somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি বিদ্রোহী শিক্ষা সফর

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমরা পরীক্ষার্থী ও একটি দাবীঃ
জানুয়ারী, ২০০৩ সাল। থাকি হলে। আর কিছুদিন পরেই দশ বছরের চূড়ান্ত পরীক্ষা, হাতে বেশী সময় নেই। ক্লাস নেই তাই ক্লাসের চিন্তা করতে হয়না। সকালে ঘুম তারপর নাস্তা, পড়ালেখা , সবাই যখন ক্লাসে ব্যস্ত তখন আমরা গোসল খাওয়া দাওয়ার স্পেশাল সুবিধা ভোগ করছি। হলের রুমে রুমে পড়ালেখা আর গল্প আড্ডায় মাতোয়ারা।
হাত পা ভাঙ্গার ভয়ে আপাতত খেলাধূলায় নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে আমাদের উপরে। যেহেতু নিষেধাজ্ঞা তাই বিকালেটা কাটে ক্যাম্পাসের মাঠে ঘাসের উপরে জাম্পেস আড্ডা, খেলা দেখে, গায়ে হাওয়া লাগানোর মাধ্যেমে। সন্ধ্যা থেকে আবার পড়ালেখা, রাতে খাবার আর আড্ডা ইত্যাদিতে চলছিলো আমাদের আপাতত হল লাইফের শেষ দিনগুলি।
পরীক্ষার্থী বলে ক্যাম্পাসে একটু আদর আত্তিও পাচ্ছিলাম ভালোই। বেশী পড়ুয়ারা পড়ছে আর ফাঁকিবাজরা ফাঁকি দিয়েই চলছে। চলছিলো ভালোই।

জানুয়ারীর মাঝামাঝি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষা সফরে যাবে। এবারের গন্তব্য কক্সবাজার। প্রতিবছরের এবারও আমাদের ক্লাস থেকে অংশগ্রহনের কথা ছিলো এবারের শিক্ষাসফরে কিন্তু ঐতিহ্যের আলোকে পরীক্ষার্থীরা বাদ পরে সফর থেকে আর এরই ধারাবাহিকতায় আমরাও বাদ পড়লাম এখান থেকে। ভালো একটি জায়গায় শিক্ষা সফর হবো অথচ আমাদের বাদ দিয়ে? মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু অতীত ঐতিহ্যের আলোকে আমরাও মেনে নিলাম। তবে একটা দাবী ছিলো আমাদের ............... পরীক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ক্লাস ক্যাপ্টেন প্লাস সফর বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য হিসেবে আল আমীনকে নিতে হবে সফরে।

বিদ্রোহী সফরের নেপথ্যেঃ
ঘনিয়ে আসলো ভ্রমনের দিন।ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ শুধু আমরা ছাড়া। ক্লাস ক্যাপ্টেন আর শিক্ষা সফর বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য হিসেবে বন্ধু আল আমীন সারাদিনই কাজ করলো,কষ্ট করলো। কিন্তু সফরের প্রস্তুতি নিয়ে যখন গাড়ীর কাছে গেলো তখন আর ভাইস প্রিন্সিপাল স্যারের অনুমতি মিললো না । সবাইকে বিদায় দিয়ে আল আমীন যাওয়ার অনুমতি পাওয়ায় তাকে নিয়ে ব্যথিত মনে ফিরে আসলাম হলে।

পুরো ক্যাম্পাস প্রায় শূণ্য।শিক্ষা সফরে গেছে বড় একটি অংশ বাদ বাকীদের অনেকেই গেছে ছুটিতে বাড়ীতে। কক্সবাজার সফর মিস....... সফরের অনুমতি না পেয়ে আল আমীনের মন খারাপ, সাথে মন খারাপ আমাদেরও। আজ রাতে আর পড়ালেখা নয়। মন ভালো করা আর আজ রাতের আড্ডার ভেন্যু আল আমীনের রুমেই। আড্ডার কোন আগামাথা নেই........ চলছে তো চলছেই ........হঠাৎ কথায় কথায় সদা উৎসাহী বাবু তুললো ............. আচ্ছা চল..... হয়ে যাক একটা ছোটখাট একটা ট্যুর ?
প্রথমে সবার না না.......... স্যাররা টের পেলে ভালো করে সাইজ দিবে।
কিন্তু বাবুর চাপাচাপি চলছেই.......... না স্যারদের কাঁচকলা দেখানোর উপায় আছে।
কি উপায়........ ? যাত্রা শুরু সকালে ক্যাম্পাসে যখন ক্লাস শুরু হবে তখন ফিরবো সন্ধ্যার মাঝে , কেউ টের পাবে না।
হুম । আইডিয়া খারাপ না কিন্তু কোথায়?
বেশী দূরে যাওয়া যাবে না। সোনারগাঁ।
হিপ হিপ হুররে................... সিদ্ধান্ত পাক্কা। উপস্থিত ১৩ জন। কেউ কেউ দোদুল্যমান মনে থাকলেও বাকীদের উৎসাহে আমার মতো না করতে পারলো না। হলের বাকী পরীক্ষার্থীদের রাজী করানোর চেষ্টা চললো। সকালেই রওয়ানা হওয়ার সিদ্ধান্ত। আর বাহিরের অনাবাসিক আর দু একজন যারা যেতে আগ্রহী তাদের নেয়া হবে।
সিদ্ধান্ত হলো সব হবে চুপেচাপে গোপনে। যেই ভাবা সেই কাজ।

অভিযান শুরু, গন্তব্য সোনারগাঁওঃ
সকলের মাঝে সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। কতজন যাবে তা নিয়ে অনেকটা সিদ্ধান্তহীনতায় আমরা। কিন্তু দেখতে দেখতে হলের ২৪ জনের ২৩ জনই রেডি বাকী শুধু নাঈম, বাবা আসবে বলে সে আর গেলো না। আর হলের বাহিরে থেকে যোগ হলো শুধু একজন, ক্লাস ক্যাপ্টেন আতিক। দুই ক্লাস ক্যাপ্টেন আর ভাল ছাত্ররা সব সাথে যাওয়ায় আমার মতো বাকীদের সাহসের পারদ বেড়ে গেলো। একে একে তালাবদ্ধ হয়ে গেলো হলের দরজাগুলি। ধীরে ধীরে চুপে চুপে বেড়িয়ে আসলে সবাই।

ক্যাম্পাসের বাহিরে গিয়ে একত্রিত হয়ে দেখা গেলে অভিযানে সদস্য সংখ্যা ২৪। আর পায় কে আমাদের........... ....... হাফ ভাড়া দিয়ে সোজা গুলিস্তান। মদনপুর দূর কম না, তখনকার সময় ভাড়াও একেবারে কম না। কিন্তু ছাত্র, হাফ, শিক্ষাসফর ইত্যাদি লামছাম বুঝিয়ে ড্রাইভার কন্টাকটারকে ম্যানেজ করা হলো হাফ ভাড়ায় নিতে। ১৫ টাকায় একেবারে মদনপুর । পুরো রাস্তা ২৪ জনের বাহিনীর জাম্পেস আড্ডা, হৈ হুল্লর, চিল্লাপাল্লা। লোকাল বাসকে "সময় নিয়ন্ত্রক" বানাতে যা করা লাগে সবই করা হলো। আর যায় কোথায়, মাত্র ১ ঘন্টায় গন্তব্যে। যাত্রাবাড়ী পার হয়ে দেখা মিললো বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের জাতীয় দলের ............ তারা যাচ্ছে পরদিনের খেলার প্রস্তুতির জন্য ফুতুল্লায়।

পকেটে তো পয়সা কম, কিভাবে কম খরচ করে যাওয়া যায় .......। মদনপুর নেমে আর রিক্সার চিন্তা বাদ দিয়ে আদম গাড়ীতে যাত্রা শুরু। হাটতে হাটতেই সোনারগাঁও ............, চলতে চলতেই আনন্দ ফুর্তি । তখন চলছিলো সেখানে কোন এক স্থানীয় নির্বাচন । অভিযানের এক সদস্য সালাউদ্দিনকে প্রার্থী বানিয়ে নির্বাচনী মিছিল শুরু হয়ে গেলো, আশে পাশে এলাকার লোকজন তো তাজ্জব............. এটা আবার কি মার্কা, এ প্রার্থীর আগমন আবার কোথা থেকে?????? মুখ বাড়িয়ে কেউ কেউ জিজ্ঞাসাও করার চেষ্টা করছিলো। উত্তর দিতেই.... একগাল হাসি দিয়ে আবার ধরলো গন্তব্যের পথ ।

ঈশা খাঁর সোনারগাঁয়ঃ


পৌঁছলাম সোনারগাঁয় নির্মিত পার্কের সামনে। আগে বেশ কয়েকবার যাওয়ায় সেখানে সিকিউরিটি অফিসারের সাথে মোটামুটি ভালই খাতির হয়ে গিয়েছিলো। এখানেও নেয়া হলো চান্স। আবার হাফ টিকেট। ২৪ জনে ১৫ টা টিকেট কিনেই মিললো প্রবেশের অনুমতি।
পুকুর ঘাটে ঐতিহাসিক ঘোরসাওয়ারের স্থাপত্ব, পুরাতন যাদুঘর, জয়নুল আবেদীন যাদুঘর, ফুলের বিস্তর মেলা দেখে মোটামুটি সময় পার। ঘোরাঘুরি শেষে এবার কিছু আনন্দ করা যাক। এক জায়গায় বসে গানের সুর ধরলো আমাদের আভ্যন্তরীন ভাবে অখ্যাত বিখ্যাত শিল্পীরা। আর মোবারক, শাকিল, জোবায়ের, মাসুমের অভিনয় চলছিলো ক্ষনে ক্ষনে। নেই কোন নির্দেশনা, নেই কোন স্ক্রিপ্ট কিন্তু প্রতি মূহুর্তের অভিনয়ে হাসির খোড়াক পাচ্ছিল আমাদের পাশাপাশি আশেপাশের ভ্রমন পিয়াসুরাও ।
মাঝে মাঝেই চলছিলো কার যেন একমাত্র ক্যামেরায় শাটার টানা আর আলোর বিচ্ছুরণে লাইট, ক্যামেরা, পোজ, এ্যাকশন।


যারা গিয়েছেন তারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, ভিতর দিকের বিশাল মাঠে খেলার উপায় আছে কিন্তু খেলবো কি দিয়ে? ক্রিকেট পাগলদের কি আর বসিয়ে রাখা যাবে..........? স্থানীয় কয়েকটি পিচ্চিকে ম্যানেজ করে শুরু হলো খেলা। কেউ খেলাধূলায় মত্ত, কেউ আবার ঘোড়ায় চড়ে টাকা না দিয়ে বাগবিতান্ড করে, কেউ নৌকায় ওঠার ইচ্ছা করে কিন্তু পয়সা না দেয়ার ধান্ধায় আর ওঠা হয় না, কেউবা আবার বন্দুক দিয়ে বেলুন ফাটানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। একেবারে ভিতরের নিরব এলাকায় বউ, গার্লফেন্ডদের নিয়ে অন্তরঙ্গ আড্ডা দেয়ায় ব্যাঘাত ঘটানোও বাদ দেয়নি।

পানাম সিটি ও সিঙ্গারা লাঞ্চঃ


পার্কের অভিযান মোটামুটি শেষ। সিকিউরিটি অফিসারের পরিচয়ের সুবিধায় পেছনের গেট দিয়ে বেড়িয়ে গেলাম পানাম নগর আর ঈশা খাঁর বাড়ী দেখতে। ভাঙ্গাচূড়া ক্ষয়িঞু বাড়ীগুলো দেখে ফিলে যাচ্ছিলাম কয়েকশত বছর পূর্বে । পথে পথে দুষ্টামী ফাজলামোর শেষ নেই যেন। সাধারনত প্রবেশ নিষেধ ঈশা খাঁর বাড়ীতে, আবারে ম্যানেজ করতে হলো বসবাসরত পরিবারকে।
আনন্দফুর্তির মাঝে ছবি তুলা আর মৌসুমী ফলের বিনামূল্যে স্বাদ নিয়ে বাজারে এসে মধ্য প্রাচ্যের প্রচন্ড বিদ্রোহ দমনে খেলাম ২ টাকার ৪ টা সিঙ্গারা আর ফ্রি পানি। এখানেও পকেটের নিয়ন্ত্রন রক্ষায় কৃচ্ছতা সাধন। কয়েকজন আবার বিদ্রোহ দমন করতে না পেরে সর্বনিন্ম মূল্যে ভাতের জোগানে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছিলো। ফ্রি পানি, সিঙ্গারার পাশাপাশি অভিযানকারী দলের কেউ কেউ আড়ালে আবডালে হাতের নাগালের মৌসুমী ফল কেউ দেখে ফেলার আগেই মধ্যপ্রাচ্যে চালান করে দিচ্ছিল।





প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ফিরতি যাত্রাঃ


নির্মল হাওয়া, পশুপাখির কলকাকলীর নির্মল পরিবেশে আনন্দফুর্তির মাঝে দুপুর গড়িয়ে হয়ে গেলো বিকেল। হাফ টিকেটে সারাদিন কাটিয়ে হলে ফিরে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য মাঠেই জরুরী অধিবেশন বসলো বিদ্রোহীদল। সারাদিনের আনন্দফুর্তিতে সব ভুলে গিয়েছিলাম কিন্তু জরুরী অধিবেশনে বসেই মাথায় টেনশন চেপে বসলো কি পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে হলে গিয়ে............. । যা হবার হবে, সিদ্ধান্ত হলো সব কিছু গোপন রাখতে হবে। কোন ভাবে প্রকাশ পেলে, অনমুতি ছাড়া হল ত্যাগ ও ভ্রমনের অপরাধে শাস্তি আসলে সকলকে এক সাথে মাথা পেতে নিতে হবে।
সিদ্ধান্ত আর মাথায় টেনশন নিয়ে আবারো পায়ে হেটে ভিন্ন পথে মূল সড়কে। সন্ধ্যায় হলে থাকার কথা থাকলেও বিকাল হয়ে গেলো অথচ আমরা তখনো বহুদূর। চলছে পথচলা চলছে হৈ হুল্লর।
বাসে চড়ে আবার গুলিস্থান সেখান থেকে ক্যাম্পাস। খরচের ক্ষেত্রে বরাবরের মতো কৃচ্ছতা।


তালাবদ্ধ রুমঃ
ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় ১০ টা। ছাত্ররা তখন পড়ার টেবিলে থাকায় হলগুলোতে পড়ালেখার শান্ত পরিবেশ আর অন্যদিকে অনেকেই শিক্ষাসফরে যাওয়াও পরিবেশ আরো শান্ত । শিক্ষকদের চোখের সামনে দিয়ে ঢুকা নিরাপদ নয় তাই কেউ প্রবেশ করলো দেয়াল টপকিয়ে কেউ পুকুর পাড় দিয়ে ধীরে ধীরে আর সাহসীরা ঢুকলো গেট দিয়ে। গেট দিয়ে প্রবেশের সময়ই হলের থমথমে ভাবটা টের পাওয়া গেলো দাড়োয়ান নিজাম ভাইর কাছে। সবাই উৎকন্ঠায় কোথায় গেলো পরীক্ষার্থীরা সব একসাথে???


চুপচাপ হলে গিয়ে তো তাজ্জব বনে গেলাম। সব রুমে ডাবল তালা। নিজেদের তালার উপরে আরেকটা করে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন স্যারেরা। শুধু নাঈম যেহেতু যায়নি তাই তার রুম ছাড়া সবগুলো রুম বন্ধ। রুমে ঢোকার কোন উপায় নেই। সবাই বারান্দায় ঘুরাঘুরি আর টেনশন...।
অভিযানকারীদের উপস্থিতি টের পেয়েই আসলেন ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার আর হল সুপার। তুমুল বকা...................... লাগবে না এ সব ছাত্র। এবার পরীক্ষা নীল যাবে। এখনি ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাও ইত্যাদি। হাতে বেত থাকলেও বেতের বারি খেতে হয়নি প্রসন্ন কপালের কারণে।

কিছু বলার নাই। ভেড়ার পালের মতো গেট গেট পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন বলা চলে........... সিট বেডিং ছাড়া হল ছেড়ে বের হয়ে যেতে বললেন রাতেই। আরো যে কি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো তা ভাবতেই কষ্ট হয়। পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে ছিলাম অনেকক্ষন। সিনিয়রা অধিকাংশই শিক্ষাসফরে ফলে তাদের সহায়তাও পাওয়া গেলো না। নির্দেশ জারী করে ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার কোয়ার্টারে চলে গেলেন হল সুপারকে দায়িত্ব দিয়ে।

পা ধরে মাফ চেয়ে রক্ষাঃ
নূরুল হুদা স্যারের সহায়তায় এবার হল সুপারের অফিস কক্ষে জড়ো হলো সবাই। সেখানেও চললো ঘন্টা খানেক বকাঝকা। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১২ টা ছুঁই ছুঁই। সেই দুপুরের সিঙ্গারা ছাড়া দানাপিনা তেমন কিছু পড়েনি বলে শরীর আর চলছিলো না। হঠাৎ বাবু বসে পড়লো হল সুপারের পায়ের কাছে............ স্যার এবারের জন্য মাফ করে দেন। আর হবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।
ইশ রে........... বাবু করলো টা কি? শেষ পর্যন্ত পা ধরে মাফ চাইতে হবে ............বাবুর দেখাদেখি আর কোন উপায় থাকলো না হল সুপারের পা ধরাধরির বদলে একজন আরেকজনের পিঠের উপরে হাত রেখে পা ধরে মাফ চাওয়ার অভিনয় করলো । পা ধরলো শুধু বাবু, আল আমীন আর শরীফ। বাকীরা সব পিঠ ধরাধরি। কাজও হয়েছিলো এতে। রুমে ফিরে আবার সেগুলো নিয়ে হাসাহাসি। পা আর ছাড়াছাড়ি নাই, উপায়ন্ত না দেখে হল সুপার পরবর্তী দিনের জন্য অপরাধ মুলতবী করে খাবার খেয়ে রুমে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে তালা খোলার নির্দেশ জারী করলেন।

তেমন টেনশন ছিলো না কারণ ক্লাসের ফাস্ট, সেকেন্ড, থার্ডসহ ভালো ভালো সকল ছাত্ররা সবাই অংশগ্রহন করেছিলো বিদ্রোহী শিক্ষাসফরে তাই স্যাররা যতই হুমকি দিক না কেন তাদের তো মাফ করতেই হবে।
পরবর্তী দিন আবারও ভাইস প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে মুচলেকা ও ক্ষমা প্রার্থনা সূচক দরখাস্ত প্রদান আর সিনিয়রদের সহায়তায় বিদ্রোহী শিক্ষাসফরের বিদ্রোহের স্বাদ মিটলো।
ক্যাম্পাসেও প্রচার লাভ করেছিলো বিদ্রোহী শিক্ষাসফর হিসেবে।

বন্ধুরা ভালো থেকোঃ
ঘুরতে ঘুরতে পুরো বাংলাদেশটাই প্রায় ঘুরে ফেললাম। এ জীবনে যত শিক্ষা সফর বা ভ্রমনে অংশগ্রহনের সুযোগ হয়েছে সবগুলোর থেকে একটু ভিন্নস্বাদের শিক্ষাসফরটি আজীবন মনে থাকবে এবং............. মনে করিয়ে দিবে সে সকল বন্ধুদেরকে................... মাঝে মাঝে মনে করি হারিয়ে যাই আনন্দঘন সেই দিনগুলিতে।
বন্ধুরা আজ অধিকাংশই প্রতিষ্ঠিত, দেখ হয় খুবই কম। মিস করি সকলকে। মাঝে মাঝে কারো বিবাহ বা কারো প্রতিষ্ঠানে অথবা অন্য কোথাও একত্রিত হলে ফিরে যাই ছোট বেলার সেই মধুর দিনগুলিতে।


আবারো বলে যাই............... বন্ধুত্ব আজীবনের।

ভাল থেকো বন্ধুরা।

ছবিঃ গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১০
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×