somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামিস্টরাও আপনার মতো মানুষ!!!

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল্লাহর রহমতে আমাদের দেশের নারী সমাজের মনে একটা ধারণা আছে, ধারণাটা অনেক ক্ষেত্রে পুরুষেরদেরও আছে, আর তা হলো যারা দাড়িওয়ালা ঈমানদার, তাদেরকে অবশ্যই সাধু-সন্তু হতে হবে। এই কথার সাথে একটু দ্বিমত আছে। প্রত্যেক মুসলিমেরই লক্ষ্য হওয়া উচিত তাকওয়ার জীবন গঠন করা। তাকওয়া হচ্ছে এমন একটা গুণ যেটার একটা ফল হচ্ছে খোদাভীতি, আরেকটা ফল হচ্ছে খোদার আনুগত্যের মনোভাব, আরেকটা ফল হচ্ছে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার মানসিকতা। আপনি যদি খারাপ কাজ বাদ দেন তাহলে আপনি অবশ্যই একটি ভালো কাজ করলেন। এবং এটা আপনার তাকওয়ার ফলেই সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে অনেকের কাছেই স্পষ্ট না যে তাকওয়া কত উচ্চ মানের গুণ। আমরা কথায় কথায় তাকওয়ার কথা বলে ফেনা উঠায়। ঈমান আনলেই কিন্তু মুত্তাকী হওয়া যায় না রে বৎস!!!
ইসলামে নৈতিকতার চারটি স্তর। যেটা ঈমান দিয়ে শুরু হয়। আপনি যদি প্রাথমিকভাবে আল্লাহ, তাঁর রাসুল স. , ফেরেশতা, আখিরাত, কবর, হাশর, মৃত্যুর পুরুত্থান মেনে নেন এবং আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করেন তাহলে আপনি ঈমানদার হিসেবে নিজেকে মনে করতে পারেন।
নৈতিকতার দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে ইসলাম আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে ইসলামে যে আমলগুলো করতে বলা হয়েছে সেগুলো। আপনি ঈমান আনার সাথে সাথে আপনার উপর ইসলামের বিধি নিষেধ গুলো মানা ফরজ হয়ে যায়। যদি আপনি এই আমলগুলো করেন তাহলে আপনি নৈতিকতার দ্বিতীয় স্তরে পৌছাবেন। ঈমান যদি কোন গাছের শেকড় হয় তাহলে ইসলাম হচ্ছে পত্র-পল্লবে শোভিত সেই শেকড়ের উপর গজে উঠা গাছটি।
আপনার মধ্যে যখন এই দুটি অবস্থা ঠিকমতো কার্যকর থাকবে তখন আপনার মধ্যে তাকওয়ার বীজ বপিত হবে। তাকওয়া হচ্ছে মনের সে অবস্থা যা আপনাকে পাপ থেকে বিরত থাকতে, আল্লাহকে ভালবাসতে, আল্লাহকে ভয় করতে, আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতার চেতনা জাগরিত করতে এবং কখনোই আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে না পড়তে সাহায্য করবে। তাকওয়া শব্দটি আরবি ‘ওয়াকা’ নামক ধাতুমুল থেকে এসেছে,যার অর্থ রক্ষা করা , প্রতিহত করা, বাধা দেওয়া। আমরা বলতে পারি যে, তাকওয়া হচ্ছে আল্লাহ যা করতে আদেশ করেছেন তা পালন এব যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন করে নিজেকে আল্লাহর কোপানল থেকে রক্ষা করা। এই অবস্থায় যখন আপনি উপনীত হন তখন আপনার দ্বারা অটোমেটিক সাধু হওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়।
এরপর আসে ইহসান। আপনার তাকওয়ার স্তর এমন এক পর্যায়ে পৌছে যখন ইবাদাতে মগ্ন হন অথবা কোন কাজ করেন তখন আপনি আল্লাহকে দেখছেন এটা আপনার মনে হবে। অথবা যদি তাকে এই পর্যায়ে না পৌছেন তাহলে আপনার মনে হবে আল্লাহ আপনাকে দেখছেন।
তাহলে এই লম্বা ব্যাখ্যার দরকারটা কি ছিলো? ব্যাপারটাই জটিল। যখনই একজন মানুষ ইসলামের পথে এগিয়ে আসেন তখন তিনি তার অতীতের ভুলগুলো না করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েই আসেন। তিনি আগেও কোন সাধু ছিলেন না, অথবা তার চরিত্র কোন পীরের মতো ছিলো না, তিনি ইসলামের পথে আসেন যাতে তার দ্বারা ইসলামী নৈতিকতার সর্বোচ্চ স্তরে আরোহণ করা সম্ভব হয়। এটা একটা সময়সাপেক্ষ এবং কষ্ট সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।এখন এই পথে চলার সময়ে তার দ্বারা যদি , শয়তানের ধোকায় হোক , অথবা নফসের তাড়নায় হোক , কোন ভুল হয়েও যায়, তাহলে কি আমরা তাকে ফেলে দিবো? তাকে ফেলেই দিলাম, তাহলে কোন দিকে ফেলবো? আমরা কি তাকে ঠিক সেই আগের জায়গাটাতে রেখে দিচ্ছিনা যেখান থেকে সে উঠে এসেছে?
তার করা ছোট একটা ভুলের জন্য হয়তো আমরা তাকে এমন একটা শাস্তি দিয়ে দিলাম যাতে সে তার আগের ক্লেদাক্ত জীবনে ফেরত গিয়েছে। ভাই সংশোধনের রাস্তাটা বন্ধ করবেন না, প্লিজ।
মনে রাখবেন, Every saint has a past, and every sinner has a future.
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×