এই দেশে সাধারণ মানুষ গনতন্ত্র বলতে বোঝে শুধু ভোট দেয়া। বিগত ২০০৮ এর পর থেকে এটাও নাই। জীবনে প্রথম বারের মত ২০০৮ সালে ভোট দিলাম, কিন্তু তারপরে ২ টা উপজেলা নির্বাচন, একটা জাতীয় নির্বাচন, এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন গেল। কিন্তু আমার ভোট ছাড়াই সব পাশ। থুক্কু আমি নিজে না দিলেও, আমার ভোটখানা যে পড়ছে তা ঠিকই খবর পেলাম। ভালোই হল, এদেশে এতদিন গণতন্ত্র নামক যে ভুয়াতন্ত্র চলতো, তা এখন আর ভুয়াতন্ত্র না, এক্কেবারে স্বৈরতন্ত্র। এরশাদ নাকি স্বৈরাচার ছিল, তা শুনেছি। দেখি নাই। কিন্তু এখন যে স্বৈরাচার আছে তা খুব ভালো ভাবেই দেখছি। পরিষ্কার স্বৈরতন্ত্র। এক আজব চিজ মার্কা গনতন্ত্র {স্বৈরতন্ত্র}।
সংবিধানে সুযোগের সমতা আছে, কিন্তু বাস্তবে নাই। হয় দলের ট্যাগ থাকে, নতুবা থাকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নামের এক আজব ট্যাগ। এদেশে যে আছেটা কি তাই মাঝে মাঝে ভাবি। আছে, অনেক নেতা, অনেক মুক্তিযোদ্ধা, অনেক চোর। নেতা রপ্তানি করা গেলে তো এদেশের রপ্তানি আয় তিনগুন বাড়ত। প্রতি ওয়ার্ডে নেতা আছে কম করে হলেও ৩০ জন। তাহলে প্রতি ইউনিয়নে আছে কমপক্ষে ২৭০ জন। এভাবে সম্ভবত ৩০ লক্ষ নেতা আছে দেশে , এরা পদবি যুক্ত। আর পদবি ছাড়া আছে আরও প্রায় ১৫ লক্ষ নেতা। কি আজব দেশ, প্রতি ৩০/৩২ জনের এক নেতা। কি আজব চিজ দেখাইল ওপরওয়ালা।
ছাত্রনেতা বলতে গেলেতো ক্লাসের যত ব্যাকবেঞ্চার আছে এখন তারাই। থুক্কু এরা ব্যাকবেঞ্চারও না। ব্যাকবেঞ্চার হতে গেলেও ক্লাস করতে হয়। মদ যাদের টেবিলের ওপরে থাকে। জুয়া কি তাদের পেশা না নেশা ঠিক বোঝা যায়না। ঠিকমতো নিজের নামের বানান পারে কিনা সন্দেহ। আহা, এরাই জাতির ভবিষ্যৎ এম্পি, মন্ত্রী। এদের কাছেও যেতে হবে । আফসোস তো এখানেই। আমার ক্লাসমেট আছে কয়েকজন, তাদের দেখেই বললাম। কি চিজ রে ভাই।
কতকিছুই নে দেখলাম এই দেশে। অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া {পাশ করুয়া না} একজন ছিল থানা ছাত্রসংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক। এদের পরিবারে কলেজ পড়ুয়া ছিল কিনা জানা নেই। লতায় পাতায় পেঁচানো ইনার দাদা আবার ছিলেন মন্ত্রী। পদ টা তাই পেলেন আর কি। একদিন দেখলাম , ইনি মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন, কলেজের ভেতর দিয়ে, আর কলেজের ছাত্ররা তার পেছনে। ছাত্রগুলাও ইদানিং আবাল শ্রেণীর হয়ে গেছে। মানুষও চিনেনা। কোন জাতের চিজ হল এই ছাত্রগুলা বুঝিনা।
এখন তো গ্রামে গেলে চিপায় চাপায় যত আণ্ডা বাচ্চা পলাপাইনের {বয়স হয়তো ১৭/১৮ হবে} পোস্টার দেখি। খেলা উপলক্ষে নিজের নিজের খোমা দেখাতে পোস্টার ছাপাইয়া রাস্তার ওপর রাখছে। দেশের এম্পি, মন্ত্রিদের নামেও এত ব্যানার পোস্টার দেখা যায়না। পরিচিত একজনের কম্পিউটারের দোকানে দেখছিলাম এই আণ্ডাবাচ্চা গুলারে। নিজের নামে ব্যানার করতে এদের যে কত আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এইত সেদিনও যে পোলারে দেখলাম লেংটা হয়ে হাঁটতে, এখন তার পোষ্টারে লেখা দেখি অমুক ভাই। ভাইয়ের অভাব নাই দেশে, বড় ভাই, ছোটভাই তো পাড়ামহল্লার ছোট রেস্টুরেন্টের সিঙ্গারার মত। কে যে কার বড় ভাই, ছোট ভাই তাই বুঝিনা ঠিকমতো। এক আজব চিজ মার্কা ভাই।
এরকম আজব যত চিজের পয়দা হইছে এই ডিজিটাল দেশে। এই চিজেগো জ্বালায় শরীরডা কিড়মিড় করে। মাঝে মাঝে মঞ্চায়, এই চিজ গুলারে ধইরা ধইরা আছাড় মারতে পারতাম, তাইলে বুঝি আমার প্রানডা জুড়াইত।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭