বনের মাঝে এক সিংহের সাম্রাজ্য । সেই সিংহের অধীনে এক বিড়াল কর্মরত । বিড়ালের দায়িত্ব কর্মদাতা সিংহের দুপুরে ঘুমোবার সময় পাহাড়া দেয়া যাতে বনের কোন ইদুর এসে সিংহের ঘুমের কোনো ব্যাঘাত না করে ।
নিজের কাজে অভিজ্ঞ বিড়াল খুব ভালো ভাবেই ইদুর তাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছিল । সিংহও বিড়ালের কাজে সন্তষ্ট হয়ে বিড়ালের বাৎসরিক এপ্রাইজাল ভালোই করত । চাইকি মাঝে মাঝে বিড়ালের ভাগ্যে দু-একটা চাপড়ও মিলত ।
দিনের পর দিন এভাবেই চলছিল । কিন্তু একদিন হঠাৎ বিড়ালের এক মাসের জন্য ছুটির প্রয়োজন হয়ে পড়ল । সিংহের কাছে ছুটি চাইতেই সিংহ বলল ছুটি দেয়া যাবে, কিন্তু তোমার অনুপস্থিতিতে ইদুর তাড়ানোর কাজটা করবে কে ?
বিড়াল বলল, বস, কোন চিন্তা করবেন না ; আমার অনুপস্থিতিতে একমাস আমার ছেলে ইদুর তাড়ানোর কাজ করবে ।
সিংহ বললো তথাস্থ ।
বিড়াল গেল ছুটিতে । ইদুর তাড়ানোর দায়িত্ব এখন বিড়ালের ছেলের । সে বয়সে তরুন । অনেক কর্মস্পৃহা আর উদ্দীপণা ভরপুর । সে ভাবতে বসল কিভাবে আরো ভালোভাবে ইদুর সমস্যার সমাধান করা যায় ?
দিন পনের পর বিড়ালের হটাৎ মনে হল আচ্ছা একবার দেখে আসা দরকার ছেলে কেমন কাজ করছে । এই ভেবে বিড়াল রওয়ানা হল বনের পথে । যেইমাত্র বনের কাছাকাছি গিয়েছে দেখে কিনা তার ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বন থেকে বের হয়ে আসছে ।
-কি ব্যাপার, তোর এই অবস্থা কেন, চাকরির খবর কি ? বিড়াল জানতে চায়।
বাবা, আমার চাকরি নট ।
-চাকরি গেল কেন ? কাজে ফাঁকি দিয়েছিলি নাকি ?
না বাবা, আমি কাজে কোন ফাঁকি দেই নাই । দিনরাত কাজ করেছি ।
- কিন্তু চাকরি নট হইল কেন ? কি করেছিস তুই ? উৎকন্ঠিত বিড়াল ।
তারপর বিড়ালের ছেলে বলতে লাগল তার কর্মকান্ড । "আমি ভেবে দেখলাম সিংহের গুহায় ইদুর আসে কোথথেকে ? নিশ্চ্য়ই বনের মধ্যে কোথাও ইদুরের বাসা আছে । তাই চিন্তা করলাম কোথায় কোথায় ইদুরের বাসা থাকতে পারে, সারা বন খুজে খুজে দেখলাম কোথায় কোথায় ইদুরের বাসা । আর সেইসব বাসার দূর্বল দিকগুলো খুঁজে খুঁজে বের করলাম । সে অনুযায়ী সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে একে একে ইদুর গুলোকে তাড়িয়ে দিলাম বনের বাইরে । ...... কিন্তু তারপরই সিংহ বস আমার চাকরি নট করে দিল । বলেই আবারো কাঁদতে লাগলো বিড়ালের ছেলে ।
হায়রে আমার গাধা ছেলে ... তুই করেছিস কি ? তোরতো চাকরি নট হবেই । তুই তো সমস্যার সমাধান করে ফেলেছিস । আরে গাধা ছেলে, সমস্যা না থাকলে কোন বস আমাদেরকে চাকরিতে রাখবে ।
যুবক বিড়ালদের জন্য কর্পোরেট শিক্ষা -১: কর্পোরেট জীবনে ক্যারিয়ার করতে চাইলে কখনোই কোন সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হয়না । সবসময় সমস্যা জিইয়ে রাখতে হয় । একান্ত প্রয়োজনে নিজেই সমস্যা তৈরী করে দিনরাত ব্যস্ত থাকতে হবে তা নিরসনের জন্য ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:১৭