somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনপুরায় সাইক্লিং ট্যুর - একটি ছবি ব্লগ

১৪ ই মার্চ, ২০২০ রাত ২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভোলা জেলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরা সাইকেল চালিয়ে ঘোরার জন্য দারুন জায়গা। মেঘনা নদীর মোহনায় এই দ্বীপটি এখনো সেভাবে বানিজ্যিক ট্যুরিষ্ট প্লেস হয়ে উঠেনি। দিগন্ত বিস্তৃত নদীর ধার ঘেষে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট, সবুজ ফসলের ক্ষেত, সহজ সরল মানুষজন আর অসাধারন সুর্যোদয় আর সুর্যাস্ত দেখার সুযোগ- এই সব মিলিয়ে আপনার দুই থেকে তিন দিনের জন্য দারুন ভ্রমনের জায়গা হতে পারে মনপুরা। মাসখানেক আগে কয়েকজন সাইক্লিষ্ট বন্ধুদের নিয়ে গিয়েছিলাম দু'দিনের জন্য। দারুন সময় কেটেছে।

কিভাবে যাবেন: ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ফারহান আর তসরিফ লঞ্চ মনপুরা হয়ে হাতিয়া যায়। বিকেলে ছ'টায় লঞ্চ সদরঘাট থেকে যাত্রা করে ভোরে মনপুরা পৌছায়। ভাড়া পড়বে ডেক- ৩০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন-১২০০, ডাবল কেবিন-২২০০ এবং ভি আই পি কেবিন-৫০০০ টাকা।

কোথায় থাকবেনঃ থাকার জন্য মনপুরার হাজি বাজারে বেশ ক'টি হোটেল রয়েছে। হানিফ হোটেল (এখানে আমরা ছিলাম), সীমা হোটেল, হোটেল দ্বীপ এ থাকতে পারেন। হোটেল বলতে আসলে যা বোঝায় ঠিক সেরকম না। বেসিক থাকার জায়গা। খাট, টেবিল-চেয়ার, শাওয়ার সহ এটাচ্‌ড বাথ এইতো। ভাড়া ও খুব কম। ৫০০-৮০০ টাকার ভিতর। এছাড়া উপজেলা ডাকবাংলো আছে। আগে থেকে ফোন করে থাকা যায় যদি খালি থাকে। গুগল সার্চ করলে ফোন নাম্বার পেয়ে যাবেন।

কোথায় খাবেনঃ হাজি বাজারে খাবার বেশ ক'টি হোটেল আছে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী খাবেন। খুব আহামরী কিছু না কিন্তু রান্না ভালোই। সামুদ্রিক মাছ থেকে শুরু করে গরু, মহিষ, মুরগি সবই মিলবে। খাবারের দাম ও খুব কম। ওহ্‌ মহিষের দুধের দই খেতে এবং নিয়ে আসতে ভুলবেননা।

কি দেখবেনঃ
দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের ম্যানগ্রোভ ফরেষ্টঃ বিশাল মেঘনার ধার ঘেষে রাস্তা চলে গেছে দক্ষিন সাকুচিয়ায়। নদীর পাড় ঘেষে রয়েছে কেওড়া বন। ভাগ্য ভালো থাকলে হরিনের দেখা পেতে পারেন। এই রাস্তা ধরে সাকুচিয়ার একদম শেষ মাথায় যেখানে মেঘনা মিশেছে বঙ্গোপসাগরে সেখানে দেখা মিলবে সমুদ্র সৈকত। সাইকেল চালানোর জন্য হাজি বাজার থেকে সাকুচিয়ার এই শেষ মাথা প্রায় ২০ কিলোমিটার খুবই আদর্শ। একদম সমতল পিচ ঢালা রাস্তা, গাড়ি ঘোড়ার ভিড় নেই, এক পাশে সাগরসম নদী, সবুজ কেওড়া বন, ফসলের ক্ষেত, সব মিলিয়ে সাইকেল ট্রিপের জন্য দারুন।

ল্যান্ডিং ষ্টেশনঃ এটি ছিল মুল লঞ্চ ঘাট কিন্তু নদীর এই অংশে নাব্যতা কমে যাওয়ায় এটি বড় লঞ্চের জন্য ব্যাবহৃত হয়না। সন্ধায় সুর্যাস্ত দেখার জন্য দারুন জায়গা।

চৌধুরী প্রজেক্টঃ দীঘি, নারিকেল বাগান আর শীতের পাখি মিলিয়ে সুন্দর জায়গা। ভাঙ্গনের ফলে আগের চেয়ে অনেক ছোট হয়ে গেছে এই প্রজেক্ট।

এছাড়া নদীর মাঝখানে জনমানবহীন একটি চর আছে যেখানে গড়ে উঠেছে বিরাট ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট। নৌকা ভাড়া করে সেখানে ঘুরে আসতে পারেন এবং দেখা পাবেন হরিনের। আমরা যাইনি।

দ্বীপের মানুষজন খুব সহজ সরল। আমরা সাইকেল চালাতে চালাতে বিভিন্ন জায়গায় থেমেছি, ছাপড়া চায়ের দোকানে বসেছি, মানুষজন খুব আগ্রহ নিয়ে কথা বলেছে, পথ দেখিয়ে দিয়েছে, পানি খাইয়েছে। আপনার ভালো লাগবে বাহুল্য বর্জিত সহজ সরল মানুষগুলোর সাথে দু' দন্ড কাটাতে। ছবি সব মোবাইল দিয়ে তোলা তাই রেজ্যুলশন হয়তো খুব একটা ভালো হয়নি।

মাঝরাতে লঞ্চের ছাদে



ভোরের সৌন্দর্যে বিস্মিত আমরা



আমাদের সাইকেল



হোসেন মোল্লার জীবন তরী



এই সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়



বিস্মিত এই দুই ভাই ভোরে সাইকেল সমেত আমাদের দেখে খুব অবাক



নদীর ধারে সুর্যোদয় দেখে এবার ঘাট থেকে হাজি বাজারের উদ্দেশ্য রওনা



যেতে যেতে ছোট একটি বন



আলোর খেলা দেখতে একটু থমকে দাঁড়ানো



সুর্য উঠছে



আবার পথ চলা হাজি বাজারের উদ্দেশ্যে



ভোর হচ্ছে



হোটেলে ব্যাগ রেখে দক্ষিন সাকুচিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা



পথ ভুলে হঠাৎ করেই নদীর ধারে



উৎসুক ক্ষুদে দর্শকগন



সাকুচিয়ার পথে



ম্যানগ্রোভ বনের ধারে একটু বিশ্রাম



হরিনের খোজে (দেখতে পাইনি যদিও, ভোরে যেতে হয়)



একটু বিশ্রাম ও ফটো সেশন



সাকুচিয়া বীচের পথে যাওয়ার সময়



সাকুচিয়া বীচ



সাকুচিয়া বীচে আমরা



বীচ থেকে ফিরে চলা



জোয়ারের অপেক্ষায়






মনপুরা ল্যান্ডিং ষ্টেশন থেকে সুর্যাস্ত



স্রষ্টার উদ্দেশ্যে অবনত (ল্যান্ডিং ষ্টেশন)



দুজনে দুজনার (ল্যান্ডিং ষ্টেশন)



ফিরতি লঞ্চের অপেক্ষায়



অথৈ জলে মাছ ধরা



মেঘনার বুকে একটি সুররিয়েলিষ্টিক সন্ধ্যা



উইড়া যায় বক পক্ষী (নাকি কাক)



নৌকা খানি দেখতে পাও?



সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৩:০৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×