somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রেজাউল করিম সাগর
হাড্ডি খিজিরের মত ঠোঁটকাটা হইতে চাই শেষমেশ ওসমান অরফে রঞ্জু হয়াই দিন কাটে। রোগা শালিকের বিবর্ণ ইচ্ছা কী আছিলো সেইটা অনুভব করার খুব শখ আছিলো, জীবনদা তো আর নাই। তার কথা মনে হইলেই শোভনার ব্যর্থ প্রেমিক, লাবণ্যের ব্যার্থ স্বামী মনে হয়।

প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ এবং সাফল্যের এজেন্টগণ

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





কবি জীবনানন্দ দাশের মত সফল হইতে পারার সামান্য ইশারাও যদি পাই তাইলে আমি সবকিছু ছেড়ে দিয়ে রাস্তার ফকির হয়ে যাইতে রাজি আছি। যারা তারে ব্যর্থ বলেন তাদের ল্যান্সে দেখলে আপনেও তারে ব্যর্থ, হতাশ ছাড়া কিছুই ভাববেন না। এই ল্যান্সটাতো হইলো বর্তমান সময়ের মোটিভেশন ব্যাবসায়ীদের চোখ কিংবা তথাকথিত অর্থবিত্ত-চাকরি-ক্ষমতার প্রতি লোভ আর এইসব ভোগ করে আত্মশ্লাঘায় ভুগতে থাকা লোকজনের চোখ।
.
জীবনবাবুর পরে বাংলা ভাষায় যত মানুষ কবিতার একটা লাইনও লেখার চেষ্টা করছে তারাই বুঝবে জীবনবাবু আসলেই কী আছিলেন!
জীবিতাবস্থায় তরুণ কবিদের কোনরকম পত্রিকার সম্পাদক, কোন সাহিত্য গোষ্ঠীর নেতা না হইয়াও যেভাবে আকর্ষণ করছেন এবং মৃত্যুর এই এত বছর পরেও এত এত লোকজন যে তার কবিতায় খায়, ঘুমায়, বাইচা থাকে; তার কবিতার নেশায় ডুইবা থাকে তার মাঝে কী কাউরে ডাইকা বলা লাগছে যে আমি জীবনানন্দ আপনেরা আমার কবিতা পড়েন? কিংবা এমন কোন দল/সংগঠন কী আছে যারা জীবনানন্দরে প্রমোট করছে? কিংবা সরকারিভাবেই তার জন্ম-মৃত্যু দিবসে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তীর মত কোন অনুষ্ঠান কিছু আছে? নাই। তারপরেও সবাই এরকম পাগলের মত এই ব্যর্থ হতাশ কবির কবিতা পড়ে কেন? যদি পড়েই থাকে সেইটা নিশ্চই শুধুমাত্র তার কবিতার টানেই! একজন কবি কবিতা লেখা ছাড়া আর কিছু না করেই, কোন সাপোর্ট না পেয়েই এই সময়ের লোকজনরে নিজের কবিতার দিকে যদি এভাবে মোহগ্রস্ত করে রাখতে পারে, সেই কবিরে আপনি তার ব্যক্তিজীবন দিয়াই খালি লুজার ক্যাম্নে বলেন মিঞা! আপনে নিজেই তো একটা বিরাট লুজার যে এমন প্রভাবশালী এমন মদির নেশায় ডুবায় রাখা কবিরে চিনতে পারলেন না, ব্যর্থ বলে চালায় দিলেন!
.
আবার রবীন্দ্র-নজরুলের ধর্মীয় পরিচয় নিয়া, হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়া, আল মাহমুদের অবস্থান নিয়া যখন কেউ আমারে কেউ কিছু বলে আমার উত্তর হয় যে একজন কবিরে যখন আপনে বিচার করতে যাইবেন তখন তার কবিতা দিয়াই বিচার করা উচিত। রবীন্দ্র-নজরুল ধর্মপ্রচার করেন নাই, কবিতা লিখছেন। জীবনানন্দও শুধুমাত্র একজন কবিই, পার্টটাইম কবি না, ফুলটাইম কবি। যেইজন্য অন্য আলবাল কিছু তারে দিয়া হয়নাই। হুমায়ূন আহমেদ, আল মাহমুদের বেলাতেও পার্থক্য নাই কোন।


.
এই জীবনানন্দ হয়তো কম খাইছেন, কষ্ট পাইছেন, শান্তি পান নাই, কিন্তু তার নিজের তৈরি যে কি একটা শান্তির জগত আছিলো! সেটা তিনি নিজে একলা ভোগ না কইরা কবিতায় উন্মুক্ত কইরা দিছেন! চারিদিকে বিরাট বিশাল ক্যাওসের মধ্যে থেকে আপনে তার এই আশ্চর্য জগতে ঢুইকা শান্তিতে আরামে, নির্লিপ্তিতে থাকতে পারবেন। আর এই নেশার টানেই তো আজকালকার অনেকেই দেখি এই আরামের ফাদে পইরা জীবনবাবুরে হৃদয়ের অধীশ্বর বানায় লইছেন! সাধে নেন নাই। আশর্য, আজব, মোহনীয় জগতের লোভেই।
.
জীবনানন্দ কইছিলেন -
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক; আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
.
আমিও মনে মনে সফলতার প্রতি এই নির্লিপ্তিটার মোহে পইরা যাই। গভীরভাবে অচল মানুষ হয়া থাকতে চাই। জীবনানন্দের মত, আমার প্রিয় মৃত্যুর জীবনদেবতার মত আমি ব্যর্থ হবার স্বপ্ন দেখি! আমার মতন পাগল অনেক আছে। তাইলে এইটা একজন কবির বিরাট সাফল্য না! একটাই আফসোস এইটা জীবনবাবু দেইখা যাইতে পারলেন না।
১৭-০২-২০২১
ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৭
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×