somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জানটুপুটুটা !:#P

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি নাকি নিজেকে খুব ইম্পর্টেন্ট মনে করি।:| আমার নাকি অনেক অহংকার।/:) আমি যা চাই, তা আমার চাইই - এমনি আমার হতচ্ছাড়া জেদ:-/। আরো হাজারো বিশেষণে আমি বিশেষায়িত আমার শুভাকাঙ্খিদের দ্বারা :)। খুব একটা ভুল তারা বলেন না শুধু অহংকার এর ব্যাপারটা ছাড়া। অহংকার বিশেষণটা বোধকরি আমার স্ট্রেইট-ফরোয়ার্ড কথা বলার যে দোষটা আছে তার কারণে অর্জিত B-)। তো একদিন আবিষ্কার করলাম.. নিজের অজান্তেই একজনের কাছে আমি প্রতি পদে পদে হার স্বীকার করছি। তার প্রতিটি চ্ওায়ার কাছে নিজের চ্ওায়াকে বলি দিচ্ছি। তার ইম্পর্টেন্স-এর কাছে নিজের অস্তিত্ব বিলীন। আর এই যে এতসব হচ্ছে তাতে আমার একট্ওু দুঃখ হচ্ছেনা। বরং ভালো লাগার দোলায় দুলছি প্রতি নিয়ত। তার প্রতিটি অন্যায় চ্ওায়াকে পারমিট করার পর তার বিজয়ী মুখের স্বর্গীয় হাসিতে আমার প্রান-সমুদ্রে ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ ওঠে।.. .. .. সে আমার রাজকন্যা.. আমার জানটুপুটুটা.. আমার ময়না পাখিটা.. আমার টুনটুসোনাটা.. আমার বুলবুলিটা.. আমার মা.. আমার সারাহ্; যে আর কিছুদিনের ভেতর তার জীবনের তৃতীয় বছরের সাম্রাজ্যে ঢুকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দিন-রাতের প্রতিটা মুহূর্ত সে আমার অন্তর জুড়ে। তার কথা, তার ভঙ্গিমা, তার ছলা-কলা মনে করে সর্বক্ষন পূর্ণ আমার এ মন চায় সারা বিশ্বের সবকটি হাই্ওয়েতে আমার রাজকন্যার বিলবোর্ড টানাতে। তার আহ্লাদ নিয়ে আমার আহ্লাদ করতে ইচ্ছে করে সবার সাথে।!:#P

২০০৮ এর ফেব্রুয়ারী। আমার ভিতরে কেমন অদ্ভুত এক অস্থিরতা কাজ করে। কোথ্ওা শান্তি পাইনা। অস্থিরতাটা এমন যে আমার সামনে এস.এস.সি-র মতো খুব গুরুত্বপূর্ন পরীক্ষা, অথচ আমার পড়া কমপ্লিট হয়নাই :|। এক বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করার পর সে বললো আমি নাকি কনসিভ করেছি:-*। তার দৃঢ়তা দেখে অবশেষে মার্চ এর ১০ তারিখ ভোরবেলা চেক-স্ট্রিপ দিয়ে টেস্ট করে দেখি ঘটনা সত্যি।:#> কেমন অদ্ভুত এক অনুভ’তি - ভয় মিশ্রিত। তারপর একটি একটি করে দিন পার হয়। আর আমি বিশালাকার ধারণ করতে থাকি। আমার রাজকন্যা আমার ভিতর থেকেই প্রতি মুহূর্ত জানান দিতো সে আসছে। কখনো আমার পেট-টাকে সম্পূর্ন একদিকে করে ফেলতো; কখনো হাঁটু দিয়ে পেটের ঠিক মাঝখানটা উঁচু করে দিত; সারাক্ষন ব্যস্ত আমার পেটের আকৃতি চেঞ্জ নিয়ে। খুব মজা লাগতো আমার। কখনো সে হয়তো ঘুমিয়ে যেতো। তার নড়াচড়া না পেয়ে আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হলে সে জেগে বলতো ”মা আমি ভালো আছি তো।” এখন অবশ্য সে কথা বলে থার্ড পারসন দিয়ে। যেমন ”সারাহ লিখবে তো, সারাহ বাইরে যাবে” ইত্যাদি।

তারপর সেই কাঙ্খিত দিন। হাসপাতাল থেকে ডেট দিলেও আমিই তাকে পৃথিবীতে আনার দিন নির্ধারণ করলাম। ২০০৮ এর ১৩ অক্টোবর, সোমবার। আমি আলট্রাসনো করে জেনে নেইনি সে কোন সত্বা নিয়ে আর্বিভূত হবে। শুধু মনে প্রানে একটি রাজকন্যা চেয়েছি। আমার রাজকন্যার এই পৃথিবীতে আগমন বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে। ডাক্তার ওকে ওর নান্নাহ-র কোলে দেয়ার সময় বললেন ”আপনাদের মেয়ে ফোর-টুয়েন্টি” B-)। আনন্দের বন্যা বইয়ে দিলো সে। কারণ সবাই একটি রাজকন্যা পাবার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলো। সেদিন হাসপাতালে জন্ম নেয়া সব কটি শিশু ছিলো ছেলে। আমার রাজকন্যা জন্মলগ্নেই বোধ করি বুঝিয়ে দিলো এই চরাচরে তার আধিপত্যের বিস্তার।


তার প্রথম ছবি।


প্রথম সে তার নান্নাহ-কেই চিনেছে। আজো সে প্রতি নিয়ত অস্থির হয় তাঁর জন্যেই।


বাসায় ফিরে প্রথম পোশাক ছিলো দাদুভাই-এর পুরোনো লুঙ্গি দিয়ে দিদার হাতে বানানো নেংটি। আমার মনে হয়েছিলো ও বুঝি লুঙ্গি পরেই আছে।


ক্ষিদা লাগলেই অস্থির হয়ে যেত আমার জান-বাচ্চাটা। আজো হয়। ওর কান্না ভিডিও করার জন্যে ওর ক্ষিদার সময়টাই বেছে নিয়েছিলাম। বড় হয়ে ভিড্ওিটা দেখলে আমাকে নিশ্চয়ই খুব নিষ্ঠুর ভাববে।


সারারাত জেগে থেকে দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটানো - এই ছিলো তার প্রথম তিন মাসের রুটিন।


বড় হতে হতে ঘুমের স্টাইল-এও এলো ভিন্নতা।


প্রথম উপুড় হ্ওয়া।


প্রথম ন্যাড়া হ্ওয়া। এই নাপিতের কাছেই সে এবার ঈদে সেকেন্ড টাইম ন্যাড়া হয়েছে। পারিবারিক নাপিত। :)



বাবার সাথে ছোটবেলা থেকেই খুনসুটি। তখন থেকেই বাবার কলমের দিকেই তার তীক্ষè নজর।


হাঁটতে শেখার পর এক দন্ড স্থির থাকেনা সে।



পদ্ন পুকুর, আকাশ সবকিছুই তার অতি প্রিয়। বৃষ্টির সময় মেঘের গর্জন প্রথম দিকে তার ভয়ের কারণ হলেও এখন ঠিক হয়ে গেছে। এখন মেঘ ডাকলে সে নিজেই বলবে ”মা, কোন ভয় নাই”। প্রেসার কুকার, ব্লেন্ডার এসবের শব্দগুলিতে যদি এখন্ও ধাতস্ত হয়নি।


প্রথম জন্মদিন।



তার বৈশাখ উদযাপন।


জার্নিতে সে সবসময়ই তরতাজা (মাশাআল্লাহ)।


তার ডল-গুলোকে এভাবেই আদর করে ঘুম পাড়ানো হয়। ”সারাহ ঘুমালো, পাড়া জৃড়ালো, বগ্গী এলো দেসে”। আমাক্ওে সে কপালে হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়ায়। তখন বলে ”মা ঘুমালো.. .. ..”।


আমার মডেল কন্যা।


আমার তোলা - আমার প্রিয় ছবি।

আমার প্রিয় ব্লগ বন্ধুদের দোয়া আমার রাজকন্যার চলার পথের পাথেয় হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:০৪
৬২টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×