অনেক কষ্ট বুকে লইয়া আজ রহিম শেখ এই দুনিয়াকে বিদায় জানাইবার সিদ্ধান্ত লইলো। তাহার ছোট কন্যাটির পর তাহার স্রী স্বর্গগত হইলে রহিমের আর বাচিবার কোন ইচ্ছা রহিলো না। কি করিবে সে বাচিয়া থাকিয়া? এই দুনিয়া তাহাকে কি দিয়াছে? নির্মম লজ্জা আর ব্যথা ব্যতিত আর কি পাইয়াছে রহিম? আজ থেকিয়া এক দশক আগে বিবাহ হয় রহিমের আলতানগর গ্রামের সকিনা বেগমের সহিত। সকিনা বড় ভালো মেয়ে আছিল। কিন্তু তাহার বাপ আছিল বড়ই চন্ডাল পকৃতির মানুষ। রহিমকে সে এক টেকা পণ দিতে অস্বীকার করিল। রহিম ভালো পোলা সেও বাধিলো না। কিন্তু বিবাহের নবম মাসে দেবী মনসার কাল কেউটে পরাণ নিল সকিনার। পোয়াতি আছিলো মায়াখান। কিন্তু কি আর করিবে রহিম শেখ তাহার কপালে সুখ আর জোটে না। তিন দিন কন্দা-কাটি কইরা আবার হাল ধরিতে গেল রহিম। এইবার তাহার চোখে লাগিল কুলসুম বানুরে। তার গ্রামের মাইয়া কুলসুম। দেখতে একদম হুরপরীর লাহান কিন্তু রহিমের ভাগ্যে সুখ নাই। উহাকে মনে লাগিবার তিন্দিনের মাথায় কুলসুম কে জমে টানিল। এইবার মা ওলা। কি আর করিবে দুর্ভাগা করিম? তাহার পর দুই বৎসর কাল জেল খাটিল রহিম স্বদেশী করিয়া। ফিরিয়া আসিল আর এক জেলুরে আলতা বেগমরে লইয়া। তাহাদের সুখের সংসার চলিতেছিল। গতকাল আলতা মরিল। গলায় দড়ি দিল। ছোট কন্যার বিদায় আর সহ্য হয় নায় আলতার। আর রহিম ভাবিল সে জলে ডুবিবে। পারিল না। অভাগা রহিম প্রেমে পরিল আবার এইবার পরিল মায়ের প্রেমে। রহিম শেখ ঘর ছারিল বাড়ি ছাড়িল। কি হইবে উহা দিয়া। গেরুয়া পরিয়া সে বাহির হইলো মায়ের বন্দনায়। রহিম পাগলের নাম এখন সারা দুনিয়া জুরিয়া। কেউ এখনো বলিতা পারে নাই রহিম কাহার প্রেমে পড়িল? কালী মা না দুর্গা মা? আমরা রহিমের মাতৃভক্তিকে অবঙ্গা করি নে। কিন্তু ভাবি ওই মা এই সুজলা সুগলা সশ্য শ্যমলা বাংলা মাতা নহে তো? রহিম পাগাল এখন বিখ্যাত। ভীরভুমে গিয়া একবার দেখিয়া আসিও অভাগা রহিমের সারে তিন হাতের ঘর। মায়ের ছেলে মায়ের কোলে ঘুমায়...
মা রে তোর ডাক শুনে আর থাকিতে পারি নে
ও আমি আর পারিনে তোর কোল থে দুরে রে.....................
রহিম মায়ের কাছেই রহিয়াছে।