somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।। সুন্দরবন রক্ষা করা প্রতিটি বাঙালির পবিত্র দায়িত্ব ।।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি রাষ্ট্র যখন ধ্বংসের চূড়ান্ত দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় তখন তার সকল যন্ত্রগুলো খসে পড়ে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ইংরেজদের কাছে বাংলার স্বাধীনতা লুণ্ঠিত হল। তারপর ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট দুষ্টুচক্রের কুবুদ্ধির হাত ধরে ভারত ভাগ হল। এই ভারত ভাগও সমস্যা মাথায় নিয়েই হল। ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ভাগের অসার থিউরি কিছু দিনের মধ্যেই ধরা পরল। শুরু হল ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ। পাশাপাশি পশ্চিম পাকিস্তান আর পূর্ব পাকিস্তানের জাতিগত, সংস্কৃতিগত, ঐতিহ্যগত এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে পূর্ব বাঙলার মানুষ একটি আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করল। আর দীর্ঘ নয় মাস অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, অসংখ্য প্রাণহানী, লাখ লাখ মা বোনের সভ্রমহানী, সম্পদ ধ্বংস, যাতায়াত ব্যবস্থা ধ্বংস ও গোটা দেশের সকল জনপদের চূড়ান্ত ধ্বংসের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হল একটি স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা অর্জনে আসলে চূড়ান্ত বিচারে সময় লেগেছে ২১৪ বছর। ২১৪ বছরের অসংখ্য আন্দোলন সংগ্রাম আর নিরবিচ্ছিন্ন প্রতিবাদের ফসল সেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
অথচ আমরা সেই স্বাধীনতার পর কি দেখতে শুরু করলাম? ধ্বংসস্থূপ থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য একটি দেশের যা কিছু প্রয়োজন, আমাদের তার কিছুই ছিল না। সাড়ে সাত কোটি জনগণ ছাড়া তখন সেই স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য আর কিছুই ছিল না। এই প্রসঙ্গে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন একটা কথা। সাত কোটি বাঙালি হে বঙ্গ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করোনি। রবীন্দ্রনাথ খুব দূরদর্শী মানুষ ছিলেন। জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলোতে তিনি এই কথা বলার স্পর্ধা দেখিয়েছিলেন। কথাটা বাস্তবিক অর্থেই সত্য। দেশ স্বাধীনের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ একটি টিমের নের্তৃত্ব দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু টের পেলেন, আন্দোলন সংগ্রাম করা, আর দেশ পরিচালনা করা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। নতুন দেশের সবচেয়ে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়াল আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা। ঘরে ঘরে মানুষের হাতে তখন অস্ত্র। যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, এবার তাদেরই একটা অংশ যুদ্ধে ব্যবহৃত সেই অস্ত্র দিয়ে ডাকাতি করা শুরু করলো।
সম্ভবত বঙ্গবন্ধু সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ছিল সেখানেই যে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। মানুষের হাতে হাতে যে অস্ত্র সেগুলো কঠোরভাবে তুলে নেবার পেছনে স্বয়ং প্রশাসনেরই তখন দুর্বলতা যেমন ছিল, তেমনি দলীয় লোকদের থেকে অস্ত্র তুলে নেবার ব্যাপারে কড়াকড়ি ছিল না। ফলে শুরু হল খুন, খারাবি, ডাকাতি, রাহাজানি। দেশ স্বাধীনের পরবর্তী বছরে ১৯৭২ সালে দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের চেয়ে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করাই ছিল বেশি জরুরী। ১৯৭০ এর নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছিল তাদের নিয়েই নতুন রাষ্ট্রের সকল আইন কানুন নিয়ম নীতি গঠন করা যেতো। অথচ ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারের মত নতুন একটি সমস্যা সংকুল দেশে স্বাধীনতার মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই একটি ব্যয়বহুল নির্বাচন পরিচালনা করা হল। দেশের প্রথম সেই নির্বাচনে কোন দল বিজয়ী হল তার চেয়ে বড় কথা সেই নির্বাচনের তখন কোনো দরকার ছিল কিনা? নতুন স্বাধীন দেশে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করার প্রথম উদাহরণ হয়তো সেই প্রথম সাধারণ নির্বাচন।
নির্বাচনে কি হল? গণ-পরিষদে যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন, প্রায় তারাই আবার সবাই পুনঃ নির্বাচিত হলেন। তারা তখন কি করবেন? আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন? সবার হাতে হাতে অস্ত্র রেখে কিভাবে দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন? ফলে আইন শৃঙ্খলার নাজুক অবস্থার মধ্যে এবং দলীয় স্বজনপ্রীতির জোড়ালো সম্প্রীতিতে দেশ তখন আবার একটি নতুন তালেবরদের হাতে চলে গেল। আপনি আওয়ামী লীগ করেন না, সো আপনার জন্য আইন কঠোর ভাবে প্রযোজ্য। আপনি আওয়ামী লীগ করেন, সো আইন আপনার হাতের মুঠোয়। এই নীতিতে বেশি ভালো ফলাফল পাওয়া যাবার কথা নয়। বাস্তবে ঘটলোও তাই। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, বন্যা ছাড়াও মানুষ সৃষ্ট দুর্যোগে বাংলাদেশ তখন দিশেহারা। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে তাই একটি ভয়াবড় দুর্ভিক্ষ হয়ে গেল। খাবারের সংকট থেকে যে এই দুর্ভিক্ষ হয়নি তা প্রায় সুস্পষ্ট। সম্পদ বন্টনের অসম ব্যবহার থেকেই সেই দুর্ভিক্ষের উৎপত্তি। এ বিষয়ে প্রফেসর অমর্ত সেন তথ্য প্রমাণ হাজির করে প্রমাণ করে অলরেডি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
সম্পদ লুটপাট করা, সম্পদ পাচার করা, কালোবাজারি, অঢেল সম্পদের মালিক হবার বাঙালির সেই প্রবণতা থেকেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আর উন্নতি হল না।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সেই সম্পদ লুণ্ঠনের কলকব্জা চলে গেল ১৯৭১ সালে পরাজিত কুচক্রীদের দোসর ও লালনপালনকারীদের হাতে। কিন্তু আইন শৃঙ্খলার কোনো উন্নতি কখনোই হয়নি। তারপর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসনে আবার তৃতীয় আরেকটি পক্ষ সম্পদ লুন্ঠনের সুযোগ পেল। সেই লুণ্ঠন থেকে দেশকে বাঁচাতে ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনে দেশের ছাত্র সমাজ আবার আন্দোলন করলো। কিন্তু আন্দোলনের ফসল কারা ঘরে তুললো? কতিপয় নব্য লুন্ঠনকারী। তারা পুরানা দুষ্টুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই দলে ভিড়ে গেল। তারপর শুরু হল গণতন্ত্র-গণতন্ত্র খেলা। সেই খেলার আড়ালে চলতে লাগলো সম্পদ লুন্ঠনে ভাগাভাগি। এখনো সেই ভাগাভাগির খেলা চলছে।
একবিংশ শতকে এসে নতুন যোগ হয়েছে পারসেন্টিজের হিসাব। কোন প্রজেক্টে কে কতো পারসেন্ট পাবে এই খেলা। সেই খেলার সর্বশেষ উদাহরণ পদ্মা সেতু প্রকল্প ও রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ। একটি দেশকে ধ্বংস করার জন্য এখন নব্য ও পুরানা মুখোশধারী সম্পদ লুটেরা জোটবদ্ধ। সুন্দরবন ধ্বংস করে হলেও তাদের লাভের সেই পারসেন্টেজ দরকার। আরে ভাই, বিগত ৪২ বছরে দেশের সম্পদ লুন্ঠন করে আপনারা অনেক কামাইছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম প্রধান ঢাল সুন্দরবনকেও তাই বলে ধ্বংস করতে হবে? আপনাদের তো মানসিক রোগের সমস্যা। আপনারা তো কেউ সুস্থ নয় রে। ক্ষমতার নামে আপনারা ১৯৯০ সালের পর যা যা করলেন, তা আসলে একটি স্বাধীন দেশের উন্নয়নের প্রধান বাধা। আপনারা আইন করে হরতাল বন্ধ করবেন না। আপনারা স্বাধীন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করবেন না। আপনারা একটি আধুনিক যুগোপযুগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়বেন না। আপনারা একটি দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা আদুনিক করবেন না। আপনারা সারা দেশে রেল সার্ভিস চালু করবেন না। আপনারা দেশের তেল গ্যাস লুন্ঠন করবেন। আপনারা দেশের কয়লা ধ্বংস করবেন। আপনারা দেশের বন্দর ধ্বংস করবেন। আপনারা যতোখুশি দুর্নীতি করবেন। যতোখুশি অর্থ সম্পদ বানাবেন। এই কারণেই কি আপনারা দেশের মানুষকে দিয়ে রাষ্ট্রটা স্বাধীন বানিয়েছিলেন?
আপনারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন না। জনগণের নিরাপত্তা দিবেন না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আধুনিক করবেন না। শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিক করবেন না। আর তলে তলে আপনারা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা উন্নত দেশের আধুনিক হাসপাতালে করবেন। নিজেদের ছেলেমেয়েদের বাইরে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করাবেন। আপনাদের মুখোশ কিন্তু খুলে গেছে। আর মুখে বড় বড় বুলি ঝাড়বেন? এটা কি মগের মুল্লুক নাকি রে ভাই?
সোজা কথা, সুন্দরবন ধ্বংস করে কোনো বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান আমরা চাই না। বিদ্যুৎ ৪২ বছরে ছিল না। আগামি ৫০ বছর না থাকলেও কিছু হবে না। কিন্তু একটা সুন্দরবন না থাকলে ঝড়, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের মানুষের আর কোথাও ঠাই হবে না। বাংলাদেশের ইতিহাস বলছে, প্রাকৃিতিক দুর্যোগের ফলে একশ্রেনীর অসৎ লোকের হাতে হঠাৎ করে টাকা পয়সা জমতে শুরু করে। সেই শ্রেণীটা কিন্তু সরকার, আমলা, চামচা, দালাল, এনজিও, মেম্বার, চেয়ারম্যান, ডিসি, এসপি, এমপি, মন্ত্রী সবাই। এরা তখন ত্রাণের নামে অনেক কামাই করেন। সুন্দরবন ধ্বংস হলে প্রতি বছর স্থায়ী প্রাকৃিতিক দুর্যোগের অজুহাতে ত্রানের নামে আরো লুটপাট করার একটা স্থায়ী বন্দোবস্থ করার এই পায়তারা বন্ধ করুন।
নইলে বাংলাদেশের মানুষ একদিন আপনাদের বিগত লুটপাটের সকল হিসাবের খাতা খুলে বসবে। তখন আর কেউ রেহাই পাবেন না। সুন্দরবন আমরা সুন্দর মন নিয়ে রক্ষা করব। অসুন্দর আর অমঙ্গলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ।।
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×