জীবনটা যেন কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। বাবা-মায়ের সাজানো স্বপ্নগুলো কেমন যেন দিন দিন ঝাপসা থেকে আরো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। কোথায় আমার সেই নরম স্বভাব। কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে লজ্জ্বায় লাল হয়ে থাকার সময়। একটা কথার পিঠে আর একটা কথা বলতে ভয় পেতাম। সভ্য ছেলে বলে এলাকায় বেশ প্রসিদ্ধ হয়ে গেছিলাম।
একটা সময় ছিল যখন স্বপ্ন দেখতাম নিজের একটা ছোট ঘর থাকবে। লাল টুকটুকে বউ আর আমার ছোট্ট একটি সন্তান। সুখের ঘরে রাজত্ব করে যাব আমরা তিনজন।
কিন্তু চে আমাকে সুখে থাকতে দিচ্ছে না। তার চেতনা আমার মনের ভেতর কবর হয়ে যাওয়া প্রতিবাদ নামক ভাইরাসের সংক্রমন ঘটাচ্ছে। আস্তে আস্তে ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের বংশানুক্রমিক সহ্য ক্ষমতা। সবুরে নাকি মেওয়া ফলে। এই সবুর নামক শব্দটি আস্তে আস্তে মুছে যেতে চাচ্ছে। ভয় পাচ্ছি, যদি আমার মেওয়া না ফলে।
ভালোই ছিলাম। যখন আমার জীবনে চে ছিল না। সুখে ছিলাম। শান্তিতে ছিলাম। হাবীব , বালামের গানের সাথে স্বপ্ন দেখতাম। আর নিজেকে নিয়ে ভাবতাম। একটু সময় পেলে দেশ। আর এখন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। চে তুমি কি শুনছো আমার কথা। তুমি আমাকে ভালো থাকতে দিচ্ছ না। বারবার কানে ভেসে আসছে চে স্মরন সভার এই গানটি
ভাবতাম পড়াশুনা করে বিদেশে যাব। সেখানে অনেক টাকা বেতনের চাকুরী করে গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াব। কিন্তু আজ দেশ ছাড়তে মন চায় না। দেশের জন্য কিছু করতে চাই। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের সাথে নয়।
কতই বা আমার বয়স হয়েছে। কেন আমি এই অল্প বয়সে এই সব কথা ভাবছি। সবেমাত্র ইউনিভার্সিটিতে প্রবেশ করে কোথায় আমার দেখা স্বপ্নগুলোকে সত্যি করার চেষ্টা করব। কোন মেয়ে বন্ধুর সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা, রাতের পর রাত আড্ডা দেব।
স্কুল-কলেজ জীবনে ভেবেছি এখন প্রেম করব না । আগে আমার ক্যারিয়ারটা গড়ে নিই তারপর প্রেম। মেয়েদের থেকে দূরে পালিয়ে থাকতাম। অনেকে এই সুযোগে আমাকে লেডিস বলে সম্বোধন করতেও ভোলেনি। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম একদিন সবাইকে দেখিয়ে আমিও প্রেম করব।
কিন্তু আমার চিরদিনের শত্রু চে তা হতে দিচ্ছে না। ভালোলাগেনা ঘন্টার পর ঘন্টা টেলিফোনে কয়বার খেলাম বলতে, যখন আমার পাশের বাড়ির কেউ হয়তবা না খেয়ে দিন পার করে দিচ্ছে। ভালোলাগেনা দামি রেস্তোরায় বসে আড্ডা দিতে , যখন ১টা টাকার জন্য তীব্র রোদে কোন মা চিৎকার করে বলছে তার কোলের শিশুর অসুখ। ডাক্তার দেখাতে পারছেনা টাকার অভাবে।
চে তুমি আমাকে মুক্তি দাও। আমাকে শান্তিতে থাকতে দাও। আমি তোমাকে ঘুনা করি। প্রচন্ড ঘৃনা করি।
[যারা চে গুয়েভারাকে চেনেন না তাদের জন্য এই লিংকটি]
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৩:০৭