয়ক্ষণ’ দেখেছে গোটা পৃথিবী। এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে জুয়েলের সঙ্গে কথোপকথন।
‘জুয়েল ভাই, একটা লেখা যে লিখতে হয়!’
‘ভাই, খুব ক্লান্ত। পরে লিখলে হয় না? আমরা এখনো শিকাগোতে। পুরো সপ্তাহ কাজ... দিনে ২০ ঘণ্টা। এইবার ছেড়ে দেন।’
‘বিজয়মুহূর্তে আপনি বারাক ওবামার সঙ্গে ছিলেন। সবকিছু আপনার নিজের চোখে দেখা। আপনি না লিখলে কি হয়?’
অনেক চাপাচাপির পর অবশেষে রাজি হন জুয়েল সামাদ; বার্তা সংস্থা এএফপির হোয়াইট হাউস ফটো সাংবাদিক। ‘না’ বলাটা এখনো শিখে উঠতে পারেননি হয়তো। সে কারণেই প্রেসিডেন্টকে নিয়ে শিকাগো থেকে এয়ারফোর্স ওয়ান হোয়াইট হাউসের পথে উড়াল দেওয়ার আগেই লেখাটা পাঠিয়ে দেন ঠিকঠাক। সঙ্গে তাঁর নিজের তোলা অসাধারণ সব ছবি।
১০ নভেম্বর, ২০১২। জুয়েল সামাদের লেখা ও ছবি নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘ছুটির দিন’-এর প্রচ্ছদ প্রতিবেদন—‘বিজয়ক্ষণে বারাক ওবামার সঙ্গে’।
সেবারই প্রথম নয়। এই আলোকচিত্রী আমাদের এমন অনুরোধ রেখেছেন একাধিকবার। কিন্তু জুয়েল সামাদ কীভাবে পৌঁছে গেলেন হোয়াইট হাউস অবধি? কীভাবে হয়ে উঠলেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষটির নিত্য সহচর? জানা যাক সেই কাহিনি।
একের পর এক গুলি বেরিয়ে যাচ্ছে কানের পাশ দিয়ে। চারপাশে দাউ দাউ আগুন। মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে ধরণি। এসবের মধ্যেই জীবন বাজি রেখে ছুটে চলেছেন অকুতোভয় এক বাংলাদেশি যুবক। গল্প-উপন্যাসের পাতায় এমন দুঃসাহসী ‘চিরনবীন’ বাংলাদেশি তরুণের খোঁজ মেলে। কিন্তু বাস্তবে?
হ্যাঁ, ইরাকে যুদ্ধের ময়দানে, আফগানিস্তানে ক্যামেরা হাতে ‘অবিশ্বাস্য’ সেই লড়াইটায় লড়েছেন জুয়েল সামাদ।
তবে, সেই যুদ্ধই প্রথম নয়। জুয়েলের জীবনের শুরুটাই হয়েছিল অন্য এক ‘যুদ্ধ’ দিয়ে।
পুরান ঢাকায় কেটেছে জুয়েলের শৈশব। জন্মের এক মাস পর থেকেই দাদা-দাদির কাছে মানুষ। বাবা আবদুস সালাম নিজেও ছিলেন আলোকচিত্রী। সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা মারা যাওয়ার পর অকূল পাথারে পড়ে জুয়েলদের পরিবার।
জুয়েল তখন ক্লাস নাইনের ছাত্র।
১৯৯৩ সাল। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল হয়েছে। ছয়টা লেটার নিয়ে পাস করেছেন জুয়েল। বন্ধুবান্ধব কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু জুয়েলকে নামতে হলো চাকরির সন্ধানে। এগিয়ে এলেন ডেইলি মর্নিং সান পত্রিকার প্রধান আলোকচিত্রী আবু তাহের। তাঁর সহায়তায় শুরু হলো ডেইলি মর্নিং সান-এর ডার্করুমে কাজ শেখার পালা। একটা পেনট্যাক্স ক্যামেরা নিয়ে জুয়েল নিজেই শুরু করলেন ছবি তোলার কাজ। পরে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করলেন। ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে জুয়েলের চাকরি হয়ে গেল জনকণ্ঠ পত্রিকায়।
এরই মধ্যে আরেক ঘটনা। বার্তা সংস্থা এএফপির বিশ্বজোড়া খ্যাতির কথা কে না জানে। এএফপির দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান জন ম্যাকডুগ্যাল এলেন ঢাকায়। জনকণ্ঠ পত্রিকায় একটা ছবি দেখে দারুণ পছন্দ হয় জনের। ওই ছবির আলোকচিত্রী ছিলেন জুয়েল সামাদ। ডাক পেলেন তিনি। ক্যামেরা হাতে দিয়ে তাঁকে বলা হলো, ‘তোমার হাতে মাত্র ৩০ মিনিট সময়, এর মধ্যে তোমাকে রিকশাচালকদের কিছু ছবি তুলতে হবে।’ জুয়েল ছবি তুললেন। তাঁর তোলা ছবি মনে ধরে গেল জনের। মনে যে ধরল, তার প্রমাণ—কয়েক দিন পর পেয়ে গেলেন বার্তা সংস্থা এএফপিতে কাজ করার প্রস্তাব।
সেই সুবাদে শুরু হলো ক্যামেরা কাঁধে জুয়েলের ‘মিশন’। পাকিস্তান, আফগানিস্তান ঘুরে ইন্দোনেশিয়ায় জুয়েল এলেন ব্যুরোপ্রধান হিসেবে। এরই মধ্যে ইরাক আর আফগানিস্তানে যুদ্ধের ময়দানে যেতে হয়েছে একাধিকবার। ২০০৮ সালের আগস্টে এল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ডাক। ওবামার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে অফিশিয়ালি দায়িত্ব পেলেন হোয়াইট হাউসে কাজ করার। তারপর এএফপির হোয়াইট হাউস ফটোগ্রাফার হিসেবে বারাক ওবামাকে ‘কাভারেজ’ করার দায়িত্ব। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্টের জনসমক্ষে উপস্থিতি মানেই বুঝে নেবেন, ক্যামেরা কাঁধে আশপাশেই আছেন বাংলাদেশের ছেলে জুয়েল সামাদ!

সুত্রঃ View this link
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×